পঞ্চায়েতের মনোনয়ন: রাজ্যজুড়ে সহিংসতা
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন ঘিরে অভাবিত সহিংসতা পশ্চিমবঙ্গে। গুলি, বোমা, লাঠি, রক্তে ভাসলো পশ্চিমবঙ্গ। প্রতিবাদও হলো।
সহিংসতার শিকার
রাজ্যজুড়েই সহিংসতা হয়েছে। অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকে। ভাঙড়, চোপড়া, বাঁকুড়া-সহ রজ্যের বহু জায়গায় রক্ত ঝড়েছে মনোনয়নপর্বে। অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় মনোননপত্র জমা দিতে দেয়া হয়নি বিরোধী প্রার্থীদের। বিজেপি-র এই প্রার্থী সহিংসতার শিকার। বাঁশ, রড দিয়ে মারা হয়েছে তাকে।
আহত মানুষেরা
আরেকজন আহত মানুষ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়ন ঘিরে এতটাই সংঘর্ষ হয়েছে যে, প্রচুর মানুষ আহত। ভাঙড়ে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা ও গুলি চলেছে। চোপড়ায় সিপিএমের মিছিলের উপর লাঠি, রড, বন্দুক নিয়ে আক্রমণ করা হয়।
দীনেশ মণ্ডলের দাবি
দীনেশ মণ্ডল জানিয়েছেন, তার স্ত্রী সোনামণি মণ্ডল মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেছিলেন। সেখানেই ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা তাদের আক্রমণ করে। তার বুকে একের পর এক ঘুষি মারা হয়।
উত্তম বাগ মার খেয়েছেন
উত্তম বাগের স্ত্রী ঝুমা বাগ বিজেপি-র হয়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। মনোনয়নপত্র পেশ করতে যেতেই শুরু হয় ব্যাপক মার। রীতিমতো আহত উত্তম। রাজ্যের ৫০ শতাংশ পঞ্চায়েত আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। তাই প্রার্থীর সঙ্গে তার স্বামী বা পরিবারের সদস্যরাও মনোনয়ন পেশের সময় যান।
মার অতীন্দ্র হালদারকে
অতীন্দ্র হালদার ডায়মন্ড হারবার দুই নম্বর ব্লকের প্রার্থী ছিলেন। তাকে বিডিও অফিসে ঢুকতে দেয়া হয়নি। বেধড়ক মারা হয়েছে।
বিমান বসুর নেতৃত্বে
চোপড়ায় সিপিএম ও কংগ্রেস প্রার্থীরা মিছিল করে মনোনয়নপত্র দিতে যাচ্ছিলেন। সেসময় তাদের মিছিলে হামলা হয়। একজন মাথায় গুলি লেগে মারা যান। গুরুতর আহত দুইজন। এরপর বিমান বসুর নেতৃত্বে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে যান। নির্বাচন কমিশনারকে স্মারকলিপি দেন।
পুলিশের সঙ্গে বিরোধ
নেতারা ভিতরে গিয়েছিলেন স্মারকলিপি জমা দিতে। বাইরে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা। পুলিশ তাদের সরাতে যায়। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। কর্মীরা সেই ব্যারিকেড ফেলে দিয়ে এগোতে চায়।
পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি
সিপিএমের এই নারী কর্মী পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি জুড়ে দেন। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, চোপড়ায় গুলিতে আমাদের সহকর্মীরা মারা যাচ্ছেন, ভাঙড়ে সহযোগী দলের কর্মীরা মারা যাচ্ছেন। আপনারা কোথায় ছিলেন?
রাস্তায় বসে প্রতিবাদ
সিপিএমের এই বয়স্ক মানুষটি রাস্তায় বসে পতাকা হাতে নিয়ে প্রতিবাদ দেখালেন। দলের সহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য। সহিংসতা বন্ধের দাবিতে।
আইএসএফ নেতার দাবি
ভাঙড়ে মনোনয়ন জমা দেয়া নিয়ে তৃণমূল ও আইএসএফের মধ্যে ব্যাপক গোলমাল হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশি নিরাপত্তায় শেষ পর্যন্ত আইএসএফ প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আইএসএফ নেতা নওসাদ সিদ্দিকি এসেছিলেন নির্বাচন কমিশনে, গ্রামবাসী ও কর্মীদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে।
বিজেপি নারী মোর্চার প্রতিবাদ
পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতার প্রতিবাদে বিজেপি নারী মোর্চার সদস্যরা রাস্তায় বসে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
প্রতিবাদে কংগ্রেসও
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে কংগ্রেস কর্মীরাও প্রতিবাদ জানান। চোপড়া, ভাঙড়, মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস কর্মীরাও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, একজন মারা গেছেন বলে অভিযোগ।
দাঙ্গাবিরোধী পুলিশ
বিরোধীদের প্রতিবাদ সামলাতে নামানো হয়েছিল দাঙ্গাবিরোধী পুলিশও। অথচ, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যখন সহিংসতা হয়েছে, তখন উপযুক্ত সংখ্য়ায় পুলিশ ছিল না বা থাকলেও তারা নীরব দর্শক ছিল বলে অভিযোগ বিরোধী দলগুলির।