দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বক্তব্য
ঢাকার বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের চড়া দাম নিয়ে নাগরিকদের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে৷ ডিডাব্লিউর সঙ্গে কথা বলার সময় তাদের অনেকে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও এর জন্য দায়ী করেছেন৷
‘অর্ধেক খাবার খেয়ে জীবন ধারণ করছে’
বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন মনে করেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান কম তাই দাম বেশি৷ মানুষ আগে যে খাবার খেতো এখন তার অর্ধেক খাবার খেয়ে জীবন ধারণ করছে৷ তিনি মনে করেন, নতুন সরকার দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, কিন্তু পারছে না৷ কারণ, চাহিদার তুলনায় জোগান কম৷ তাই মানুষ খুব অসুবিধায় আছে বলে মনে করেন তিনি৷
‘কেন যে দাম কমছে না তা সরকারই বলতে পারবে’
রিকশাচালক মোহাম্মদ মুস্তাকিম বলেন, ‘‘আমাদের উপার্জন কম৷ দিনে এনে দিনে খেতে হয়৷ চাইলেই রিকশা ভাড়া বেশি নেয়া যায় না৷ তাই আমাদের এত কষ্ট হচ্ছে৷ আমার মনে হয় সরকার নজরদারি করছে, তারপরও কেন যে দাম কমছে না তা সরকারই বলতে পারবে৷’’
‘আশা ছিল নতুন সরকার দাম নিয়ন্ত্রণ করবে, কিন্তু এখনো পারেনি’
চা বিক্রেতা নয়ন তারা বলেন, শেখ হাসিনার সময় জিনিস-পত্রের যে দাম ছিল এখন ইউনূস সরকার এসে দাম আরো বাড়িয়ে দিয়েছে৷ ‘‘ফেসবুকে নাকি ছাত্ররা বলেছে জিনি-সপত্রের দাম কমাবে, কিন্তু এখনও দাম কমতে দেখছি না৷ আশা ছিল নতুন সরকার দাম নিয়ন্ত্রণ করবে৷ কিন্তু এখনো পারেনি৷ সে কারণে আমাদের মতো কম আয়ের মানুষ অনেক কষ্টে আছে,’’ বলেন তিনি৷
‘ব্যবসায়ীরা সৎ না’
চাকরিজীবী আয়েশা ইসলাম বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা যদি সৎ হতো, মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকতো, তাহলে তারা কম লাভ করে বিক্রি করলে দাম এমনিতেই গ্রহণযোগ্য অবস্থায় থাকতো৷’’ আয়েশা ইসলাম আরো বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের চেয়ে ব্যবসায়ীদের ভূমিকা বেশি৷ পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও তার ভোক্তা অধিকার নিয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷
‘সিন্ডিকেট দায়ী’
ডিম বিক্রেতা মোহাম্মদ লিটন বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম বাড়িয়েছে৷ তার ভাষ্য অনুযায়ী, বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম বেশি৷ সরকার যদি ঠিকমতো নজরদারি করতো, তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে পারতো না৷
‘দাম এখনও কম আছে’
খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ মোস্তফা মিয়া মনে করেন, টানা কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে বাজারের পণ্য সরবরাহ কমেছে৷ অনেক সবজি ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে৷ এছাড়া এখন চলতি মৌসুমের উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ শেষের দিকে আছে৷ সামনে শীত মৌসুমের আগাম সবজির সরবরাহ বাড়বে৷ দুই মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এখন দাম বাড়ছে৷ আওয়ামী লীগ সরকার এ সময় থাকলে দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তো৷ কিন্তু নতুন সরকার আসায় দাম এখনো কম আছে বলে মনে করেন তিনি৷
‘সরকার সবই জানে’
গৃহিণী হেলেনা বেগম বলেন, ‘‘আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ, দাম বাড়লে আমাদের মতো কম আয়ের মানুষদের কষ্ট হয়৷ সরকার এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে, সরকার সবই জানে৷ সরকার সব জানার পরও যদি দাম না কমায়, তাহলে আমরা ঝামেলায় পড়বো৷’’
‘বন্যার প্রভাব পড়েছে’
সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ নূর উদ্দিন মনে করেন, বাজারে বন্যার পরের প্রভাব পড়েছে, তাই সবজির দাম বেশি৷ ‘‘আগে সবজির জোগান বেশি ছিল৷ আমরা কম দামে ক্রয় করে বিক্রি করতে পারতাম৷ কিন্তু এখন পারছি না,’’ বলেন তিনি৷