ধর্ষণ-বিরোধী বিল
১৪ মার্চ ২০১৩ধর্ষণ-বিরোধী কড়া আইনের খসড়া বিলটি ভারতের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার সংসদে তা পেশ করা হবে৷ ধরে নেয়া হলো, যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে আইন কড়া করতে ফৌজদারি আইন সংশোধনী সংসদে পাশ হলো৷ তারপর যে সব প্রশ্ন থেকে যায় তা হলো, এতে কি নারী নিগ্রহ রোধ করা যাবে? কারণ আইন করাই শেষ কথা নয়, আইনের উপযুক্ত প্রয়োগ সমান গুরুত্বপূর্ণ৷
পাশাপাশি দরকার নাগরিক সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন৷ দরকার অপরাধীর দ্রুত বিচার ও শাস্তি৷ গত বছরের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লির চলন্ত বাসে ২৩ বছরের মেডিক্যাল ছাত্রী ‘নির্ভয়া'র গণধর্ষণের ঘটনার জেরে যে গণজাগরণ দেশের মানুষ দেখেছে, সেই চেতনাকে প্রজ্বলিত রাখতে হবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, মনে করেন সমাজতাত্ত্বিকরা৷
সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তন একদিনে আসে না, একথা ঠিক৷ মহিলাদের প্রতি সম্মানবোধ গড়ে তুলতে হবে শিশু বয়স থেকে৷ সেই দায়িত্ব বাবা-মায়ের এবং শিক্ষকদের৷ তাতেও কি মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ নির্মূল হয়ে যাবে? তা হয়ত যাবে না, কিন্তু একটা সুস্থ স্তরে আসবে৷ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে প্রতি ৩০ মিনিটে একটি নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটছে৷
খসড়া বিলে যে সব বিষয়ে মতভেদ ছিল, তা দূর করা হয়েছে৷ যেমন ‘ধর্ষণ' শব্দটির পরিবর্তে ‘নারী নিগ্রহ' শব্দ ব্যবহার করা সুপারিশ করেছিল আইন মন্ত্রক৷ তা শেষপর্যন্ত গ্রাহ্য হয়নি৷ সম্মতি সাপেক্ষে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়সসীমা ধরা হয়েছিল ১৮ বছর, তা কমিয়ে বিলে রাখা হয়েছে ১৬ বছর৷ মেয়েদের পিছু নেয়াকেও কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছে৷
বিলে অন্য যেসব বিষয়ের ওপর জোর দেয়া হয়েছে, তা হলো পুলিশের দায়বদ্ধতা বাড়ানো, মহিলা পুলিশ ও থানার সংখ্যা বাড়ানো, ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত প্রক্রিয়া মজবুত করা,সাক্ষীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা ইত্যাদি৷