দিল্লিতে নাবালিকাকে চরম অত্যাচার করে ধর্ষণ
৭ আগস্ট ২০২০পশ্চিম দিল্লির পীর গড়ি। সেখানেই একটি বাড়িতে একলা ছিল বছর বারোর ওই নাবালিকা। সেখানে চুরির মতলবে ঢোকে এক অপরাধী। মেয়েটি দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। তারপরই মেয়েটিকে ধরে ওই ব্যক্তি ধর্ষণ করে। একটি কাঁচি দিয়ে বারবার মেয়েটির দেহে আঘাত করে। মেয়েটি সমানে বাধা দিতে থাকে। অজ্ঞান হওয়ার আগে পর্যন্ত সে সমানে বাধা দিয়ে গেছে।
মেয়েটির মাথা ফেটেছে। কোমর ভেঙেছে। গোপনাঙ্গ ও অন্ত্রে গুরুতর আঘাত রয়েছে। এইমসে সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষককে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় ফুটেজ দেখার পর তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। তার শরীরে আঁচড়ের দাগ রয়েছে। গ্রেফতার করা ব্যক্তি আগেও বিভিন্ন অপরাধে জেল খেটেছিল। সম্প্রতি সে জামিন পেয়ে বাইরে বের হয়। তারপর কয়েক রাত পার্কে শুয়ে কাটিয়েছে। সে পাকা নেশাড়ু। যখন ওই বাড়িতে ঢুকেছিল, তখনও সে নেশায় চুর ছিল।
পুলিশের দাবি, মোট ১২৮টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। ৩৬টি মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়েছে। তারপর তারা ছয় জনকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করেছিল। যে বাড়িতে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে জনা বারো ভাড়াটে থাকেন। সকলেই কারখানার কর্মী। তাই দুপুরে বাড়িটিতে খুব কম লোক থাকেন। সেই সুযোগই কাজে লাগাতে চেয়েছিল দুর্বৃত্ত। পুলিশ এখনো গ্রেফতার করা ব্যক্তির নাম জানায়নি।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনা আবার ২০১২ সালে নির্ভয়াকাণ্ডের কথা মনে পড়িয়ে দিচ্ছে। নির্ভয়াকে ফাঁকা চলন্ত বাসে ছয়জন মিলে গণঘর্ষণ করেছিল। তারপর তাঁর গোপনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে পেঁচিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে দিয়েছিল ধর্ষকরা। কিছুদিন আগেই চার ধর্ষকের ফাঁসি হয়েছে। তারপরেও এই ধরনের ঘটনা ঘটল। নির্ভয়ার মতো এই নাবালিকাও শেষ সময় পর্যন্ত ধর্ষকদের বাধা দিয়েছে এবং মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। তাই তাঁকে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় নির্ভয়া।
কিন্তু এই ঘটনা দিল্লি পুলিশকে নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিল। দিল্লিতে এমনিতে কোনো পার্কে রাতে শোয়া বা থাকা নিষেধ। তা হলে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি কী করে কয়েক রাত পার্কে কাটাল? দিনেদুপুরে কী করে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে পারে? ঘটনার পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়েছে, কিন্তু এমনি সময়েও সিসিটিভি ফুটেজ ২৪ ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা করার কথা। সেটা কি করে দিল্লি পুলিশ?
নির্ভয়ার ঘটনার পর আইন সংশোধন করে ধর্ষণের চূড়ান্ত শাস্তি ফাঁসি করা হয়েছে। তখন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংসদে দাবি করেছিলেন, এই আইন ধর্ষণের প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করবে। ভয়ে আর ধর্ষণ হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তারপরেও ধর্ষণ ও ভয়াবহ অত্যাচার করে ধর্ষণ হয়ে চলেছে। দ্বিতীয় নির্ভয়ার ঘটনা তাই একইসঙ্গে অত্যন্ত দুঃখের এবং চিন্তার।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনবিটি)