নতুন মেশিন কমাবে ভারতের নিষ্কাশন সমস্যা
২৪ নভেম্বর ২০১৮
ভারতে জাত ও বর্ণপ্রথার ফলে বিভিন্ন জাত বা ‘কাস্ট'-এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিশেষ কিছু পেশা৷ সেভাবেই সমাজের সর্বনিম্ন জাতের ভাগে পড়ে বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ, যেমন মল বা মরদেহ ইত্যাদি বস্তুর নিষ্কাশনের দায়িত্ব৷ হাজার হাজার বছর পরে এখনো ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলে বর্তমান এই ধারা৷ কোনোরকমের সুরক্ষামূলক মুখোশ বা দস্তানা ছাড়াই কিছু বিশেষ জাতের মানুষ (যারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র অংশের মানুষও) শুধু নিজেদের হাত দিয়ে নালা-নর্দমা পরিষ্কার করে থাকেন বলেই এই পেশাকে বলা হয় ‘ম্যানুয়েল স্ক্যাভেঞ্জিং'৷ মনে রাখতে হবে, এই নর্দমাগুলিতে বর্জ্য বস্তুর পাশাপাশি থাকে বিষাক্ত গ্যাসও, যা ভীষণ বিপজ্জনক৷
এই সমস্যার মোকাবিলা করতে গত সোমবার, বিশ্ব শৌচাগার দিবস উপলক্ষে ভারতের ‘সুলভ ইন্টারন্যাশনাল' সংস্থা একটি নতুন মেশিন বাজারে এনেছে৷
এই সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, গত তিন বছরে নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৩০০ ব্যক্তি৷ নতুন এই যন্ত্রটি বিশাল আকারের সিরিঞ্জ দিয়ে নালায় জল ভরে৷ জলের চাপে বর্জ্য বস্তু মাটির ওপরে উঠে এসে একটি বড় পাত্রে জমা হয়৷ রিমোটচালিত এই মেশিনে থাকবে ক্যামেরাও, যার সাহায্যে নালার অবস্থার ছবি দেখতে পাবেন সাফাইকর্মীরা৷
সুলভ ইন্টান্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা বিন্দেশ্বর পাঠকের মতে এই পেশা অসম্মানজনক এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ৷
‘‘এই মেশিন নিরাপদে নোংরা পরিষ্কার করবে ও এতে কোনো প্রাণ হানির ভয় থাকবে না৷''
নতুন আইন প্রনয়ণ করে ভারতে বহু পুরোনো এই প্রথাকে বন্ধ করার একাধিক উদ্যাগ নেওয়া হলেও বেসরকারি ক্ষেত্রে তা রোধ করা হয়ে উঠছে না৷
শুধু তাই নয়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীরা এখনো হাত দিয়েই মল বা অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করেন, যা ভারতে পর্যাপ্ত শৌচাগারের অভাবের দিকেও আঙুল তোলে৷
এই দুই সমস্যার বিরুদ্ধেই লড়ছে বিন্দেশ্বর পাঠক ও তাঁর সংস্থা৷
এসএস/এসিবি (এএফপি)