পরীমনির জামিনের আবেদন নাকচ
১৩ আগস্ট ২০২১পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল শুক্রবার দুপুরে এ আদেশ দেন৷ পরীমনির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু, প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ এবং তার ব্যবস্থাপক সবুজ আলীর ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বিচারক৷ কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নারী বন্দিদের রাখার ব্যবস্থা না থাকায় পরীমনিকে কাশিমপুরের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে৷
তবে পর্নগ্রাফি আইনের অন্য একটি মামলায় রাজ ও সবুজের চার দিনের রিমান্ড আদেশ থাকায় তাদের সিআইডি হেফাজতে পাঠানো হচ্ছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু জানিয়েছেন৷
মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ- কমিশনার মো. জাফর হোসেন জানান, মাদক আইনের দুই মামলায় চার আসামিকে বেলা পৌনে ১২টার দিকে রিমান্ড শেষে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ৷
নতুন করে রিমান্ডের আবেদন না করে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন৷
অন্যদিকে পরীমনির পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা৷ রিমান্ডের নতুন আবেদন না থাকায় পরীমনিকে রাখা হয় হাজতখানায়৷ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়৷ মজিবুর রহমান, নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভীসহ কয়েকজন আইনজীবী পরীমনির পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন৷
পুলিশের পক্ষ থেকে পরীমনিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, "মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় দুই দফা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন পরীমনি৷ মামলার তদন্তের স্বার্থে তা যাচাই করা হচ্ছে৷ মামলার অভিযোগের সঙ্গে পরীমনির জড়িত থাকার ব্যাপারে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে৷ তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেলহাজতে রাখা হোক৷”
অন্যদিকে পরীমনির জামিনের পক্ষে তার আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, "আসামির সামাজিক মান-মর্যাদা রক্ষা এবং শিল্পী হিসেবে তাকে মানসিক উৎপীড়ন থেকে রক্ষার মানবিক তাগিদেই জামিনে মুক্ত করা আবশ্যক৷
"পরীমনির মুক্তির দাবিতে সমাজের মুক্ত চিন্তার প্রগতিশীলরা সোচ্চার হচ্ছে৷ দেশের বিশিষ্টজনেরা তার মুক্তি দাবি করছেন৷ বিজ্ঞ আদালত নিশ্চয় পত্র-পত্রিকা খুললে দেখবেন৷ সে যদি অপরাধী হয়, তাহলে বিচারের মধ্যে দিয়ে শাস্তি দেওয়া যাবে৷ ”
পরীমনির বাসা থেকে মদ উদ্ধারের সাক্ষী পাওয়া একটি ‘অনিশ্চিত বিষয়' হবে বলে মন্তব্য করে আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, "পাসপোর্ট রেখে জামিন দেওয়া হোক৷ বিশ্বময় অতিমারি চলছে, এর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তার ওই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়৷”
পরীমনির বাসায় র্যাবের অভিযান ‘আইনসিদ্ধ হয়নি' দাবি করে আইনজীবী বলেন, "তারা আসামিকে গ্রেপ্তার করে নিজেদের কাছে কয়েক ঘণ্টা রাখার পর তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়৷”
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু শুনানিতে বলেন, "আসামির বাসা থেকে প্রচুর দেশি-বিদেশি মাদক উদ্ধার করা হয়েছে, তার কাছে এলএসডি পাওয়া গেছে৷ র্যাব সদস্যরা বাসায় পৌঁছানোর আধা ঘণ্টা পর পরীমনি দরজা খুলেছেন৷ সেই সময়ের মধ্যে তিনি মদগুলো ঢেলে ফেলে দিয়েছেন৷
"তিনি নায়িকার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে দেশের অনেক শিল্পপতি, কোটিপতি ও সম্ভ্রান্ত ঘরের লোক ও তরুণ সমাজকে ডিজে পার্টির মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জড়ানোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ তাই মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করছি৷ ”
উভয় পক্ষের যুক্তি শোনার পর বিচারক জামিন নাকচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)