অ্যাডভেঞ্চার ও নিরাপত্তা
১৯ এপ্রিল ২০১৩বরফের উপর খেলাধুলার মজাই আলাদা৷ কিন্তু বিপদও কম নয়৷ তুষার ধসের কবলে পড়লে মৃত্যুও হতে পারে৷ একবার ধস নামলে ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বেগে তা ধেয়ে আসতে পারে৷ তখন আর মানুষের কিছুই করার থাকে না৷
সুইজারল্যান্ডের গবেষকরা পাহাড়ে বরফের একটা বড় অংশ সাফ করে দেখেছেন, সেখানে তুষার ধসের ঝুঁকি কতটা৷ ভালো করে দেখলে এখানে সহজেই চোখে পড়ে, উপরের স্তর মাঝারি শক্ত, বেশিদিন আগে জমেনি৷ বাতাস বরফ এখানে উড়িয়ে নিয়ে এসেছে৷ তারপর এখানে একটা আবরণ রয়েছে৷ উত্তাপ ও কিছুটা বৃষ্টির কারণে এটা তৈরি হয়েছে৷ নীচেটা বেশ নরম৷ তার মানে এই জায়গাটা বেশ নাজুক৷
ঝুঁকি আসলে কতটা, তা জানতে বরফের ক্রিস্টাল ভালো করে পরীক্ষা করা হয়৷ কারণ ধস তখন নামে, যখন মসৃণ নয় – বরফের এমন কণার দুর্বল স্তর তৈরি হয়৷ তার উপরের স্তর তখন পিছলে যায়৷ খালি চোখে তা বোঝার উপায় নেই৷ এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত৷ সামান্য চাপ এলেই হুড়মুড় করে ধস নামতে পারে৷
তাই একটা ছোট জায়গা জুড়ে লাফিয়ে পরীক্ষা করা যায়৷ বরফ ভেঙে গেলেই ধসের বিপদ রয়েছে৷ উপরের স্তরের নতুন বরফ বা দক্ষিণের বাতাসে বয়ে আনা বরফের স্তর পরীক্ষা করে বোঝা যায় অবস্থাটা আসলেই কতটা নাজুক৷
কেউ ধসের নীচে চাপা পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে৷ কারণ মিনিট দশেকের মধ্যেই মানুষের বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ে৷ সেই পরিস্থিতি এড়াতে উদ্ধারকারী দল হালের প্রযুক্তির জিপিএস যন্ত্র ও অন্য একটি খোঁজার যন্ত্র ব্যবহার করে৷ তবে যারা স্কি করছেন, তারাও মোবাইল ফোন সহ কিছু জিনিস সঙ্গে রাখতে পারেন, যা বিপদে কাজে আসবে৷ নিরাপত্তা প্রশিক্ষক স্টেফান কস বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন৷
সব সময় মানুষ খোঁজার যন্ত্র, একটা কোদাল ও পাইপ সঙ্গে রাখা আজকাল নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ডাক্তার ডাকতে সঙ্গে একটা মোবাইল ফোনও থাকতে হবে৷ তবে সব রকম প্রস্তুতি সত্ত্বেও আল্পস পর্বতে ধসে চাপা পড়ে বছরে গড়ে ২৫ জনের মৃত্যু হয়৷ তাই সাহায্যকারীরা গ্রীষ্মকালেও কাজ করেন৷ তাঁরা অনেক জায়গা বিশাল জাল দিয়ে মুড়ে দেন৷ যেখানে গাছপালা কম, সেখানে এই জাল বরফের ধস আটকাতে পারে৷
কিন্তু শীত এলেই বরফের মতিগতি আর বোঝা যায় না৷ তাপমাত্রার সামান্য ফারাক ঘটলেই ধস নামতে পারে৷ তখন আর পালানোর পথ থাকে না৷
এসবি/ডিজি