ন্যায্য শর্তে ইউক্রেনে শান্তির ডাক দিলেন শলৎস
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩প্রায় ১৯ মাস ধরে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে একজোট হয়ে নিন্দা করে চলেছে, বিশ্বের বাকি অংশে সে রকম মনোভাব দেখা যাচ্ছে না৷ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তাই ইউরোপ-অ্যামেরিকার নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের আর্জি জানাচ্ছেন৷ তাঁদের মতে, এই ‘অন্যায়' হামলা মেনে নিলে তার পরিণতি গোটা বিশ্বের জন্য মারাত্মক হতে পারে৷ আজ যারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না, আগামীকাল তারাই একই অন্যায়ের শিকার হতে পারে৷ ব্রাজিল, ভারত ও সৌদি আরবের মতো দেশ ইউক্রেন সংকট অবসানের লক্ষ্যে যে শান্তির উদ্যোগের কথা বলছে, তেমন সম্ভাব্য সমাধানসূত্রের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কেও সংশয় প্রকাশ করছেন অনেক নেতা৷
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জাতিসংঘে তাঁর ভাষণে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে ইউক্রেনে শান্তি আনার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন৷ গত আগস্ট মাসে সৌদি আরবে ৪০টিরও বেশি দেশ মিলে ইউক্রেনে শান্তি আনতে যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সে প্রসঙ্গে শলৎস বলেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে যে অসহনীয় পরিণতি দেখা যাচ্ছে, ঠিক সে কারণেই এমন আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন রয়েছে৷ তবে শুধু নামেই নয়, প্রকৃত অর্থে শান্তি না ফিরলে দুর্বল কোনো সমাধানসূত্র কাজ করবে না বলে তিনি সতর্ক করে দেন৷ শলৎস বলেন, ‘‘স্বাধীনতা ছাড়া শান্তির অর্থ নিপীড়ন৷ ন্যয়বিচার ছাড়া শান্তির অর্থ স্বৈরাচার৷ মস্কোকে অবশেষে তা বুঝতে হবে৷'' তিনি আবার সরাসরি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ বন্ধ করার ডাক দেন৷ শলৎস মনে করিয়ে দেন, যে রাশিয়াই এই যুদ্ধের জন্য দায়ী৷ রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের একটি নির্দেশেই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে৷ জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি সাধারণ নীতিকে প্রকৃত গুরুত্ব দিলে তবেই তিনি সেই পদক্ষেপ নিতে পারেন৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের উদ্দেশ্যে রাশিয়ার ‘গণহত্যা'-র বিরুদ্ধে একজোটে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি দ্বিধাগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলিকেও ইউক্রেনের জয়ের গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেন৷ রাশিয়ার হামলা বন্ধ করতে এক শান্তি সম্মেলনে জেলেনস্কি বিশ্ব নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, মানবজাতির ইতিহাসে এই প্রথম আক্রান্ত দেশের শর্ত অনুযায়ী হামলা বন্ধ করার সুযোগ দেখা দিচ্ছে৷ তাঁর মতে, এমন দৃষ্টান্ত অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে হামলা বন্ধ করতে সাহায্য করবে এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে৷ বিশেষ করে রাশিয়ার অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলির ঝুঁকির উল্লেখ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট৷ তাঁর মতে, রাশিয়া বেলারুশ প্রায় গিলে ফেলেছে৷ কাজাকস্তান ও বাল্টিক দেশগুলিও রাশিয়ার হুমকির মুখে রয়েছে৷
কাজাকস্তান ও মধ্য এশিয়ার অন্যান্য প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের শীর্ষ নেতারা জাতিসংঘে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন৷ এমন ধরনের প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে বাইডেন এই দেশগুলির ঐক্য, অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি অ্যামেরিকার সমর্থন জানিয়েছেন৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)