অর্থনীতি ও সামাজিক সূচকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারতকেও পেছনে ফেলেছিল৷ আন্তর্জাতিক মহলের সুনামও কুড়াচ্ছিল বেশ ভালোই৷ বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল দুই সংস্থা বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও দেশ বাংলাদেশের প্রশংসা করছিল৷ অনেকে বাংলাদেশকে ‘মডেল’ হিসেবে নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলেন৷
কিন্তু সেই দিন আর নেই৷ বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি; সব সূচকই এখন নেতিবাচক৷ মূল্যস্ফীতির পারদ ১০ শতাংশে উঠেছে৷ খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে৷ রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সও কমছে৷ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে; এখন যে বিদেশি ঋণ আসছে, তার ৭০ শতাংশই চলে যাচ্ছে আগে নেওয়া ঋণের সুদ-আসল পরিশোধে৷ কোনো দেশের ঋণ-রাজস্ব অনুপাত ২০০ থেকে ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত মেনে নেয়া যায়৷ কিন্তু বাংলাদেশে ঋণ-রাজস্ব অনুপাত ৪০০ শতাংশের বেশি৷ সে হিসাবে সরকারের ঋণ বিপজ্জনক মাত্রা অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছে৷ বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে৷ বিপরীতে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ রিজার্ভের চেয়ে বেশি৷ এদিক থেকেও বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ৷ আগামী বছর থেকে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ বাড়তে থাকবে৷ ডলারের জোগান না বাড়লে পরিস্থিতি খুবই খারাপ দিকে মোড় নিতে পারে৷
দিন যতো যাচ্ছে৷ অর্থনীতিতে সংকট ততোই বাড়ছে৷ সরকার চেষ্টা করছে; কিন্তু আশার আলো দেখা যাচ্ছে না৷ উল্টো ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সংকটের নতুন ডালপালা উঁকি দিচ্ছে৷ অন্যতম প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে এক মাস ধরে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করে চলেছে৷ এ কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ফের জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়েছে৷ বাসসহ ট্রেনেও আগুণের ঘটনা ঘটছে৷ ভোট যতো ঘনিয়ে আসবে; সংঘাত ততোই বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ রাজনীতির চাকায় আবারও পিষ্ঠ হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি৷ সরকারকে অর্থনৈতিক সংকট সামাল দেওয়ার পাশাপাশি বিএনপির নির্বাচন বর্জনের আন্দোলনও সামলাতে হচ্ছে৷
এখন প্রশ্ন হচ্ছে-অর্থনীতির এই বেহাল দশা কেন হলো? মূলত দুই ভুলে তছনছ হয়ে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি; ওলোটপালট হয়ে গেছে সব হিসাবনিকাশ৷ এই দুই ভুলের একটি হচ্ছে-দীর্ঘদিন ডলারের দর একই দামে ‘স্থির’ রাখা৷ আর আরেকটি হচ্ছে ব্যাংক ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে আটকে রাখা৷
দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল অর্থনীতি৷ প্রধান সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরছিল৷ স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্টোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে ঘিরে দেশের উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগের ছক কষছিলেন৷ কিন্তু পৌনে দুই বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সব আশা আকাঙ্খা মাটি করে দিয়েছে; অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ পাগলা ঘোড়ার মত ছুঁটছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলার৷
দেড় বছর আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর৷ গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর বাড়তে থাকে ডলারের দর; টানা বাড়তে বাড়তে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারেই এখন প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে৷ গত ১২ নভেম্বর ডলারের দাম নামমাত্র ৫০ পয়সা কমানো হয়েছে৷ কিন্তু সেই দরে ডলার মিলছে না৷ ব্যাংকগুলো ১১৫/১১৬ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি করছে; এলসি (আমদানি ঋণপত্র) খুলতে ১১৬/১১৭ টাকায় ডলার কিনতে হচ্ছে৷ প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিটেন্স সংগ্রহ করছে ১২২/১২৩ টাকায়৷ কিছুদিন আগে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলার ১২৮ টাকায় উঠেছিল৷ এখনও ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷
২০২১ সালের অক্টোবরে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা৷ অর্থাৎ দুই বছর আগে এক ব্যাংক আরেক ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে প্রতি ডলারের জন্য ৮৪ টাকা ৮০ খরচ করতে হতো৷ বুধবার (২৯ নভেম্বর) লেগেছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা৷ এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এই দুই বছরে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার মান কমেছে ৩০ দশমিক ৪১ শতাংশ৷
বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক ও স্পর্শকাতর সূচক মূল্যস্ফীতি যে প্রায় ১০ শতাংশে উঠেছে, তার অন্যতম প্রধান একটি কারণ ডলারের এই উল্লম্ফন৷ সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবেই গত অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ৷ খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ৷ যা এক যুগ বা ১২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি৷
শুধু মূল্যস্ফীতি নয়, ডলারের উল্লম্ফনের প্রভাব অর্থনীতির সব খাতেই পড়েছে৷ রিজার্ভ কমতে কমতে উদ্বেগজনক পর্যায়ে নেমে এসেছে৷ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে৷ কিন্তু এরপর থেকে কমছেই অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক৷ আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যয় সংকোচনের পদক্ষেপ নিয়েও রিজার্ভের পতন ঠেকানো যায়নি৷ উল্টো দিন যতো যাচ্ছে, রিজার্ভ কমছেই৷
সবশেষ গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ ওইদিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার৷ আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস' হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার৷
সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়া যাবে৷ তার আগে রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাড়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই৷ বিদেশি ঋণ-সহায়তা ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগও (এফডিআই) নিম্মমুখী৷
