1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব

১০ সেপ্টেম্বর ২০২০

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ডনাল্ড ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করলেন এক নরওয়ের রাজনীতিবিদ। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

https://p.dw.com/p/3iFRW
ছবি: Reuters/L. Millis

নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে স্বস্তির খবর পেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। নরওয়ের অতি দক্ষিণপন্থী এক রাজনীতিবিদ তাঁর নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছেন। সম্প্রতি ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সংযোগ তৈরির জন্য এই মনোনয়ন বলে দাবি করা হয়েছে।

ডনাল্ড ট্রাম্প কতটা শান্তিপ্রিয়, তা নিয়ে বহু বিতর্ক আছে। সাম্প্রতিক অতীতে যে ভাবে গোটা অ্যামেরিকা জুড়ে বর্ণবাদ বেড়েছে, যে ভাবে একের পর এক কৃষ্ণাঙ্গকে পুলিশ হত্যা করেছে, তাতে ট্রাম্পকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, ট্রাম্প বর্ণবাদকে সমর্থন করছেন। পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তো বলছেনই না, বরং তাদের সমর্থন করছেন। বস্তুত এর আগেও একাধিকবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিভাজনের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতায় আসার পরেই প্রকাশ্যে মুসলিম বিদ্বেষের কথা বলেছেন তিনি। শরণার্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছেন। মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তোলার কথা বলেছেন।

এখানেই শেষ নয়, করোনা কালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চীন বিরোধী রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে। করোনা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকে দায়ী করেছিলেন ট্রাম্প। এক সময় করোনাকে চীনা ভাইরাস বলেও সম্বোধন করেছেন তিনি। নির্বাচনের আগে দেশ থেকে চীনা ছাত্রদের বার করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তিনি। বাতিল করা হচ্ছে তাঁদের ভিসা। বেশ কয়েকটি চীনা কনসুলেট বন্ধ করে দিয়েছেন। করোনা কালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফান্ডিং বন্ধ করে দিয়েছেন।

অতি বড় ট্রাম্প সমর্থকও প্রেসিডেন্টকে শান্তিপ্রিয় বলতে রাজি হবেন না। বরং তাঁর উল্টো চরিত্র বলেই দেশের এক শ্রেণির জনগণের কাছে ট্রাম্প জনপ্রিয়। বাধ বিচার না করে ট্রাম্প যে কোনও কথা বলে দিতে পারেন, এই ভাবমূর্তিটিই প্রেসিডেন্টের ইউএসপি ছিল।

কিন্তু নরওয়ের রাজনীতিবিদের বক্তব্য, যে ভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েলকে আলোচনার টেবিলে বসিয়েছেন ট্রাম্প, তা অনস্বীকার্য এবং ঐতিহাসিক। বস্তুত এই প্রথম আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের বন্ধুত্ব তৈরি হলো। কূটনৈতিক সম্পর্কও তৈরি হলো। ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলির সম্পর্ক এর ফলে উন্নত হবে বলেই কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।

এর আগে ২০১৮ সালেও অবশ্য ওই একই ব্যক্তি ট্রাম্পের নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন। সে সময় উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপনের জন্য ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।

প্রস্তাব মানেই পুরস্কার নয়

পুরস্কারের জন্য নাম প্রস্তাব করা মানেই তাঁকে পুরস্কার দেওয়া নয়। সাধারণত কোনও দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাবেক নোবেল জয়ী, পররাষ্ট্র মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং নোবেল কমিটির সদস্যরা কারও নাম পুরস্কারের জন্য মনোনীত করতে পারেন। তারপর নোবেলের বিশেষ কমিটি সেখান থেকে সম্ভাব্য পুরস্কার প্রাপকদের বেছে নেন। ২০২০ সালের শান্তি পুরস্কারের তালিকায় তিনশ জনেরও বেশি মনোনীত ব্যক্তি আছেন।

তবে প্রস্তাবের কিছু নিয়ম আছে। কতগুলি মাপকাঠি দেখে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এই প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক অবশ্য বহুদিনের। বস্তুত এর আগে নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছিল। ডনাল্ড ট্রাম্পই সে সময় টুইট করে এর বিরোধিতা করেছিলেন। অনেকেই বলেন, শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নে নানা রাজনীতি কাজ করে। বস্তুত ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও সে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তবে ট্রাম্প শিবির অবশ্য এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি। বস্তুত, ট্রাম্প পুরস্কৃত হলেও তা জানা যাবে ১৮ মাস পরে। তার আগে অ্যামেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্টের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক মাসে কোনও কিছুই ট্রাম্পের পক্ষে যায়নি। ফলে নোবেল নিয়ে প্রচারে নামতেই পারেন ট্রাম্পের সমর্থকরা।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)