পরিবেশ
৩০ ডিসেম্বর ২০১২ডসন তাঁর বাড়ির নাম দিয়েছেন ‘আর্থশিপ'৷ এই ধারণাটার জন্ম গত শতকের সত্তরের দশকে৷ এ ধরণের বাড়ি নির্মাণে স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন সব উপকরণ ব্যবহার করা হয়, যা রিসাইকেল্ড বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য৷ এছাড়া বিদ্যুতের জন্য জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না৷ সৌর বা বায়ুচালিত শক্তি, অর্থাৎ বিকল্প জ্বালানি দিয়েই বিদ্যুতের প্রয়োজন মেটানো হয়৷
ডসন তাঁর বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেন পাঁচ বছর আগে৷ তখন থেকেই তিনি রেল লাইনের পুরনো স্লিপার, স্কুলের ফেলে দেয়া বোর্ড যেটা মেঝে তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, রাস্তার খোয়া, গাড়ির পুরনো টায়ার ইত্যাদি জোগাড় করতে শুরু করেন৷
ডসন যখন এই কাজগুলো করছিলেন তখন তাঁর বন্ধু-বান্ধব আর প্রতিবেশীরা মনে করেন যে, কয়েকদিনের মধ্যে ডসনের এই ঝোঁকটা কেটে যাবে৷ কিন্তু ডসন সেরকম ব্যক্তি নন৷ ঠিকই তিনি তাঁর পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে গেছেন৷ যার ফল একেবারে নতুন এই বাড়ি৷
আগেই বলেছি, ডসন হলেন পুরাদস্তুর একজন কৃষক৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি তৈরির কোনো অভিজ্ঞতা তাঁর ছিল না৷ সেক্ষেত্রে তিনি স্থপতি আর প্রকৌশলীদের সঙ্গে দিনের পর দিন আলোচনা করেন, তাঁদের সহায়তা নেন৷ এবং অবশেষে যে বাড়িটি তিনি তৈরি করেছেন, সেখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থার জন্য ডসন পাশের পাহাড়ের চূড়ায় দুটি বায়ু চালিত টারবাইন স্থাপন করেন৷ যাতে পানি আসে পাশের নদী থেকে৷
ডসনের বাড়ির দেয়াল তৈরি হয়েছে স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন সব উপকরণ দিয়ে৷ তবে নির্মাণের সময় দেয়ালে কয়েকটা স্তর সৃষ্টি করা হয়েছে, যা তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে৷
ঘরে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করার জন্য খড়কুটো, ভেড়ার পশম আর গাড়ির পুরনো টায়ার ব্যবহার করেছেন ডসন৷ মার্কিন সেনারা এই প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছিলেন৷ আর ডসন সেটাই ব্যবহার করেছেন৷ একদম পরিবেশ বান্ধব উপায়ে!
অনেক কষ্ট করে তৈরি করা এই বাড়িতে এখন বাস করছেন ডসন, তাঁর জীবনসঙ্গী লিসা ও তাঁদের দুই সন্তান৷ ডসনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এ ধরণের আরেকটি বাড়ি তৈরি করা, যেখানে পর্যটকরা থাকতে পারবেন৷