পশ্চিমবঙ্গে ভোট ১৪ তারিখেই
১০ মে ২০১৮কর্ণাটকের বিধানসভা ভোটের ইস্তেহারে কংগ্রেস সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে একাধিক প্রস্তাব, প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্যত ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি করছে৷ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিল এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন৷ বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানাল, একবার নির্বাচনি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে দেশের কোনো আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করে না৷ অতীতে এই ধরনের একাধিক মামলায় একই রায় আছে সুপ্রিম কোর্টের৷ কাজেই একই দিনে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে শুনানিতেও অন্য কোনো অবস্থান নেওয়ার প্রশ্ন ছিল না সর্বোচ্চ আদালতের৷ অর্থাৎ ১৪ মে তারিখেই এক দফায় ভোট হবে পশ্চিমবঙ্গের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে৷ এবং যেহেতু এই আইনি দৃষ্টান্ত থাকার সুবাদে ঘোষিত তারিখে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা আগেই নিশ্চিত ছিল, রাজ্য সরকারও সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আগেই ভোট করার প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল৷ নির্দেশ পাঠানো শুরু হয়েছিল জেলায় জেলায় এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও তৈরি থাকতে বলেছিল সরকার৷
তবে এ দিন একই সঙ্গে অন্য দু'টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ তার প্রথমটি অবশ্যই বিরোধীদের হতাশ করবে৷ ই-মেল এবং হোয়াটসঅ্যাপে দাখিল হওয়া মনোনয়ন আইনত গৃহিত বলে এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে৷ অর্থাৎ এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে অন্তত এভাবে মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো সুযোগ আর থাকল না৷
মূলত বামপন্থি প্রার্থীরা মনোনয়নের সময় শুরু হওয়া হাঙ্গামা এড়াতে এই কায়দায় মনোনয়নের আর্জি পেশ করেছিলেন৷ কিন্তু সেগুলো গ্রহণ না করার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ এর সঙ্গে যে দ্বিতীয় নির্দেশটি দিয়েছে, তা ঘোর অস্বস্তিতে ফেলবে রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে, যে দলের নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজেও ১০০ শতাংশ আসনে জেতার কথা ভেবেছিলেন৷ সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানিয়েছে, যে ১৮,০০০ আসনে শাসক দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন, তাঁদের যেন এখনই বিজয়ীর সার্টিফিকেট না দেয় নির্বাচন কমিশন৷ তার মানে এই ১৮ হাজার আসনের ফল আদালতের নজরে থাকবে৷ কারণ সুপ্রিম কোর্টের পরের মন্তব্যটি আরও প্রণিধানযোগ্য, যে, কোনো নির্বাচনে ৩৪ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাওয়াটা গণতন্ত্রের পক্ষে ভালো নয়৷
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারএবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বলেছে, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার, যে নিয়ে বিচারবিভাগের শুরু থেকেই উদ্বেগ৷ বিশেষত একদিনের মধ্যে পুরো ভোট করে ফেলার বিজ্ঞপ্তিতে বিরোধীরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন, শাসকদলের থেকে তাঁরা ব্যাপক সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছেন৷ রাজ্য সরকার এই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেবে বলেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিরোধিতা করে আসছে এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মীর হিসেব মেলাতে গিয়ে, সড়কপথে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে যে স্বেচ্ছাসেবী নাগরিক পুলিশ বহাল থাকে, সেই সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে দেখাচ্ছে৷ অথচ তাদের কার্যত কোনো ক্ষমতাই নেই!