নির্বাচনেও জয়ী ক্যান্সারজয়ী চাবেস
৮ অক্টোবর ২০১২নির্বাচনের আগে তাঁর শেষ ভাষণে উগো চাবেস বলেছিলেন, ‘‘জনগণের প্রতি আনুগত্য আমাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনেছে৷ ভেনেজুয়েলার জনগণ, জেনে রাখো, চাবেস হারবে না৷’’ তা-ই হয়েছে৷ ৫৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়ে আরো ছয় বছরের জন্য ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি৷ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী এনরিকে কাপ্রিলেস পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ ভোট৷
রোববার ফলাফল ঘোষণার পর থেকে ভেনেজুয়েলায় শুরু হয়েছে চাবেস সমর্থকদের জয়োল্লাস৷ সমর্থকদের প্রায় সবাই চাবেসের প্রিয় লাল রংয়ের জামা পরে আসায় কারাকাসের রাস্তাগুলো লালে ছেয়ে যায়৷ মারিয়া বারমুদেসও বিজয় মিছিলে নামার আগে লাল জামা পরতে ভোলেননি৷ গুয়ারিকো রাজ্যের এই স্কুল শিক্ষিকা বলছিলেন, ‘‘বিপ্লব অদম্য৷ বিপ্লব অব্যাহত রাখতে চাবেস কখনোই আমার ভোটের অমর্যাদা করেননি৷’’ সরকারি কর্মচারী আলফ্রেদো সালসেদোও চাবেস আরেক দফা নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত, উচ্ছ্বাস নিয়েই বলছিলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট জনগণের জন্য কত কী করেছেন, আমরা তাঁর পাশে, বিপ্লবের সঙ্গে না থেকে পারি!’’
এমন আনন্দে উদ্বেলিত হাজারো সমর্থকের উপস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ভবন চত্বরটা যেন হয়ে উঠেছিল লালসমুদ্র৷ প্রেসিডেন্ট চাবেস সেই জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে দেশের স্ধাধীনতা সংগ্রামী সিমন বলিভারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘‘জয় ভেনেজুয়েলা৷ ২১ শতকের গণতান্ত্রিক এবং বলিভারীয় সাম্যবাদের পথে যাত্রাটা ভেনুজুয়েলা অব্যাহত রাখবে৷’’ এ যাত্রায় বিরোধী দলকেও সঙ্গে রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷ এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে ১৪ বছর শাসনের পর চাবেস আবার নির্বাচিত হয়ে যেন বিরোধী দলকে ভোট দেয়া ৬০ লাখ মানুষের মতামতকে অগ্রাহ্য না করেন৷
নির্বাচনের পর বিরোধী জোটের সমর্থকদের মাঝে নেমে আসে হতাশা৷ ফলাফল অবশ্য একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়৷ অধিকাংশ জনমত জরিপে চাবেসই এগিয়ে ছিলেন৷ তবে কাপ্রিলেসের উন্নতিটা শেষ দিকে এসে খুব চোখে পড়ে৷ দুটো জরিপ এগিয়ে রেখেছিল তাঁকে৷ ৮ মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে ৫৮ বছর বয়সী চাবেসের সঙ্গে সার্বিক ব্যবধানটা সাড়ে দশ পয়েন্টে নামিয়ে এনেছিলেন৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরেই গেলেন কাপ্রিলেস৷ হেরে যে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন তা-ও নয়৷ বরং নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ফলাফল মেনে নিয়েছি৷ জনগণের রায়কে আমি সম্মান করি৷’’
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স)