1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাইবা হলো তারা খ্যাতিমান

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চলতি পথে মাঝে মাঝে কিছু মানুষ দেখে মুগ্ধ হই৷ ব্যক্তিস্বার্থকে পাশে রেখে মানবসেবায় নিয়োজিত হয়েছেন তারা৷

https://p.dw.com/p/3Y7AP
ফাইল ফটোছবি: Alan Mitcham

ডয়চে ভেলেতে আসার পথে মাঝেমাঝেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়৷ জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে একা দাঁড়িয়ে থাকেন পরিবেশ রক্ষার দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে৷ শেষবার তাঁকে দেখেছিলাম গাড়ির চাকার টায়ার থেকে সৃষ্টি হওয়া পার্টিকেল নিয়ে কথা বলতে৷ পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এই পার্টিকেলের বিষয়ে নাকি কেউই তেমন একটা সচেতন নন৷ 

অ্যালেন মিটশাম শুধু জাতিসংঘের সামনেই নয়, আরো কয়েক জায়গায় প্রতিবাদ করতে যান৷ তার বাহন একটি সাইকেল৷ কখনো কখনো নানা ফেস্টুনে ঢাকা সেই সাইকেলটা দেখি ট্রেন স্টেশনের পাশে পার্ক করে রাখা হয়েছে৷ তাঁর এই কর্মকাণ্ড দেখতে ভালোই লাগে৷ মনে আশা জাগে এই ভেবে যে, সবকিছু ফেলে শুধু প্রতিবাদ করে যাওয়া মানুষ এখনো আছে৷ আর তারা সেসব করেন কোনোরকম প্রচারের আশা ছাড়াই৷

২০১৭ সালে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে দেখা হয়েছিল এক ইউরোপীয়র সঙ্গে৷ ইউরোপের লোভনীয় চাকরি ফেলে তিনি কয়েক মাসের জন্য সেখানে চলে গেছেন রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের সহায়তা করতে৷ ব্যক্তি উদ্যোগে ক্যাম্প থেকে ক্যাম্পে ঘুরে ঘুরে তিনি নিজের সাধ্যমতো সহায়তা করছিলেন তাদের৷

সেই ব্যক্তি বাংলাদেশে যেতেন পর্যটক ভিসায়৷ কয়েক সপ্তাহ পর পর তাঁর নতুন করে ভিসা নিতে হতো৷ ভিসা নেয়ার প্রক্রিয়াটি জটিল ছিল৷ বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে পাশের কোনো দেশে কয়েকদিন কাটিয়ে তারপর আবার বাংলাদেশে আসতেন তিনি৷ বিমানবন্দর থেকে কয়েক সপ্তাহের জন্য পেতেন ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা'৷

আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, রোহিঙ্গাদের তো অনেক দেশি-বিদেশি সংগঠন সহায়তা করছে, আপনি তারপরও এভাবে ঝুঁকি নিয়ে একা একা তাদের সহায়তা করছেন কেন? তিনি জানিয়েছিলেন, ব্যক্তিগত তাগাদা থেকেই কাজটা করেন তিনি৷ নিজের সন্তান নেই, রোহিঙ্গা শিশুদের সেবা প্রদানের মাধ্যমে সন্তান লালনপালনের আনন্দটা উপভোগ করেন তিনি৷

সেই ইউরোপীয়কে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু তিনি এতটাই প্রচারবিমুখ যে, তাঁর নামটা ব্যবহারেরও অনুমতি দেননি৷ 

Arafatul Islam Kommentarbild App
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

গতবছর যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাই, তখন পরিচয় হয় সোফিয়া ডিনেয়েলসনের সঙ্গে৷ তিনি রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা শরণার্থীদের হারিয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের খুঁজে বেড়ান৷ তাদের কেউ হয়ত বাংলাদেশে, কেউ মালয়েশিয়ায়, কেউবা সৌদি আরবে আছেন৷ গত পাঁচ বছর ধরে এই কাজটা করে যাচ্ছেন সেই মার্কিনী৷

উপরের যে তিনটি ঘটনার কথা বললাম, সেগুলোর কোনোটিই গণমাধ্যমে বিশেষ গুরুত্ব পায়নি৷ গ্রেটা টুনব্যার্গের জনপ্রিয়তার কাছেপিঠেও নেই অ্যালেন মিটশাম৷ রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা এই ইউরোপীয়র কথা জানে আমার মতো অল্প কিছু মানুষ৷ আর সোফিয়া ইন্সটাগ্রামে কিছুটা পরিচিত৷ তাদের মতো প্রচারের বাইরে থাকা জনদরদীদের প্রতি শ্রদ্ধা৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য