পরিবারের সদস্যদের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার শিশু
৯ সেপ্টেম্বর ২০২১শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন বিষয়ে গঠিত জার্মানির একটি স্বাধীন কমিশন গবেষণাটি করেছে৷ কমিশন পাঁচ বছর ধরে শিশু বয়সে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ৮৭০ জনের গোপন শুনানি ও লিখিত বিবৃতি বিশ্লেষণ করে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে৷
একনজরে গবেষণায় পাওয়া তথ্য:
- ৮৭০ জনের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ ভুক্তভোগী মেয়ে শিশু
- তাদের অনেকে একাধিক ব্যক্তি দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে
- প্রায় অর্ধেক ভুক্তভোগীর বয়স যখন ছয়ের কম ছিল তখন তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে
- সবচেয়ে কমবয়সি ভুক্তভোগী হলো ‘ইনফ্যান্ট’
- নির্যাতনকারীদের ৮৭ শতাংশ নিজের বাবা, সৎ বাবা কিংবা পালক পিতা
- বাকিদের মধ্যে আছেন চাচা, দাদা/নানা, ভাই, সৎ মা ও অন্য আত্মীয়
- নির্যাতনের ধরনের মধ্যে আছে মৌখিক হুমকি, ধর্ষণ ইত্যাদি
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা নির্যাতিতদের কিছু উদ্ধৃতি:
- আমি কথা বলা শেখার আগেই দাদা/নানার দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছি৷ ফলে আমার সঙ্গে আসলে কী করা হয়েছে তা বুঝতে এবং সেই নির্যাতনের একটি নাম দিতে অনেক সময় লেগেছে৷
- সেই সময় আমি প্রায় পালিয়ে যেতাম, কিন্তু কখনও বেশি দূর যেতে পারিনি৷ বয়স সাত থাকায় আমি জানতামনা কোথায় যাওয়া যায়৷
- যখনই তা ঘটেছে তখনই আমি অসহ্য ব্যথা পেয়েছি, প্রচণ্ড দুঃখ পেয়েছি৷ এটা আমার শিশু হওয়ার যোগ্যতা কেড়ে নিয়েছিল৷ আমি খেলতে পারিনি, হাসতে পারিনি৷ আমি অনেক কাঁদতে শুরু করেছিলাম, বিশেষ করে জনসন্মুখে৷ সে কারণে আমাকে নিয়ে অনেকে হাসাহাসি করেছে, যেটা আমাকে আরও সমাজে বহিরাগত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে৷
শিশু বয়সে নির্যাতনের শিকার হওয়া একজন আঙ্গেলা মার্কুয়ার্ডট৷ তিনি বলেন, এসব ঘটনা পরিবারের মধ্যে ঘটে বলে এটাকে ব্যক্তিগত বিষয় বলে ধরে নেয়া হয়৷ ‘‘পরিবারের মধ্যে ঘটা এমন অপরাধ ব্যক্তিগত বিষয় নয়,'' বলেন তিনি৷ মার্কুয়ার্ডট বলেন, ‘‘পরিবারের মধ্যে শিশুকে একা ছেড়ে রাখার অধিকার সমাজের নেই৷'' এসব বিষয় নিয়ে সমাজে অনেক আলোচনা হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন৷
শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন বিষয়ে গঠিত স্বাধীন কমিশনের প্রধান সাবিনে আন্ড্রেসেন বলেন, ‘‘পারিবারিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে অনেকেই প্রচণ্ড অনাগ্রহী৷ কিন্তু যৌন নির্যাতন কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়৷'' তিনি বলেন, গবেষণায় জানা গেছে যে, এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করায় শিশুরা সময়মতো কারও সহায়তা পায়নি৷
আন্দ্রেয়া গ্রুনাও/জেডএইচ