1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমবঙ্গের মামলা থেকে সরলেন দুই বাঙালি বিচারপতি

২৩ জুন ২০২১

প্রথমে ভোট পরবর্তী হিংসা এবং তারপর নারদ মামলা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই বাঙালি বিচারপতি।

https://p.dw.com/p/3vPCO
পশ্চিমবঙ্গের দুইটি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই বিচারপতি। ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Qadri

প্রথমে পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী সহিংসতার মামলা থেকে সরে গিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বাঙালি বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টে বিশ্বজিৎ সরকার নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তৃণমূল সমর্থকদের হাতে তার ভাই অভিজিৎ সরকার নিহত হয়েছেন। বুথকর্মী হরণ অধিকারীকে মারা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে মামলা করা হয়। সেই মামলা গিয়েছিল বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপধ্যায় ও বিচারপতি এম আর শাহের ডিভিশন বেঞ্চে।

কিন্তু বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপধ্যায় এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ''এই মামলায় আমার কিছু অসুবিধা আছে।''

এরপর গত ২২ জুন নারদ মামলা থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এই মামলা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। সেই মামলা গিয়েছিল অবসরকালীন বেঞ্চে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা ও অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চে। কিন্তু বিচারপতি বসু এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। বিচারপতি বসু আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিও ছিলেন।

কাকতালীয় হলেও দুইটি মামলাই পশ্চিমবঙ্গের, দুইটি মামলাই অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং দুইটি ক্ষেত্রেই বাঙালি বিচারপতিরা নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। পরে নারদ মামলাটি বিচারপতি বিনীত সরন ও বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরীর বেঞ্চে দেয়া হয়েছে।

এরপরই নেটমাধ্যমে সোচ্চার হন নেটিজেনরা। বিভিন্ন টুইট তুলে ধরে টাইমস অফ ইন্ডিয়া একটি রিপোর্ট করেছে। সেই সব টুইটে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কেন দুই বাঙালি বিচারপতি নিজেদের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত মামলা থেকে সরিয়ে নিলেন? কেউ বলছেন, বিচারপতিরা পশ্চিমবঙ্গের মামলাই নিতে চাইছেন না। কেউ তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন।  

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, রাজ্যসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ ও দলের মুখপাত্র সুখেন্দু শেখর রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এর মধ্যে অস্বাভাবিকতা কিছুই নেই। এটা বহুদিনের প্রথা। যারা প্রশ্ন তুলছেন, তারা না জেনে করছেন। বিচারপতিরা মামলা থেকে অব্যাহতি নিতেই পারেন। অতীতে বহুবার নিয়েছেন। তিনি কোনো কারণ দেখতেও বাধ্য নন।'' তিনি জানিয়েছেন, ''১৯২১ সালে ব্রিটিশ কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, বিচার হচ্ছে বললে হবে না, বিচার হচ্ছে, এটাও যেন বোঝা যায়, দেখা যায়। এটাই এখন গাইডিং প্রিন্সিপাল।''

প্রবীণ সাংবাদিক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরী অবশ্য মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গ সংক্রান্ত দুইটি মামলাই খুব সংবেদনশীল। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''নারদ মামলায় রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করাকে কেন্দ্র করে যা ঘটেছিল, তা অভিপ্রেত ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই অফিসে চলে গিয়েছিলেোন। শোনা যাচ্ছে, তিনি হলফনামায় বলেছেন, ধরনা দিতে নয়, তিনি মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। বাইরে যে ভাবে মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন, পাথর ছুঁড়েছিলেন, সেই সব ঘটনা অশনি সঙ্কেত।'' 

রাজ্য বিজেপি-র সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''ভারতীয় বিচারব্যবস্থার উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তবে বিচারপতিদের কোনো মামলা থেকে সরে দাঁড়াানোটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এনিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।''

দীপ্তেন্দ্র বলেন, ''এরপর নারদ ও ভোট পরবর্তী সহিংসতা সংক্রান্ত মামলা থেকে দুই বিচারপতির সরে দাঁড়ানো অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। তাঁরা যেহেতু বলেননি, কেন সরে দাঁড়াচ্ছেন, তাই ওই অশান্তির সঙ্গে বিষয়টি যুক্ত করা সম্ভব নয়।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই)