সাগর-রুনি
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের সাবেক সম্পাদক সাগর সারওয়ার৷ তিন বছর কাজ করার পর গতবছর তিনি দেশে ফিরে যান৷ এরপর কাজ শুরু করেন মাছরাঙা টেলিভিশনে, বার্তা সম্পাদক হিসেবে৷ ঐ চ্যানেলের ‘হেড অব নিউজ' পদের দায়িত্বে আছেন শাহ আলমগীর৷ ফলে খুব কাছ থেকে তিনি দেখেছেন সাগরকে৷
আলমগীর বলেন, সাগরকে বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার আগে তাঁরা কয়েকবার চিন্তা করেছিলেন৷ কেননা টেলিভিশন মাধ্যমে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল না তাঁর৷ কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই সাগর তাঁর যোগ্যতা প্রমাণ করে৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রিন্ট মিডিয়ায় কাজের সুনাম আর ডয়চে ভেলেতে অডিও নিয়ে কাজ করায় তাঁকে আমরা নিয়োগ দিই৷ এরপর নিয়ম ভেঙে মাত্র দুইমাসের মধ্যেই আমরা সাগরের নিয়োগ পাকাপাকি করি, যেখানে নিয়ম হচ্ছে ছয় মাস৷ যে শিফটে সাগর কাজ করতো আমরা সেটা নিয়ে নিশ্চিত থাকতাম৷ কেননা সেখানে কোনো সমস্যা হবে না এটা আমরা ধরে নিতাম৷''
মানুষ হিসেবেও সাগর খুব ভাল ছিলেন বলে জানান আলমগীর৷ সবার সঙ্গে মিশতে পারার অদ্ভূত একটা ক্ষমতা ছিল সাগরের৷ তিনি বলেন, ‘‘বার্তা সম্পাদকের কাজ পালন করতে সাংবাদিক, ক্যামেরাম্যান সহ ভিডিও সম্পাদকদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক থাকা জরুরি৷ সাগরের সেটা ছিল৷ খুব অল্প সময়ের মধ্যে সে সবার প্রিয় হয়ে উঠেছিল৷ ফলে কাজ করতে সুবিধা হয়েছে৷''
১৯৯৭ সালে ‘সংবাদ' পত্রিকার মাধ্যমে সাগরের পেশাগত জীবন শুরু হয়৷ নিহত স্ত্রী মেহেরুন রুনিও সেখানে কাজ করতেন৷ সাগর আর রুনির কিছুদিন আগে সেখানে কাজ শুরু করেন ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপন৷ তিনি বলছেন, পেশাগত জীবনের নানা দিক নিয়ে সাগর তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতেন৷ স্বপন বলেন, ‘‘আমি জানি না, সে কী অপরাধ করতে পারে, কার এমন ক্ষতি করতে পারে যে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে এভাবে জীবন দিতে হবে৷ এটি সৎ এবং সাহসী সাংবাদিকতার প্রতি এক ধরনের আঘাত৷ এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা৷''
সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকতার কারণে এ হামলা হতে পারে কীনা, এ প্রশ্নের জবাবে স্বপন বলেন, ‘‘এটা আমার মনে হয় না৷ সাগরও আমার সঙ্গে এ ধরণের কোনো কিছু নিয়ে আলাপ করেনি৷''
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী