1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দৈহিক নিগ্রহের শিকার আফগান মেয়ে এখনও হাসপাতালে

১৩ জানুয়ারি ২০১২

কাবুলের মেয়ে সাহার গুলের যখন বিয়ে হয় তখন তার বয়স মাত্র ১৫৷ শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে জোর করে পতিতা করতে চেয়েছিল৷ রাজি না হওয়ায় তার ওপর চলে অমানবিক অত্যাচার৷ শেষ পর্যন্ত তাকে মুক্ত করা হয়৷ কিন্তু এখনও সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷

https://p.dw.com/p/13iQG
Handout image of the 09 August 2010 cover of TIME Magazine showing 18-year-old Afghan 'Aisha' whose nose and ears were cut off by her husband as punishment for shaming his family, said Aisha. Aisha is currently en route to the United States where the Grossman Burn Foundation will provide her with reconstructive surgery. EPA/TIME / HANDOUT NO SALES, EDITORIAL USE ONLY, COURTESY OF TIME
পতিগৃহে চরম নিগ্রহের ঘটনা বারংবার ঘটেছেছবি: picture alliance/dpa

সাহার গুল হয়ে উঠেছে আফগানিস্তানে নারীদের অধিকারের এক রক্তাক্ত মুখচ্ছবি৷ বিয়ের পরই তার ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার৷ তাকে পতিতা হিসেবে কাজ করাতে চায় শ্বশুর-শাশুড়ি৷ সাহার গুল কিছুতেই রাজি হয়নি৷ মারধোর করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা৷ সাহারকে প্রায় ছয় মাস একটি টয়লেটে আটকে রাখ হয়৷ গরম ইস্ত্রি দিয়ে সাহারের গা পুড়িয়ে দেয়া হয়৷ তার আঙুলের নখ তুলে ফেলা হয়৷ কয়েকটি আঙুল ভেঙেও ফেলেন তারা৷ তার স্বামী কখনোই তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি৷

সাহার গুলের অবস্থা জানিয়ে তার চাচা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে৷ উদ্ধার করা হয় সাহারকে৷ তাকে পাঠানো হয় ওয়াজির আকবর খান হাসপাতালে৷ সেখানে তার চিকিৎসা এখনো চলছে৷ নার্স লতিফা মির্জাদ জানান, ‘‘সাহার এখন খুব ধীরে ধীরে হাঁটতে পারে৷ সে এতদিন বিছানায় পড়ে ছিল৷ সে অল্প অল্প করে খাবার খাচ্ছে৷ কথা বলে অত্যন্ত দুর্বল কন্ঠে৷ এবং যখনই সে কথা বলে তখনই তার ওপর কোন ধরণের অত্যাচার চালাতো শ্বশুর-শাশুড়ি সেই কথাই উঠে আসে৷ সারাক্ষণই সে বিড়বিড় করে বলছে আমারা শশুর-শাশুড়ি আমাকে মেরেছে৷''

সাত মাস আগে সাহার গুলকে হুইল চেয়ারে করে হাসাপাতলে নিয়ে আসা হয়৷ তার সারা মুখ ছিল ফোলা৷ চোখের কোনে রক্ত জমে আছে৷ অথচ সাতমাস আগেই তার বিয়ে হয়েছে৷

সাহার গুলের কথা সরাসরি প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইকে জানানো হয়৷ বুধবার আফগান নারী সংস্থার একটি প্রতিনিধি বিষয়টি নিয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন৷ প্রেসিডেন্ট কারজাই হস্তক্ষেপ করেন৷ কাপুরুষের মত যারা এধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন তিনি৷ পুলিশ ইতিমধ্যেই সাহার গুলের শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে৷ তারা পুরো ঘটনা অস্বীকার করেছে৷ সাহারের স্বামী আফগান সেনাবাহিনীতে কর্মরত৷ তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে৷

অক্সফাম ইন্টারন্যশনাল গত বছরের অক্টোবর মাসে একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিবাহিত আফগান মেয়েদের শতকরা ৮৭ শতাংশই বিভিন্ন ধরণের মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচারের সম্মুখীন হয়৷ এবং এদের সবাইকেই জোর করে বিয়ে দেয়া হয়৷ মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় আরেক সংস্থা ‘দ্যা আফগান ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিউম্যান রাইট্স কমিশন' ২০০১ সালের প্রথম ছয় মাসেই এক হাজার ২৬টি গৃহ নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে৷ ২০১০ সালে ঘটে প্রায় দুই হাজার সাতশো ঘটনা৷

সাংসদ ফওজিয়া কোফি আক্ষেপের সঙ্গে জানান, এই ঘটনা যদি কয়েক বছর আগেও ঘটতো তাহলে আমরা কিছুই জানতে পারতাম না৷ কারণ তখনও পরিবারের মধ্যে এসব ঘটনার কথা গোপন রাখা হত৷ বাড়ির মেয়ে বা বউয়ের ওপর কোন ধরণের অত্যাচার চালানো হয়েছে তা কখনোই বাইরের মানুষরা জানতে পারতো না৷ তবে আশ্বাস প্রদান করে তিনি বলেন, দিন পাল্টাচ্ছে৷ মেয়েরা মুখ খুলছে৷ নিজেদের অধিকারের দাবিতে মেয়েরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য