এ পরিস্থিতিতে আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ না পাওয়া পর্যন্ত রিজার্ভ বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ তবে, আইএমএফের ঋণ পাওয়া নিয়েও আছে সংশ্রয়৷ সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রর সম্পর্ক খুব বেশি ভালো যাচ্ছে না৷ আর যুক্তরাষ্ট্রের কথামতো অনেক সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ৷ সেটা যদি হয়, তাহলে কিন্তু আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ আটকে যেতে পারে৷ তখন কিন্তু সংকট আরও ঘনীভূত হবে৷
এখন প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কম সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে৷ আমদানি বেড়ে যদি ৬ বিলিয়ন হয়, তাহলে কিন্তু ৩ মাসের খরচ মিটবে৷ তার মানে রিজার্ভ কিন্তু উদ্বেগজনক পর্যায়ে নেমে এসেছে; আরও যদি কমে যায়, তাহলে কিন্তু বড় বিপদ ডেকে আনবে৷
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার প্রথমসারির জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো ‘ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ কমে ১৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ তবে রিজার্ভের এই হিসাব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশের তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখন ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার৷
এই সূচকগুলো বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি মোটেও ভালো নেই৷ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সব দেশেই পড়েছে৷ সব দেশেই ডলারের দর বেড়েছে; মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল৷ সামাল দিয়ে তারা কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ সব দেশেই মূল্যস্ফীতি কমে সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে৷
কিন্তু বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমছে না৷ ডলার সংকট কাটছে না; ডলারের বাজারে অস্থিরতা যাচ্ছে না৷ তাহলে প্রশ্ন জাগে কী করছে সরকার? কী করছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ সব দেশ পারলে বাংলাদেশ পারছে না কেন? গলদ কোথায়? বাংলাদেশ কী ঠিকঠাক মতো ব্যবস্থাপনা করছে না৷?
এখানে দুটি বিষয় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন৷ দীর্ঘদিন ডলারের দর ধরে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক ঠিক কাজটি করেনি৷ ওইটা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত৷ আরেকটি ভুল ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের৷ মূল্যস্ফীতি পারদ চড়ছিল; ৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে উঠে গেলো—তারপরও ৯ শতাংশ সুদহার দীর্ঘদিন ধরে রেখেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ করেনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সত্ত্বেও থাইল্যান্ড, ভারত, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে৷ সুদের হার বাড়িয়ে চাহিদা কমানোর নীতি অবলম্বন করে এসব দেশ সফলভাবে মূল্যস্ফীতি কমাতে পেরেছে৷
বেশি দিন আগের কথা নয়; এক বছর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি ৬৯ দশমিক ৮ শতাংশে উঠেছিল৷ অবিশ্বাস্য তথ্য হচ্ছে-অক্টোবরে সেই মূল্যস্ফীতি ১ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে দ্বীপদেশটি৷
অথচ বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি চড়ছে৷ গত বছরের অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ; এই অক্টোবরে তা বেড়ে প্রায় ১০ শতাংশ-৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে উঠেছে৷ এখন অবশ্য সুদের হার বাড়ানো হচ্ছে৷ কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে৷ এই দুই ভুলের মাশুলই বাংলাদেশকে এখন দিতে হচ্ছে৷ আরও কতদিন দিতে হবে কে জানে?
দুর্দশাগ্রস্ত শ্রীলংকার ঘুরে দাঁড়ানো রূপকথার গল্পের মতো শোনালেও অর্থনীতির প্রচলিত নীতির কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমেই এই অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা৷ শ্রীলঙ্কার এই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখে চলেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ৬৩ বছর বয়সী পি নন্দলাল বীরাসিংহে৷ অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিয়ে তিনি কয়েক বছর আগেই শ্রীলঙ্কাকে সতর্ক করেছিলেন৷ তখন তিনি শ্রীলঙ্কার উপগভর্নর ছিলেন৷ কিন্তু তখন তার সতর্কবার্তাগুলো দেশটির সরকার আমলে নেননি৷
এমন অবস্থায় আগাম অবসর নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান নন্দলাল৷ তবে গত বছর শ্রীলঙ্কা চরম অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে পড়ার পর দেশটিকে বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের জন্য আবারও তাকে ফিরিয়ে আনা হয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ বলা যায়, নন্দলাল বীরাসিংহের নেতুত্বেই শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে কাটিয়ে উঠছে; ৭০ শতাংশে উঠে যাওয়া মূল্যস্ফীতি ১ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে৷ নন্দলাল বীরাসিংহের প্রশংসা করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এখন সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে৷
এখানে একটি বিষয় ছোট করে হলেও বলা প্রয়োজন৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন৷ তিনি চেষ্টা করছেন…৷ কিন্তু এই যে এতো সংকট-উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তারপরও বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কোনো উদ্যোগ কিন্তু চোখে পড়ে না৷ এই কঠিন সময়ে যার নেতৃত্ব খুবই প্রয়োজন, তিনি কেনো অনুপস্থিত-এই বিষয়টি সংবাদিক, অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সরকারের নীতিনির্ধারকদেরও অবাক করছে৷
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন৷ গত ২৭ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের অর্থনীতি, আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের অনেক কিছুই রক্ষা করতে হলে এই নির্বাচনটাকে ফ্রি, ফেয়ার ও ক্রেডিবল করতে হবে৷’’ একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘ভোটের পর অর্থনৈতিক চাপ আসতে পারে৷’’
তাহলে কি বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে? নাকি অতীতের মতো চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরবে-সেটাই এখন দেখার বিষয়৷ তবে সামনে দিনগুলো যে মসৃণ হবে না সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়৷