1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিরাপত্তা চায় হৃদয় মণ্ডলের পরিবার

১১ এপ্রিল ২০২২

ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল অবশেষে জামিন পেয়েছেন৷ তিনি এবং তার পরিবার এখন নিরাপত্তা চান৷ 

https://p.dw.com/p/49liH
রোববার বিকালে মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল৷
রোববার বিকালে মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল৷ছবি: bdnews24

রোববার বিকালে মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল৷

শ্রেণিকক্ষের আলোচনার সূত্র ধরে ধর্ম অবমাননার মামলা করা হলে গ্রেপ্তার করা হয় মুন্সীগঞ্জের এই স্কুল শিক্ষককে৷ তৃতীয় দফা জামিন চাওয়ার পর আদালত তা মঞ্জুর করলে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়৷

মুন্সীগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা জজ মোতাহারাত আক্তার ভূইয়া রোববার হৃদয় মন্ডলের জামিন মঞ্জুর করেন৷ বিকেল ৫টার পরে জেলা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল৷

মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার আবুল বাশার ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘আমরা সোয়া ৪টার দিকে জামিননামার কাগজটা হাতে পাই। এরপর যাবতীয় ফরমালিটি শেষে রবিবার বিকাল ৫টা ২ মিনিটে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’’

হৃদয়ের আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ কারাগারের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র যাচাই শেষে কারা কর্তৃপক্ষ শিক্ষককে মুক্তি দিয়েছেন।’’

জামিনে মুক্তি পাওয়া হৃদয় মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, তার বিরুদ্ধে করা মামলাটি মিথ্যা।

গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির একটি অনির্ধারিত ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করছিলেন হৃদয় মণ্ডল। সেখানে এক ছাত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের তুলনা করে কিছু প্রশ্ন করে। হৃদয় মণ্ডল সেগুলোর জবাব দেন।

নিজের জন্য পরিবারের জন্য নিরাপত্তা চান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল
নিজের জন্য পরিবারের জন্য নিরাপত্তা চান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলছবি: bdnews24

ক্লাসের এক ছাত্র ওই আলোচনা মোবাইলে রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। দুদিন পর কিছু ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করে। পরে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

ওই রাতেই স্কুলের অফিস সহকারী কাম ইলেক্ট্রিশিয়ান আসাদ বাদি হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করলে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷

ঘটনা জানাজানির পর দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ ছড়িয়ে দেয়া অডিও রেকর্ডে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলার মতো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷ তাই তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি ওঠে শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন মহল থেকে৷

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, হৃদয় মণ্ডলকে ‘‘ফাঁসানোর জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে’’ একটি মহল৷

২৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালত হৃদয় মন্ডলের জামিন আবেদন নাকচ করে। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আদালতও জামিন আবেদন নাকচ হয়৷ রোববার মুন্সীগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা জজ মোতাহারাত আখতার ভূইয়া জামিন মঞ্জুর করার পর হৃদয় মন্ডলের স্ত্রী ববিতা হাওলাদার সন্তোষ প্রকাশ করেন৷ তবে এ সময় তিনি তার স্বামীর সুষ্ঠুভাবে চাকরি করার সুযোগ এবং পরিবারের সবার নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তাও দাবি করেন৷

এসিবি/এপিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)