দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা আক্রান্ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০এক দিকে ইটালি, অন্য দিকে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন থেকে করোনা আতঙ্ক এখন ক্রমশ ছড়াচ্ছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে। দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতি ভয়াবহ চেহারা নিচ্ছে। ইটালিতে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সংক্রমণও ছড়াচ্ছে দ্রুত। তারই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় এই প্রথম করোনায় আক্রান্ত হলেন এক মার্কিন সেনা।
ইটালির প্রশাসন জানিয়েছে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সেখানে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। যদিও অসমর্থিত সূত্র জানাচ্ছে, মৃতের সংখ্যা ১৯ ছাড়িয়ে গিয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের রিপোর্ট সেই সংখ্যাই সমর্থন করছে। একই সঙ্গে ইটালির স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে উত্তর থেকে ক্রমশ মধ্য ইটালির দিকে ভাইরাস ছড়াতে শুরু করেছে। আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যার ফলে ইটালি ছেড়ে পর্যটকরা অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। যদিও পালাবার পথ নেই। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সুইজারল্যান্ড এবং স্পেন থেকেও করোনা আক্রান্তের খবর মিলেছে। অস্ট্রিয়া আগেই ইটালির ট্রেন তাদের দেশে ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছিল। ইটালির প্রতিবেশি অন্য দেশগুলিও সে পথে হাঁটতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এরই মধ্যে ইটালির লোম্বার্ডি এবং ভেনেটো শহরকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। ওই অঞ্চলে বাইরে থেকে গাড়ি ঢোকাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইটালির চেয়েও খারাপ অবস্থা দক্ষিণ কোরিয়ার। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের গোড়ার দিকে চীনের যে পরিস্থিতি ছিল, দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থা এখন অনেকটাই সেরকম। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। সংক্রমণ ছড়িয়েছে আরও ১৬৯ জনের শরীরে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২০০ লোক ভাইরাসে আক্রান্ত বলে সরকারি সূত্রের দাবি। তার মধ্যে একজন মার্কিন সেনাও রয়েছে। উল্লেখ্য,কোরিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা রয়েছে। যদিও কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দক্ষিণ কোরিয়ার উপরে কড়া নজর রেখেছে। সূত্রের দাবি, স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, যে ভাবে চীন করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অপেক্ষাকৃত গরিব দেশের পক্ষে তা সম্ভব হবে না।
এ দিকে চীনে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। বুধবার আরও ৪০৬ জনের শরীরে ভাইরাস মিলেছে। মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। যার জেরে চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮ হাজার ৬৪। আর মোট মৃতের সংখ্যা দু'হাজার ৭১৫। চীনের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, বাকি দেশে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই আয়ত্ত্বে আনা গিয়েছে। শুধুমাত্র উহানেই এখনও সংক্রমণ ঘটছে।
কুয়েতেও ১১ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। যার জেরে সমস্ত বিদেশি জাহাজের দেশে ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে কুয়েত সরকার। একমাত্র তেলবাহী জাহাজই ঢুকতে পারবে। এয়ার ক্যানাডাও আগেই চীনের সমস্ত শহরে নিজেদের বিমান চালানো বন্ধ করেছিল। মঙ্গলবার তার সময়সীমা আরও বাড়ানো হয়েছে। হংকংয়েও বিমান চালানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সংস্থাটি।
এসজি/জিএইচ (এপি, রয়টার্স, এএফপি)