1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করলে বন্ধ হবে বাল্যবিবাহ

সমীর কুমার দে, ঢাকা৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ এ কাজ হবে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে, দারিদ্র কমিয়ে ও শিক্ষার হার বাড়িয়ে৷ সে লক্ষ্যেই কাজ করছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আর মহিলা অধিদপ্তর৷

https://p.dw.com/p/1GfzD
Sheikh Hasina
ছবি: Reuters

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়ার্ল্ড লিডার্স ফোরামে ‘গার্লস লিড দ্য ওয়ে' শীর্ষক বক্তব্যে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হবে৷ মৌলবাদী বা ধর্মান্ধরা বাংলাদেশে মেয়েদের শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে কোনো বাধা হবে না৷ কারণ জনগণ তাদের জন্য কোনটি ভালো এবং কোনটি ভালো নয়, সে ব্যাপারে সচেতন৷ তিনি বলেন, মৌলবাদী শক্তি একসময় মেয়েদের শিক্ষার বিরোধিতা করতো৷ তবে সেই সময় গত হওয়ায় আমরা এখন সে চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠেছি৷ আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ৷ সরকার নারীদের কর্মসংস্থান ও জাতীয় কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে৷''

'মেয়ের বিয়ে হলে পোষ্য কমবে'

এর আগে গত বছর লন্ডনে অনুষ্ঠিত বাল্যবিবাহ বিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকার করেছিলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নীচে মেয়েদের বিবাহ বন্ধ করা হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সব ধরনের বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে৷

প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা কিভাবে বাস্তবায়নের কাজ চলছে? মেয়েদের বয়স কমিয়ে না সামাজিকভাবে সচেতনতার মাধ্যমে নাকি অন্য কোনোভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহীন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘‘দারিদ্রের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম তো চলছেই৷ শিক্ষাকে সর্বোচ্চ আগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার৷ পাশাপাশি চলছে সামাজিক সচেতনতা৷ আর বয়স কমানোর ইস্যু তো ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে৷ এখন আমরা পাহাড়ি ও চরাঞ্চলে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি৷ আশা করছি, ২০৪১ সালের অনেক আগেই আমাদের কাজ শেষ হবে৷ বাংলাদেশে তখন কোনো বাল্যবিয়ে থাকবে না৷ অভিভাবকরা ইতিমধ্যে অনেক সচেতন হয়েছেন৷''

বাল্যবিবাহের শিকার শাবনাজ

বয়সের ইস্যু শেষ হয়ে গেছে বলে শাহীন আহমেদ চৌধুরী দাবি করলেও, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলছেন ভিন্ন কথা৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আইনের মধ্য থেকে ঐ ‘ক্লজটি' তো এখনো বাদ দেয়া হয়নি৷ ফলে সরকারের সদিচ্ছা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে না৷''

কী আছে ঐ ক্লজে? – এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ঐ ক্লজে বলা আছে, মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছরই থাকছে৷ তবে বাবা-মা ইচ্ছে করলে পারিপার্শ্বিক কারণে ১৬ বছর বয়স হলেই মেয়েদের বিয়ে দিতে পারবেন৷ এটা রাখা যাবে না৷ পুরোপুরি ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেয়ার কোনো ব্যবস্থা রাখা হলেই সেখানে অপব্যবহার হতে পারে৷ ফলে ওই ক্লজটি উঠিয়ে দিতে হবে৷''

আয়েশা খানমের মতে, ‘‘সরকার যদি ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে চায়, তাহলে পারিবারিক সচেতনতা বাড়াতে হবে৷ দূর করতে হবে দারিদ্র৷ এর পাশাপাশি কিশোরীদের নিরাপত্তাহীনতাও দূর করতে হবে৷ এই নিরাপত্তাহীনতা গ্রামে এখনো অনেক বেশি৷ যদিও স্কুলে যাওয়া কিশোরীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷ সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফলেই এটা সম্ভব৷''

জানা গেছে, সমতল এলাকায় এর মধ্যেই বাল্যবিবাহ বহুলাংশে বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে সরকার৷ কিন্তু পাহাড়ি ও চরাঞ্চলে এখনও এই প্রবণতা রয়েছে৷ ইউনিসেফ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই ৩৯ শতাংশ এবং ১৮ বছরের মধ্যে ৭৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হচ্ছে৷ এ দেশে বাল্যবিবাহের গড় হার ৬৫ শতাংশ৷ ১৫ বছরের কম বয়সি মেয়েদের বিয়ের এই হার বিশ্বে সর্বোচ্চ৷ প্রতিবেশী দেশ ভারতের বাল্যবিবাহের গড় হার ৫০ শতাংশ, নেপালে ৫৭ শতাংশ এবং আফগানিস্তানে ৫৪ শতাংশ৷ ছাড়া সরকারের ২০১১ সালের সর্বশেষ বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ (বিডিএইচএস) বলছে, ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ৬৬ শতাংশ কিশোরীর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে৷ ১৯ বছরের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন কিশোরী গর্ভধারণ করছে বা সন্তানের জন্ম দিচ্ছে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান