1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষণ সংক্রান্ত নয়া নির্দেশিকা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৩ মার্চ ২০১৪

ধর্ষিতা নারীর স্পর্শকাতরতা বজায় রেখে ধর্ষণের মেডিক্যাল তথ্যপ্রমাণ যাতে নথিভুক্ত করা হয়, তার জন্য ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একগুচ্ছ নতুন নির্দেশিকা ঘোষণা করেছে৷ এতে ধর্ষণ মামলায় আরো বেশি সংখ্যক অপরাধীর শাস্তি হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/1BUE7
ছবি: picture-alliance/dpa

ধর্ষিতা নারীর স্পর্শকাতরতা বজায় রেখে ধর্ষণের মেডিক্যাল তথ্যপ্রমাণ যাতে নথিভুক্ত করা হয়, তার জন্য ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একগুচ্ছ নতুন নির্দেশিকা ঘোষণা করেছে৷ এতে ধর্ষণ মামলায় আরো বেশি সংখ্যক অপরাধীর শাস্তি হতে পারে৷

ধর্ষণ ও যৌন নিগৃহীতাদের চিকিৎসা, যত্ন-পরিচর্যা এবং পুনর্বাসন দেবার নিয়মকানুন, পন্থাপদ্ধতি, তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের একটা নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন একগুচ্ছ নির্দেশিকা ঘোষণা করেছে৷ এই নির্দেশিকা গোটা দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র এবং নার্সিং হোমগুলিকে মেনে চলতে হবে৷ আর সেটা করতে হবে ধর্ষিতার শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা ও স্পর্শকাতরতার কথা মাথায় রেখে, অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে৷ বিশেষ করে, ধর্ষিতার চিকিৎসক এবং পরিচর্যা কর্মীদের এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে৷ যৌন নিগ্রহের অন্যান্য ক্ষেত্রেও এই নীতিগুলি প্রযোজ্য হবে৷

Menschenhandel Gewalt Frau Pakistan
ধর্ষিতা নারীকে মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয় (ফাইল ছবি)ছবি: DW

এর ফলে ধর্ষণ ও যৌন নিগৃহ মামলার আইন কানুনের মধ্যে অসঙ্গতি দূর করে একটা অভিন্নতা আনা সম্ভব হবে, সংবাদমাধ্যমকে একথা বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্তাব্যক্তি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বুধবার ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লিতে যৌথভাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তা প্রকাশ করে৷ এই নির্দেশিকা তৈরি করা হয় বিচারপতি জে. এস. ভার্মা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেডিকো-আইনি নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে৷

নির্দেশিকার প্রধান সংস্থানগুলির মধ্যে আছে, ধর্ষিতা নারী দেশের যে কোনো সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে বিনা পয়সায় চিকিৎসা ও ওষুধপত্র পাবেন৷ এমনকি, ঘরে ফিরে যাওয়ার পরও পাবেন৷ শিল্প সংস্থা বা কর্পোরেট দুনিয়া তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালনের অঙ্গ হিসেবে এই নির্দেশিকা যাতে মেনে চলে, তার জন্য আবেদন রাখা হয়েছে৷

নয়া নির্দেশিকায় কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না:

১৷ ধর্ষিতা ও নিগৃহীতার মেডিক্যাল টেস্ট করার সময় চিকিৎসা কক্ষে ডাক্তার ছাড়া অন্য কেউ থাকতে পারবে না৷ ডাক্তার যদি পুরুষ হন, তাহলে একজন মহিলা কর্মীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক৷

২৷ বিতর্কিত ‘‘টু-ফিঙ্গার'' বা জোড়া আঙুল পরীক্ষা নিষিদ্ধ৷ এই পরীক্ষায় ধর্ষিতার যোনিপথে বা পায়ুদেশে আঙুল ঢুকিয়ে দেখা হয় তাঁর সতিচ্ছদ অক্ষত আছে কিনা৷

৩৷ ডাক্তাররা তাঁদের মৌখিক মতপ্রকাশে বা জবানবন্দি দেওয়ার সময় ‘‘ধর্ষণ'' শব্দবন্ধটি উচ্চারণ করতে পারবেন না৷ ধর্ষণের আইনি সংজ্ঞা আলাদা, মেডিক্যাল পরিভাষায় তা গ্রাহ্য নয়৷

৪৷ চিকিৎসা পরিষেবা পেতে প্রথমে পুলিশের কাছে যাওয়া ধর্ষিতার পক্ষে বাধ্যতামূলক নয়৷

Indien Urteil Gerichtsprozess 13.09.2013
ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভও বেড়েছেছবি: Reuters

৫৷ ধর্ষণের বিষয়টি ফরেনসিক-মেডিক্যাল রিপোর্টের ভিত্তিতে স্থির করা বাধ্যতামূলক৷

৬৷ ধর্ষিতা মহিলাকে পরীক্ষার আগে জানাতে হবে তাঁর কী ধরণের পরীক্ষা করা হবে এবং তার পদ্ধতি কী?

সবথেকে বড় যে প্রশ্নটা উঠে আসছে, তা হলো, এই সমাজে ধর্ষিতা নারীকে যে মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়, তার উৎস কোথায়? পুলিশ-প্রশাসন এমনই এক উৎস, যার কাছে নির্যাতিতা নারী সবথেকে বেশি প্রতিকারের আশা রাখে এবং থানায় অভিযোগ জানাতে যান৷ কিন্তু পুলিশের হাতে ঐ নারী দ্বিতীয়বার নির্যাতিতা হন৷ বারংবার থানায় ডেকে পাঠানো, ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ জানতে চাওয়া, অশোভন প্রশ্ন ও মন্তব্য করা ধর্ষণের যন্ত্রণা, গ্লানি ও অবসাদকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়৷ তার ওপর রাজনীতিকরা ধর্ষিতা নারীর পোশাক-আশাক, স্বভাব-চরিত্র, অসময়ে একাকী পথে বের হওয়া ইত্যাদি নিয়ে তির্যক মন্তব্য ধর্ষণের অপরাধকে লঘু করে দেয়৷ এমনকি গণমাধ্যমগুলিও কম যায় না৷ সব মিলিয়ে এতে ধর্ষিতার সামাজিক পুনর্বাসনের পথটি বন্ধ হয়ে যায়৷

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুভবুদ্ধির উদয় হতে দেখা যাচ্ছে৷ যেমন মুম্বইয়ে এক টেলিফোন অপারেটরের গণধর্ষণ মামলার বিচার এবং অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি হয়েছে মাত্র সাত মাসের মধ্যে৷ এই দ্রুত বিচার একটা সদর্থক লক্ষণ বৈকি!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য