ভারতের সামরিক শক্তি
৪ এপ্রিল ২০১২ভারতীয় নৌ-বাহিনীতে রাশিয়ার তৈরি পরমাণু সাবমেরিন আইএনএস-চক্র অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ভারত হলো ষষ্ঠ দেশ যাদের পরমাণু সাবমেরিন রয়েছে৷ অন্য পাঁচটি দেশ হলো অ্যামেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও চীন৷ এটি হলো রাশিয়ার আকুলা-টু শ্রেণির ডুবোজাহাজ নেরপা৷ দশ বছরের জন্য ‘লিজ' নেয়া এই পরমাণু ডুবোজাহাজ মূলত ভারতের নৌ-সেনাদের প্রশিক্ষণের কাজে লাগানো হবে৷
পরমাণু ডুবোজাহাজ আইএনএস-চক্র চালাবার জন্য ৩০ জন অফিসারসহ ৭০ জন নৌ-কর্মী রাশিয়ায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন৷ এই ডুবোজাহাজ ৭৩ জনকে নিয়ে সমুদ্রের নীচে ১০০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে৷ যেতে পারে সমুদ্রের ৬০০ মিটার নীচেও৷
পরমাণু ডুবোজাহাজ চক্র ভারতীয় নৌ-বাহিনীতে যুক্ত হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জিও-স্ট্র্যাটিজিক ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়তে পারে কিনা - সে বিষয়ে স্ট্র্যাটিজিক বিশ্লেষক ইন্দ্রনীল বন্দোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘এই মুহূর্তে হয়ত হবেনা৷ কেননা এটা পরমাণু ক্ষেপনাস্ত্র-বাহিত সাবমেরিন নয়৷ মূলত এটা আনা হয়েছে ট্রেনিং-এর জন্য৷ তবে ভবিষ্যতে যখন ভারতের নিজস্ব একটা পরমাণু সাবমেরিন বহর গড়ে উঠবে, তখন অবশ্যই ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আসবে৷''
পাশাপাশি স্ট্র্যাটিজিক বিশ্লেষক ইন্দ্রনীল বন্দোপাধ্যায় মনে করেন, ভবিষ্যতে ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি কোন পথে যাচ্ছে সেটা বিশ্ব আঁচ করতে পারবে৷ চীনের কাছে তো বটেই৷
দু'বছর আগেই এই পরমাণু সাবমেরিন ভারতে আসার কথা ছিল৷ সেজন্য ২০০৪ সালে ৯০ কোটি ডলারের লিজ চুক্তি হয়েছিল ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে৷ কিন্তু পরীক্ষাকালে এক দুর্ঘটনার দরুণ ডেলিভারি বিলম্বিত হয়৷ ঐ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল বহু রুশ নৌ-সেনা৷ ডুবোজাহাজ চক্র ১০০ জন নৌ-কর্মী নিয়ে পাঁচ সপ্তাহে সমুদ্রের নীচে পাঁচ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ভারতে আসে৷ এতে কোনো পরমাণু অস্ত্র ছিলনা৷
আইএনএস চক্রের সঙ্গে শীঘ্রই যুক্ত হবে আরো একটি পরমাণু সাবমেরিন৷ আর তাতে থাকবে পরমাণু ক্ষেপনাস্ত্র৷ ভারতের বিশাল সমুদ্রসীমা রক্ষায় অদূর ভবিষ্যতে আনা হবে আরো দুটি পরমাণু ডুবোজাহাজ৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