পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আলোচনা শুরু
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা নিশ্চয়ই নতুন করে আরো আলোচনার উদ্যোগ নেব৷’’
তিনি বলেন, ‘‘মিয়ানমারের সাথে আমাদের যোগাযোগ খুবই সীমিত৷ তবে তারা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে একটি চিঠি দিয়েছে৷ যেটা হয়তো সবাইকে দিয়েছে৷ তাতে তারা ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে৷ ওখানে যারা উদ্বাস্তু আছে তাদের সাথে তারা দেখা করেছে৷ তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করবে৷ আর আমাদের যেটা চিঠিতে বলেছে তা হলো রিপ্যাট্রিয়েশন প্রসেসটা চলমান৷ এপর্যন্ত এটাই গুড নিউজ৷’’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখনো মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে৷ যখন অবস্থা অনুকূলে আসবে তখন আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হবে৷
মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসও এব্যাপারে নতুন কোনো খবর জানাতে পারেনি৷ তাদের কাছেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের দিক থেকে নতুন কোনো তথ্য নাই৷
মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, ‘‘ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে কোনো আলাপ বা যোগাযোগ হতে পারে সেটা আমি জানি না৷ তবে এখন পর্যন্ত নতুন কিছু হয়নি৷ এখানে একটা চেঞ্জ হলো এক সপ্তাহ হয়নি৷ এই এক সপ্তাহে নতুন করে কিছু হয়নি৷ আগের গুলোই চলমান৷’’
নতুন সামরিক সরকারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘না যোগাযোগ হয়নি৷ এখানে একটা ট্রানজিশন পিরিয়ড চলছে৷ এখানে বিক্ষোভ আছে৷ ট্রানজিশন হতে একটু সময় লাগে৷’’
জানা গেছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে৷ সেটা দেখে মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যোগাযোগের কৌশল নির্ধারণ করা হবে৷ তবে রোহিঙ্গা ইস্যুকে বাংলাদেশ এক নাম্বারেই রাখছে৷
মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লেইং তার প্রথম ভাষণে বাংলাদেশ থেকে ‘বাস্তুচ্যুত' ব্যক্তিদের ফেরত নেয়ার কথা বলেছেন৷ ব্যাপারে যে চুক্তি আছে তাতেও কোনো প্রভাব পড়বে না৷ বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে৷
এই আলোচনাটা খুব দ্রুত শুরু করা দরকার বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক এটাশে মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক৷ তিনি বলেন, ‘‘মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বের যে দেশের যে ধরনের উদ্বেগই থাকুক না কেন, বাংলাদেশের উদ্বেগ হওয়া উচিত রোহিঙ্গা ইস্যু৷ এই ইস্যুতে নতুন করে চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন৷ বিশ্বের কয়েকটি দেশ যে সামরিক শাসন বিরোধী চাপ দিচ্ছে সেই সুযোগ বাংলাদেশকে কাজে লাগাতে হবে৷’’
যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন মিয়ানমারের জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে৷
যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মিয়ানমারের ১০০ কোটি ডলারের সরকারি তহবিলে সামরিক জান্তা যাতে হাত দিতে না পারে সেই ব্যবস্থা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র৷ জো বাইডেন এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে অনুমোদন দিয়েছেন৷
কিন্তু শহীদুল হক মনে করেন, এই নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট নয়৷ তাদের ওপর আরো বড় ধরনের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন৷ আর মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে যে কথা বলছে তাতে সহজেই বিশ্বাস স্থাপন করা ঠিক হবে না৷