1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুখ্যমন্ত্রীর ধরনাকে ঘিরে বিতর্ক

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৩ জানুয়ারি ২০১৪

রাজধানী দিল্লিতে মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁর দু'দিনের ধরনা তুলে নিলেও, সে সময় দিল্লিবাসীদের যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, জনজীবন যেভাবে অচল হয়ে পড়ে, তাতে ঐ ধরনার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে৷

https://p.dw.com/p/1AvTk
Arvind Kejriwal Indien Ministerpräsident Vereidigung
ছবি: RAVEENDRAN/AFP/Getty Images

মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের ধরনায় জনজীবন একেবারে নাকাল৷ দিল্লির স্পর্শকাতর রাজপথ সংলগ্ন সংসদ ভবন এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর চত্বরে, বিশেষ করে আর কয়েকদিন পরে যেখানে হবে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের শোভাযাত্রা, সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরণের ধরনা কতটা সমর্থনযোগ্য – তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক৷ বিশৃঙ্খলা, লাঠিচার্জ, ব্যারিকেড, জনতা-পুলিশে খণ্ডযুদ্ধ – কী নয়? আহত হন ৩০ জনের মতো৷ তার মধ্যে মিডিয়ার লোকজনও আছেন৷ এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ মামলা দায়ের করেছে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে৷ আর দিল্লি পুলিশকে ঐ ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলেছেন দিল্লির এক আদালত৷

অ্যানার্কিস্ট বা নৈরাজ্যবাদীর তকমা পরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের এই ধরনার ঔচিত্য ও অনৌচিত্য নিয়ে জনসমাজে বিতর্ক তুঙ্গে৷ বিজেপির শীর্ষ নেতা অরুণ জেটলির মন্তব্য, আম আদমি পার্টির চমকদারি জনমোহিনী রাজনীতি এখন নৈরাজ্যবাদের রাজনীতি এসে ঠেকেছে৷ দিল্লি সরকারের বিরোধী এক দলনেতা মনে করেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়েও কেজরিওয়াল যেভাবে দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকা দু'দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখলেন তা নজীরবিহীন৷ এটাকে গণতন্ত্র বলে না৷ রাস্তার রাজনীতি নৈরাজ্যবাদ ছাড়া আর কী? সহযোগী দল হয়েও সমালোচনা করতে ছাড়েনি কংগ্রেসও৷ তবে সমর্থন তুলে নেবার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি৷ দিলে আখেরে লোকসান হবে কংগ্রেসেরই৷ সংসদীয় নির্বাচনের মুখে দিল্লি সরকারকে ফেলে দিলে তার দায় বর্তাবে কংগ্রেসের ওপর৷

নৈরাজ্যবাদীর তকমাটা অবশ্য প্রথমে কেজরিওয়ালকে দিয়েছিল কংগ্রেস৷ তৃণমূল কংগ্রেস মনে করে, কেজরিওয়াল নিজেকে অ্যানার্কিস্ট হিসেবে দেখাতে চাইলে তাঁর ইস্তফা দেয়া উচিত৷ আম আদমি পার্টির সমর্থকরা পাল্টা আঙুল তুলে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে কি রাস্তার রাজনীতি করেননি? আম জনতার একাংশের মতে, শৃঙ্খলা রক্ষা করাই যদি পুলিশের কাজ হয়, তাহলে পুলিশের নাকের ডগায় ড্রাগ আর যৌন ব্যবসা চলে কী করে? এর বিরুদ্ধে সরকার আওয়াজ তুললে সেটা পুলিশের কাছে বিশৃঙ্খলা৷ যেহেতু পুলিশ কেন্দ্রের অধীন৷ যখন সাধারণ মানুষ দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন এক শ্রেণির মানুষ তাঁর সমালোচনায় মুখর৷

প্রশ্ন হচ্ছে দিল্লি সরকারের প্রধান হয়ে কেন তাঁকে বিক্ষোভ দেখাতে রাজপথে ধরনায় বসতে হলো? কয়েকদিন আগে দিল্লি সরকারের আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতী দিল্লির এক পাড়ায় আফ্রিকার কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধে ড্রাগ ও দেহ ব্যবসার অভিযোগ তুলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন৷ কিন্তু পুলিশ কান দেয়নি৷ বলেছে বিনা ওয়ারেন্টে বাড়ি তল্লাসি করা যায় না৷ তখন মন্ত্রী এবং তাঁর দলবল মধ্যরাতে জোর করে বাড়িতে ঢুকে উগান্ডার এক মহিলাকে হেনস্থা করেছেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন ঐ মহিলা৷ এর প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে আফ্রিকান দেশগুলির রাষ্ট্রদূতদের আশ্বস্ত করা হয় যে, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা৷ সরকার ভবিষ্যতে এবিষয়ে কড়া নজর রাখবেন৷ ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রদূত মনে করেন, বিনা ওয়ারেন্টে দেশের বা বিদেশের কোনো নাগরিককে গ্রেপ্তার করা যায় না৷ দিল্লির আম আদমি পার্টি সরকারের আইনমন্ত্রী যেটা করেছেন, তা গণতন্ত্রে চলতে পারে না৷ দিল্লির আইনমন্ত্রীর ইস্তফার দাবি আসছে বিভিন্ন নারী সংগঠন এবং মহিলা কমিশনের কাছ থেকে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য