নকশাল নেতা কানু সান্যাল আর নেই
২৩ মার্চ ২০১০রোগযন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই তিনি এই পথ বেছে নিলেন বলে মনে করা হচ্ছে৷
যে নকশালবাড়িতে উগ্র বাম রাজনীতির এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন, সেই নকশালবাড়িতেই জীবন শেষ করলেন কানু সান্যাল৷ নকশাল আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা৷ চারু মজুমদারের পরেই উচ্চারিত হত যার নাম৷ নকশাল আন্দোলন শেষ হয়ে গেলেও কানু সান্যাল কখনও হার মানেননি৷ নকশালবাড়িতেই কৃষক-মজুরদের নিয়ে নতুন করে সংগঠনের কাজ করে গেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত৷ তবে শেষদিকে রোগযন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলেন৷ ২০০৯ সালে বড় ধরণের হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর৷ তার পর থেকেই নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল৷ এমনকি পুরনো পরিচিতদেরও মাঝে মধ্যে চিনতে পারতেন না৷ সংগঠনের কাজ করতে চাইতেন, কিন্তু শরীর বাদ সাধত৷ সম্ভবত সেই হতাশা থেকেই তিনি আত্মঘাতী হলেন বলে অনেকের অনুমান৷ কিন্তু এত অসুস্থতা সত্ত্বেও সরকারি অনুগ্রহে চিকিৎসার প্রস্তাবে রাজি হননি৷ কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে নিখরচায় চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়া সত্ত্বেও আসেননি৷ জানিয়েছেন নকশাল নেতা সন্তোষ রাণা৷ আর আরেক সহযোদ্ধা আজিজুল হকের মন্তব্যে যেন ছিল অনুতাপের সুর৷
সিপিআই, সিপিএম-সহ সব বাম দল এদিন কানু সান্যালের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন৷ সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, আজকের মাওবাদী আন্দোলনকে কখনও সমর্থন করেননি কানুবাবু৷ বিশেষত নন্দীগ্রাম-লালগড়ের পর স্পষ্ট ভাষায় নিজের অসমর্থন জানিয়েছিলেন৷
৭৮ বছরের কানু সান্যাল অকৃতদার ছিলেন৷ এবং কার্যত ছিলেন কপর্দকহীন৷ তাঁর এক চালার খোড়ো বাড়ির ঘরে কানু সান্যাল রেখে গেলেন বামপন্থী পত্র-পত্রিকা, বই এবং মার্ক্স, লেনিন, মাও সে তুং-এর কিছু ধূসর হয়ে যাওয়া ছবি৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন