ভারসাম্যের পথে মন্টেনেগ্রো
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩মন্টেনেগ্রো – অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের তীরে অবস্থিত ছোট্ট, সুন্দর একটি দেশ৷ একসময় ধনী ও বিখ্যাত লোকেরা সেখানে যেতেন৷ দেশটি আবার তাদের আকর্ষণ করতে চায়৷ গত কয়েক বছরে উপকূলীয় এলাকায় বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল হোটেল তৈরি হয়েছে৷ ফলে বেড়েছে পানির চাহিদা৷ প্রতিটি নতুন হোটেলের সঙ্গে তা বাড়ছে৷ একটি আধুনিক পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজে দেশটি অনেক অর্থ বিনিয়োগ করছে৷ কিন্তু নর্দমার পানি পরিশোধনেরও প্রয়োজন রয়েছে৷
তাই একটি হোটেলের কয়েক মিটার পেছনে একটা পাম্পিং স্টেশন গড়ে তোলা হচ্ছে৷ সেখানে ব্যবহৃত ও দূষিত পানি সাগরে ফেলার আগে পরিশোধন করা হবে৷ জার্মান প্রকৌশলী ইওয়াখিম সিটলভ এই পানিশোধন প্রকল্পটির দেখভাল করছেন৷ লক্ষ্য, আগামী গ্রীষ্মের মধ্যেই যেন আর কোনো দূষিত পানি সাগরে পড়তে না পারে৷ প্রায় দেড়শো মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করা হচ্ছে এর পেছনে৷ সে হিসেবে গত ৩০ বছরের মধ্যে এটাই মন্টেনেগ্রোর সবচেয়ে বড় প্রকল্প৷ এই অর্থের একটা বড় অংশ দিচ্ছে জার্মান উন্নয়ন ব্যাংক৷
নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার জন্য চাপ রয়েছে৷ পর্যটকরা ফেরার আগেই এই পাইপগুলো সাগরের এক হাজার মিটার গভীরে বসাতে হবে৷ জার্মান প্রকৌশলী ইওয়াখিম সিটলভ বলেন, ‘‘এটাকে বলে ‘সি-আউটফল'৷ এই পাইপের মধ্য দিয়ে শোধনাগার থেকে পরিশোধিত পানি সাগরের ৩৫ মিটার গভীরে আবার ছেড়ে দেয়া হয়৷''
পরিবেশবান্ধব এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি সেখানকার প্রায় ৭০ শতাংশ বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করে৷ এবং এটা আরও বাড়ানো যেতে পারে৷ জার্মান উন্নয়ন ব্যাংক, মন্টেনেগ্রো শাখার সেলয়িকো উলইয়ারেভিচ বলেন, ‘‘এই বিদ্যুত কেন্দ্রটি ৩৭ বছরের পুরনো৷ রক্ষণাবেক্ষণ খুব ভালো হলেও এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, কিছু কলকবজা কাজ করতে পারে না৷ সংস্কারের মাধ্যমে এর মেয়াদকাল আরো ৩০ বছর বাড়ানো গেলে ভাল হবে৷ এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নিরাপত্তার দিকটি রয়েছে প্রথম স্থানে, তারপর মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি৷ সবচেয়ে জরুরি হলো পরিবেশ সংরক্ষণ, অর্থাৎ দূষণ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন৷''
গ্রিন বিদ্যুৎ – যেটা কয়লা বা তেল পোড়ানোর কারণে উৎপন্ন হওয়া ক্ষতিকর কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশে যাওয়া প্রতিহত করে৷ সংস্কারের পর এই বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে আরও পরিবেশবান্ধব বিদ্যুত পাওয়া যাবে৷
সেজন্য তিনটি টারবাইনের প্রথমটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে৷ কাজটা সহজ নয়, কেননা টারবাইনগুলির উপর পানির অনেক চাপ রয়েছে৷ তবে প্রয়োজনীয় অংশগুলো খুব তাড়াতাড়ি সংস্কার করতে হবে, যেন সেগুলি পরবর্তী দশকগুলোতেও নির্ভরযোগ্যভাবে বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারে৷ এজন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সবাই কেমন যেন একটু নার্ভাস৷ সব ঠিকঠাক মতো হবে তো?
প্রথম টারবাইনের পর বাকি দুই টারবাইনেও পরিবর্তন আনা হবে৷ পাল্টানো হবে সুইচগিয়ার, যেন সংস্কার করা কেন্দ্রটি কোনো সমস্যা ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে পারে৷