1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারীকে নিরাপদ রাখতে রিকশা চালকদের প্রশিক্ষণ

১৫ নভেম্বর ২০১৪

ভারতের নতুন দিল্লির রিকশা চালক নারোতান সিং নারী বা মেয়েদের সমস্যা নিয়ে কখনো আগ্রহী ছিলেন না৷ অন্য লিঙ্গের সঙ্গে তার যোগাযোগ মূলত মা, স্ত্রী এবং মেয়ের সঙ্গেই সীমাবদ্ধ৷

https://p.dw.com/p/1Dmkk
Rikschafahrt in Neu Delhi Indien
ছবি: DW

তবে রিকশা চালাতে গিয়ে প্রতিদিনই অনেক নারীর সঙ্গে দেখা হয় নারোতানের৷ টাইট-ফিটিং জিন্স বা স্কার্ট পরা মেয়েদের দিকে তিনি আড় চোখে তাকাতেন৷ রিকশায় থাকা পেছনের দিকে দেখার আয়নায় এসব পোশাকের মেয়েদের দিকে দৃষ্টিকটুভাবে তাকানো তার কাছে ছিল নিত্যদিনের ব্যাপার৷

তবে গতমাসে এক প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার পর আমূল বদলে গেছেন ৩৭ বছর বয়সি রিকশা চালক নারোতান৷ ‘লিঙ্গ সংবেদনশীলতা' বিষয়ক এই প্রশিক্ষণের আয়োজক দাতা সংস্থা ‘মানাস ফাউন্ডেশন' এবং ‘দিল্লি ট্রান্সপোর্ট অথরিটি'৷ নারোতান এই বিষয়ে বলেন, ‘‘প্রশিক্ষণের আগে মনে হয়েছিল, এটা আসলে সময়ের অপচয়৷ এই সময়টা বরং রিকশা চালিয়ে কিছু উপার্জন করা যেতো৷''

কিন্তু প্রশিক্ষণের পরে তাঁর মনোভাব বদলে গেছে৷ তিনি জানান, ‘‘দিল্লির রাস্তায় মেয়েরা কতরকম সমস্যায় পড়ে তা আমি প্রশিক্ষণে জানতে পেরেছি৷ আমি বুঝতে পেরেছি এসব সমস্যা সমাধানে আমারও ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে৷''নারোতান হচ্ছেন দিল্লির চল্লিশ হাজার রিকশা চালকের একজন যারা এক ঘণ্টার এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন৷ এখন তারা ইতোমধ্যে ‘ধর্ষণের রাজধানী' হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দিল্লির রাস্তায় নারীদের নিরাপদ চলাফেরা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখছেন৷ নারীদের সম্মানের চোখে দেখে এই সমস্যা অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব৷

ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ২০১৩ সালে ধর্ষণের পরিমাণ আগের চেয়ে ৩৫ দশমিক দুই শতাংশ বেড়ে ৩৩,৭০৭-তে পৌঁছেছে৷ সেবছর শুধু নতুন দিল্লিতে ধর্ষণের ১,৪৪১টি ঘটনা পুলিশ নথিভুক্ত করেছে৷

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ২৩ বছর বয়সি এক নারীকে বাসের মধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়৷ ধর্ষণ এবং নির্যাতনে গুরুতর আহত নারীটি চিকিৎসারত অবস্থায় কিছুদিন পরে মারা যান৷ সেই ঘটনায় টনক নড়ে ভারতবাসীর৷ ধর্ষণ প্রতিরোধের বিষয়টি সামনে চলে আসে৷

মানাস ফাউন্ডেশনের স্মিতা তেওয়ারি পান্ত জানান, ‘‘আমরা প্রশিক্ষণে রিকশা চালকদেরকে ধর্ষণের ভয়াবহ পরিসংখ্যান তুলে ধরি৷ এই পরিস্থিতি বদলে কি করা উচিত তাও তাদের জানানো হয়৷ পাশাপাশি এটাও মনে করিয়ে দেয়া হয় যে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দিল্লিতে পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাবে৷ তখন আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে রিকশা চালকরা৷''

নতুন দিল্লিতে অটো-রিকশা চালকের সংখ্যা ১২০,০০০৷ এই চালকদের এখন থেকে প্রতি বছর একঘণ্টা ‘লিঙ্গ সংবেদনশীলতা' বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে৷ নারোতান মনে করেন ট্যাক্সি এবং বাস চালকদেরও এই প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত৷ তাহলে তাঁর মতো তারাও নারীকে আর পোশাক দেখে মাপার চেষ্টা করবে না৷ বরং তাদের নিত্যদিনের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করবে, নিরাপদে পৌঁছে দেবে তাদের গন্তব্য৷

এআই / জেডএইচ (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য