1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

থ্রিডি প্রযুক্তির সাহায্যে ঐতিহাসিক সম্পদ রক্ষার উদ্যোগ

মার্টিন রিবে/এসবি১৮ মে ২০১৫

বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তি বা মোসুল শহরের মিউজিয়ামের সম্পদ – ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের তাণ্ডবে মানবজাতির অমূল্য সম্পদ চিরকালের জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে৷ জার্মান বিজ্ঞানীরা এবার এমন সব সম্পদ রক্ষা করতে এক অভিনব পদ্ধতি তৈরি করেছেন৷

https://p.dw.com/p/1FRAR
Irak Zerstörung Museum in Mossul
(ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/dpa/Quelle: Islamischer Staat/Internet

সাংস্কৃতিক সম্পদ চিরস্থায়ী হয় না৷ শুধু ভূমিকম্প বা জলবায়ু পরিবর্তন নয়, যুদ্ধবিগ্রহ বা মৌলবাদীদের তাণ্ডবের কারণেও হারিয়ে যাচ্ছে এমন অনেক অমূল্য সম্পদ৷ এমনকি ইউনেস্কো স্বীকৃত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও রেহাই পাচ্ছে না৷

জার্মানির ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউট প্রায় ৬ মিটার লম্বা এক থ্রিডি স্ক্যানার তৈরি করেছে, যা এমন বিপন্ন অমূল্য সাংস্কৃতিক সম্পদ হুবহু নকল করতে পারে৷ ফলে সারা বিশ্বে সেগুলি নিয়ে গবেষণা করা সম্ভব হবে৷ ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউট-এর পেড্রো সান্টোস বলেন, ‘‘অতীতে – বিশেষ করে গত ১০ বছরে আমরা দেখেছি, মাইক্রোসফট বা গুগল-এর মতো কোম্পানি কীভাবে বড় আকারে দ্বিমাত্রিক সাংস্কৃতিক সম্পদ ডিজিটালাইজ করতে শুরু করেছে৷ বইপত্র, তৈলচিত্র, ছবি – এই সব৷ কিন্তু ত্রিমাত্রিক বস্তুর ক্ষেত্রে এর জন্য অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়৷ সেই প্রক্রিয়াটাকেই আমরা স্বয়ংক্রিয় করে তুলতে চাই৷''

Irak Zerstörung Museum in Mossul
বড় মূর্তির জন্য বিজ্ঞানীরা একটি সমাধানসূত্র বার করেছেনছবি: picture-alliance/dpa/Quelle: Islamischer Staat/Internet

একটি কনভেয়ার বেল্টের উপর বড় বা আবক্ষ মূর্তি এবং যন্ত্রের বিভিন্ন অংশ সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচল করে৷ বিভিন্ন কোণ থেকে স্ক্যানিং করা হয়৷ ৯টি বিশেষ ক্যামেরা ও ৯টি এলইডি ফ্ল্যাশ সব অ্যাঙ্গেল থেকে বস্তুটির ছবি তোলে৷ পেড্রো সান্টোস বলেন, ‘‘বস্তুটির উপর আলোকপাত এবং অ্যাঙ্গেল-এর সব রকম কম্বিনেশন আমাদের চাই, যাতে তার হুবহু প্রতিমূর্তি গড়ে তোলা যায়৷ অর্থাৎ পরে আমরা যখন বস্তুর ভারচুয়াল মডেলটির উপর নানা রকম আলো ফেলবো, তখন মূল বস্তুটির সঙ্গে তার কোনো তফাত চোখে পড়বে না৷''

দ্বিতীয় ধাপে রোবটের একটি হাত সেই সব অংশের ছবি তুলবে, যা আগের পর্যায়ে তোলা যায়নি৷ তারপর প্রায় ৭,০০০ ছবির সমন্বয়ে চূড়ান্ত ও হুবহু থ্রিডি প্রতিমূর্তি গড়ে তোলার পালা৷

মাত্র ১০ মিনিটেই ত্রিমাত্রিক মডেল প্রস্তুত৷ আসল ও নকলের মধ্যে তফাত করাই কঠিন৷ নকলটি শুধু আসল বস্তুর মতো দেখতেই নয়, এমনকি তার উপর আলো ফেললেও তফাত বোঝা যায় না৷ অর্থাৎ একেবারে উন্নত মানের ফটো, যা ত্রিমাত্রিক৷ পেড্রো সান্টোস বলেন, ‘‘প্রতিফলনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এক্ষেত্রে কোনো বস্তুর উপাদানের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়৷ হাতে কোনো ধাতু ধরে ডান দিক থেকে তার উপর আলো ফেললেই ব্যাপারটা বুঝবেন৷ সারফেসের একটি বিন্দুর দিকে তাকালে সেটা লাল দেখাবে৷ আলো নাড়াচাড়া করলে সেটা নীল হয়ে যেতে পারে৷ তাই শুধু ফটো থাকলে চলবে না, বস্তুটির উপর আলোকপাত ও অ্যাঙ্গলের সব কম্বিনেশন চাই৷''

বড় মূর্তির জন্য বিজ্ঞানীরা একটি সমাধানসূত্র বার করেছেন৷ এক স্বয়ংক্রিয় স্ক্যান রোবট, যে নিজেই মূর্তির চারিদিকে ঘুরে ছবি তুলতে থাকবে৷ সেই সব ছবি থেকে থ্রিডি মডেল তৈরি হবে৷

সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় স্ক্যানিং সিস্টেম ভবিষ্যতে যে কোনো মিউজিয়ামের লক্ষ লক্ষ মূল্যবান সম্পদের অবিকল থ্রিডি প্রতিমূর্তি স্ক্যান করবে৷ মিউজিয়ামের মধ্যেই অত্যন্ত দ্রুত ও বর্তমানের তুলনায় ৩০ গুণ কম দামে সেটা সম্ভব হবে৷ পেড্রো সান্টোস বলেন, ‘‘সাধারণত কোনো মিউজিয়ামের এমন স্ক্যানিং সিস্টেম কেনার সামর্থ্য না থাকারই কথা৷ তাই কোনো কোম্পানি এমন পরিষেবা নিয়ে হাজির হবে, বিভিন্ন জায়গায় তা গড়ে তুলবে৷ আমাদের এই সিস্টেমের বিশেষত্ব হলো, ঘণ্টা-তিনেকের মধ্যেই এটি গড়ে তোলা এবং খুলে নেওয়া যায়৷ বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে তা পাঠানো যায়৷''

চূড়ান্ত থ্রিডি মডেল এখন অন্য কোনো কম্পিউটার ফাইলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যায় – যেমন কোনো মূর্তির বিবরণ বা শিল্পীর পরিচিতির সঙ্গে৷ ফলে মিউজিয়াম ও গবেষকদের জন্য বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার নতুন পথ খুলে যাচ্ছে৷ মডেলগুলি একবার ‘প্রিন্ট' হয়ে গেলে মানবজাতির মূল্যবান সম্পদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার ভয় আর থাকবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান