দুই দলের চাল
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আশা ছেড়ে দিয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন এখন নির্বাচনের সময় সর্বদলীয় সরকারের কথা বলছেন৷ আর প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলছেন, যৌথ সরকারের কথা৷ এই দুই আইনজ্ঞের মতামত কাছাকাছি৷ ওদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, শেষ পর্যন্ত সংকট গিয়ে ঠেকবে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান কে হবে, সেই বিষয়ে৷ যদি একজন নির্দলীয় নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান করা হয়, তাহলে আর সব বিষয়ে বিএনপি ছাড় দেবে বলেই মনে করেন ড. আহমেদ৷ তবে সরকার এই বিষয়টি মানবে কিনা তা বুঝতে আরো সময় লাগবে৷ কারণ সরকারের মেয়াদ আছে ২৪শে জানুয়ারি পর্যন্ত৷ তাই তাদের হাতে এখনও বেশ কিছুটা সময় আছে৷
ড. ইমতিয়াজ বলেন, সরকারি দল যে নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে তাতে ভাবার কোনো কারণ নেই যে, সরকার একতরফা নির্বাচনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাঁর মতে, আসলে বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া দেখতে চাইছে সরকারি দল৷ তারা দেখতে চাইছে সরকারের ওপর কতটা চাপ সৃষ্টি করতে পারে বিএনপি৷ এটা তাদের একটি রাজনৈতিক চাল৷
অন্যদিকে, রাজনীতির সাধারণ নিয়মে বিএনপির এখন চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার কথা৷ কিন্তু তারা তা করছে না৷ তাই ড. ইমতিয়াজ বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২৪শে জানুয়ারি পর্যন্ত মাথায় রেখেইে কাজ করছে বিএনপি৷ তাই তারা আপাতত কঠোর কোনো আন্দোলনে যাচ্ছে না৷ তারা অক্টোবর মাস পর্যন্ত হয়ত অপেক্ষা করবে৷ তারা যদি তখন আন্দোলন জোরদার করতে পারে, তাহলে তা প্রভাবিত করবে সরকারি দলকে৷ দেশ যদি সংঘাত-সংঘর্ষের দিকে এগিয়ে যায় তাহলে তা দেশের ভিতরে এবং বাইরেও চাপ সৃষ্টি করবে, যা সরকারি দলকে নতুন সিদ্ধান্তের দিকে নিয়ে যাবে, মনে করেন তিনি৷
ড. ইমতিয়াজ জানান, চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যাবেন বলে মনে হচ্ছে৷ সেখানে তিনি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করবেন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন দুই নেত্রীর সঙ্গে টেলিফোন মারফত কথা বলে আদতে কী চেয়েছেন, তাও পড়ার চেষ্টা করবেন৷
অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের মতে, শেষ পর্যন্ত একটি সমঝোতার জায়গায় যাবে দুই দল৷ কিন্তু আগের চেহারার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, সেটা হবে সমঝোতার সরকার৷