নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বোকো হারামের হামলা অব্যাহত
৭ জানুয়ারি ২০১২গত বছরের বড়দিন থেকেই অব্যাহত রয়েছে নাইজেরিয়ার খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীর উপর হামলার ঘটনা৷ বড়দিনে একটি ক্যাথলিক গির্জার বাইরে বোমা হামলায় ৪৯ জন নিহত হয়৷ এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে সান্ধ্য আইন জারি করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথান৷ কিন্তু সরকারের এই পদক্ষেপ বোকো হারামের অভিযান বন্ধ করতে পারবে না বলে বিবৃতি দেয় গোষ্ঠীটির মুখপাত্র আবুল কাকা৷ উল্টো তারা উত্তরাঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার জন্য সকল খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীকে তিনদিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়৷ এরপর থেকেই উত্তরের বিভিন্ন অঞ্চলে একের পর এক হামলা ও বোমা বিস্ফোরণ চালাতে থাকে তারা৷
বৃহস্পতিবার গোম্বে শহরের একটি গির্জায় প্রার্থনারত অবস্থায় খ্রিষ্টানদের উপর গুলি বর্ষণ করে অস্ত্রধারীরা৷ সেখানে যাজকের স্ত্রীসহ ছয় জন নিহত হন৷ শুক্রবার মাবি শহরে খ্রিষ্টানদের একটি বাড়িতে হামলা করে তারা পাঁচ জনকে হত্যা করে৷ এছাড়া আদামাওয়া রাজ্যের ইয়োলা শহরে শুক্রবার সন্ধ্যার প্রার্থনার সময় একটি গির্জায় হামলা চালায় বোকো হারাম৷ এতে নিহত হয়েছে অন্তত ১০ জন৷
এছাড়া ইয়োবে শহরে একটি গির্জায় হামলা চালিয়ে সেখানে আট জনকে খুন করে চরমপন্থীরা৷ একই শহরে পুলিশের সাথে চরমপন্থীদের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে আরো দু'জন৷ এরপর শুক্রবার আদামাওয়া এবং ইয়োবে রাজ্যে পুলিশের সদর দপ্তরে হামলা চালায় বোকো হারামের সশস্ত্র সদস্যরা৷ তারা সেখানে দু'টি ব্যাংকেও হামলা ও লুটপাট করে৷
ইয়োবে রাজ্যের পুলিশ কমিশনার লাওয়ান ট্যাঙ্কো জানিয়েছেন, রাতভর বোকো হারামের সদস্যদের সাথে পুলিশ সদস্যদের বন্দুকযুদ্ধ চলেছে৷ এতে অন্তত ১৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ ঘটনার পর পটিসকাম শহর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে৷ কারণ তাদের আশঙ্কা, সেনা সদস্যরা ঐ এলাকায় বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিতে পারে এবং দমন অভিযান চালাতে পারে৷ যেমনটি ঘটে মাইদিগুরি শহরে বোকো হারামের প্রতিটি অভিযানের পরপরই৷ স্থানীয় বাসিন্দারা চরমপন্থী গোষ্ঠীকে হামলায় সহায়তা এবং প্রশ্রয় দিয়েছে এমন অভিযোগে সেনা সদস্যরা মাইদিগুরির স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে বারবার৷ শনিবার সকালে পটিসকাম শহরে সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: জাহিদুল হক