মোদীকে আবারও ক্লিন চিট
২৭ ডিসেম্বর ২০১৩এর বিরুদ্ধে জাকিয়া জাফরি পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতে আবেদন করলে আদালত এবারেও আগের রায় বহাল রাখেন৷
নরেন্দ্র মোদীকে ২০০২ সালে গোধরা এবং গোধরা পরবর্তী দাঙ্গায় জড়িত থাকার বিষয়ে ক্লিন চিট দেয়া ঠিক হয়নি, বলে জাকিয়া জাফরির প্রতিবাদ পিটিশনের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রায় দেন আহমেদাবাদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট৷ রায়ে বিশেষ তদন্তকারী দলের আগেরকার রিপোর্ট বহাল রেখে এবারেও মোদী এবং অন্য ৫৬ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয় উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে৷ ঐ ৫৬ জনের মধ্যে ছিলেন রাজনীতিক ও আমলা৷
তবে প্রতিবাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারেন৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই-এর প্রাক্তন প্রধানের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল ২০০৮ সালে গুজরাট দাঙ্গায় মোদী ও অন্যান্যদের ভূমিকা নিয়ে তদন্তে নেমে ২০১১ সালে যে রিপোর্ট পেশ করেন, তাতে বলা হয় মোদীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ এর প্রেক্ষিতে, ২০১২ সালে ঐ তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ গুটিয়ে নেয়া হয়৷
এই তদন্ত প্রক্রিয়া গুটিয়ে নেয়াকে চ্যালেঞ্জ করে জাকিয়ার আইনজীবীর অভিযোগ ছিল বিশেষ তদন্তকারী দল এসআইটি, অপরাধীদের আড়াল করার জন্য প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্যপ্রমাণগুলি পরীক্ষা করে দেখেননি৷ অভিযুক্তদের বয়ানের ওপরই নির্ভর করেছেন, সাক্ষীদের নয়৷ ঐ রিপোর্ট একপেশে৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদী তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেননি, বরং হিংসায় ইন্ধন জুগিয়েছেন৷ অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙার পর হিন্দু মৌলবাদী কর সেবকরা ফিরতে শুরু করলে রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ গোধরা ট্রেন জ্বালানোর ঘটনায় ৫৯ জন হিন্দু কর সেবক মারা গেলে পাল্টা হিংসার আশঙ্কায় আগাম সতর্কতা জারি করেছিল৷ মুখ্যমন্ত্রী তাও উপেক্ষা করেন বলে জাকিয়ার আইনজীবীর অভিযোগ৷
জাকিয়া জাফরি কে?
জাকিয়ার স্বামী কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি ২০০২ সালে গোধরা কাণ্ডের পর আহমেদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটিতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে নিহত ৬৯ জনের মধ্যে একজন ছিলেন৷ এই হত্যাকাণ্ডের জেরে সারা গুজরাটে ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা৷ প্রাণ হারায় বারোশোর মতো৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, পরপর দুটি রায়ে ক্লিন চিট পাওয়ায় সংসদীয় নির্বাচনের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রাথী মোদীর পায়ের জমি শক্ত হলো৷ জোর গলায় মোদীপন্থিরা প্রচার করতে পারবে মোদী সাম্প্রদায়িক নন৷ ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের প্রকৃত প্রতীক পুরুষ৷ যোগ্য প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার৷