নাইজেরিয়ায় শোকের দুই বছর পূর্ণ
১৪ এপ্রিল ২০১৬দু'বছর পর বিশেষ প্রহরায় নাইজেরিয়ার চিবোক-এ ফিরেছিল অপহৃত ২১৯ জন স্কুল ছাত্রীর বাবা-মা৷ সন্তানদের অপহরণের বর্ষপূর্তিতে তাদের প্রার্থনা ছিল, ‘‘ঈশ্বর, আমাদের এখনো জীবিত রাখার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ৷ কোনো সমস্যা ছাড়া আমরা চিবোকে আসতে পেরেছি বলেও তোমাকে ধন্যবাদ৷''
কয়েক বছর ধরেই চিবোকসহ উত্তর নাইজেরিয়ার বড় একটি অঞ্চল রীতিমতো আতঙ্কের জনপদ৷ তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম সেখানে হত্যা ও অপহরণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল চিবোকের এক স্কুল থেকে রাতের আঁধারে স্কুল ছাত্রীদের অপহরণ করে তাঁরা৷
সিএনএন সম্প্রতি ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সি ওই অপহৃত ছাত্রীদের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে৷ সবাই খ্রিষ্টান পরিবারের সন্তান হলেও ভিডিওতে তাদের রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়েদের মতো বোরকা পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়৷
চিবোকে অনুষ্ঠিত স্মরণ ও প্রতিবাদ সভায়ও দেখানো হয়েছে সেই ভিডিও৷ ভিডিও দেখে কয়েকটি পরিবার তাদের সন্তানকে চিহ্নিতও করেছে৷ তবে সন্তানদের ফিরে পাওয়ার আশা তাঁরা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন৷ অপহৃত এক ছাত্রীর মা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘অপহরণের খবর পাওয়ার পরই আমরা আমাদের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি৷ মেয়েটিকে আবার দেখতে পাবো এমনটি এখন আর কল্পনাও করতে পারিনা৷''
অপহৃত ছাত্রীদের পরিবারগুলো মনে করে, নাইজেরিয়া সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই অপহরণকাণ্ডটি সম্ভব হয়েছে৷ সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে এখনো সন্তানদের ফিরে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও তাদের ধারণা৷
২০১৪ সালেই #BringBackOurGirls-এর মাধ্যমে নাইজেরিয়ায় অপহৃত ছাত্রীদের ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির আন্দোলন শুরু করা হয়৷ কিন্তু তখনকার প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন ছাত্রীদের উদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেননি৷ নির্বাচনে হেরে ক্ষমতা হারিয়েছেন গুডলাক৷ তবে নতুন সরকারও প্রায় উদ্যোগহীন৷ যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন ড্রোনের মাধ্যমে জেনে বোকো হারামের একটি ঘাঁটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিল নাইজেরিয়া সরকারকে৷ ওই ঘাঁটিতে কয়েকজন অপহৃত ছাত্রী আছে- এমনটি জানানোর পরও নাইজেরিয়া সরকার ছাত্রীদের উদ্ধারের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি৷
এসিবি/এআই (এপি, ডিপিএ)