পশ্চিমবঙ্গে বিষমদে মানুষ মরছে, কেন ব্যবস্থা নেয় না পুলিশ?
কলকাতার পাশের শহর হাওড়ায় বিষমদ খেয়ে নয় জন মারা গেছেন। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন আরো জনা দশেক মানুষ। প্রশ্ন উঠেছে, কী করে এই বেআইনি দেশি মদের ঠেকগুলো রমরমিয়ে চলে? পুলিশ কেন নিয়মিত ব্যবস্থা নেয় না?
মালিপাঁচঘড়ার ঠেক
হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ায় প্রতাপ কর্মকারের ঠেকেই বিষমদ খেয়ে এতজন মানুষ মারা গেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরই প্রতাপ পালিয়েছে।
ঠেকে ভাঙচুর
ঘটনার পরেই স্থানীয় মানুষজন ঠেকে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। এই ঠেকটি মালিপাঁচঘড়ার গজানন বস্তির ভিতরে।
থানার পাশেই
প্রতাপ কর্মকারের ঠেকটি মালিপাঁচঘড়া থানার পিছনে একশ মিটার দূরত্বে। স্থানীয় মানুষের প্রশ্ন, থানার এত কাছে কী করে এইরকম বেআইনি চোলাই মদের ঠেক চলতে পারে? পুলিশ কেন ব্যবস্থা নেয় না? এর পিছনে কাদের মদত আছে?
আরো ঠেক
এই এলাকায় প্রতাপ কর্মকারের ঠেক একমাত্র চোলাই মদের ঠেক নয়। আরো অনেক ঠেক আছে। রেললাইনের পাশেও আছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখন তদন্ত করে দেখছে।
পুতিগন্ধময় পরিবেশ
প্রতাপ কর্মকারের ঠেকের ভিতরের ছবি দেখলেই বোঝা যায়, এখানে কী পরিবেশে বসে চোলাই মদ খাওয়া হতো। গজানন বস্তি ও আশেপাশে খুবই গরিব শ্রমিকদের বাস। তারা ছোট ছোট কারখানায় কাজ করেন। তারাই ছিলেন প্রতাপের ঠেকের প্রধান খরিদ্দার।
নীতীশ সিংয়ের মৃত্যু
বিষমদ খেয়ে মারা গেছেন নীতীশ সিং। ছয় বছর আগে তার বিয়ে হয়েছিল। দুইটি ছোট বাচ্চা। ৩৭ বছর বয়সি নীতীশ মার্বেল কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
স্বপন দাসের কাহিনি
নিয়মিত মদ খেতেন স্বপন দাস। পেটে যন্ত্রণা হতো। তাও খেতেন। নেশার জন্য বাড়ি-ঘর পর্যন্ত বেচে দিয়েছেন। বিষমদ খাওয়ার পর পেটে যন্ত্রণা শুরু হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।
লক্ষণ সাউ আইসিইউ-তে
সকালে উঠেই ঠেকে চলে গিয়েছিলেন ৫৩ বছর বয়সি লক্ষণ সাউ। বিষমদ খেয়ে অসুস্থ হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখন আইসিইউ-তে।
ঘটনাস্থলে রাজ্য বিজেপি সভাপতি
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ঘটনাস্থলে গেছিলেন। রাজ্য সম্পাদক উমেশ রায়ও গেছেন। তাদের দাবি, এই ঘটনা নিয়ে সিবিআই তদন্ত করতে হবে।
নতুন নয়
বিষমদ খেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত এই ঘটনা ঘটে। এমনকি একটি ঘটনায় বিষমদে মৃতদের পরিবারকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থসাহায্য দিয়েছিলেন। তা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। তখনও প্রশ্ন উঠেছিল, বেআইনি ঠেকের বিরুদ্ধে কেন পুলিশ নিয়মিত ব্যবস্থা নেয় না?