থাকবেন খালেদা, প্রতিহতের ঘোষণা
২৯ ডিসেম্বর ২০১৩শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, সরকার অনুমতি না দিলেও তাঁরা যে-কোনো মূল্যে রবিবারের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি সফল করবেন৷ কর্মসূচিতে নয়া পল্টনে উপস্থিত থাকবেন দলের চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া৷ বিএনপির ঐ নেতা জানান, রবিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে নয়া পল্টনে কর্মসূচি শুরু হবে৷ এরপর যে-কোনো সময় সেখানে হাজির হবেন বেগম খালেদা জিয়া৷
হাফিজ উদ্দিন বলেন সরকার নানাভাবে তাঁদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে৷ গণগ্রেফতার এবং সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে৷ সরকার এখনো এই কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি৷ কিন্তু এই কর্মসূচি নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে তাতে কর্মসূচি সফল হবেই বলে তিনি আশা করেন৷
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ঐ সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ উদ্দিন বলেন, সরকার একদিকে তাদের কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে৷ অন্যদিকে শাসক দল আওয়ামী লীগের লোকজন নানা জায়গায় লাঠি মহড়া দিচ্ছে৷ তিনি আবারো সরকারের কাছে এই কর্মসূচি পালনে অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কর্মসূচি হবে পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ৷ তিনি দলের নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীকে আবারও খালেদা জিয়ার আহ্বান পৌঁছে দিয়ে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে৷
আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি
বিরোধী দলের কর্মসূচি প্রতিহত করতে রবিবার সকাল থেকেই ঢাকা শহরের ৮টি প্রবেশ পথে অবস্থান নেবে শাসক দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা৷ প্রতিটি প্রবেশ পথে রীতিমত পাহারা বসানো হবে, বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা৷ আর এই ৮টি প্রবেশ পথে পাহারা কার্যক্রম মনিটরিংয়ের দায়িত্বে আছেন ঢাকা মহানগরের নেতারা৷ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মূলত ৮টি প্রবেশ আগলাবেন বলে জানা গেছে৷ এছাড়া ঢাকার ১০০টি ওয়ার্ড এবং ১৮টি ইউনিয়নে অবস্থান নেবেন তাঁরা৷ মাথায় জাতীয় পতাকা আর হাতে লাঠি নিয়ে চলবে তাঁদের এই প্রতিরোধ৷
আওয়ামী লীগের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেছেন, বিরোধী দল সারা দেশ থেকে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের নিয়ে এসে ঢাকায় নাশকতা করতে চাইছে৷ কিন্তু তাদের সেই অপচেষ্টা রুখে দেয়া হবে৷ যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় বিএনপির এই কর্মসূচি দেশবাসী সফল হতে দেবে না৷
পুলিশের বক্তব্য
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, পুলিশ বিরোধী দলকে নয়াপল্টনে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি৷ তারপরও যদি তাঁরা কোনো কর্মসূচি পালন বা সমাবেশের চেষ্টা করে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ তিনি বলেন রাজধানীবাসীর জানমালের নিরাপত্তায় তাঁরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছেন৷ জানা গেছে রাজধানীতে প্রায় ২৬,০০০ পুলিশ সদস্য ছাড়াও বিপুল পরিমাণ র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে৷
মনিরুল ইসলাম জানান, তাঁরা মনে করেন ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বিরোধী নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষ এবং নাশকতা করতে পারে৷ বিশেষ করে জামায়াত-শিবির একাজ করতে পারে বলে তাঁরা ধারণা করছেন৷ তবে এব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে বলে তাঁর দাবি৷
খালেদার বাসার সামনে পুলিশ
খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ও অফিস এবং নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ রবিবার সকাল নাগাদ পুলিশের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে৷ পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, খালেদা জিয়াকে নয়া পল্টনে কোনো সমাবেশ বা জমায়েতে একাত্ম হওয়ার সুযোগ দেয়া হবে না৷
ঢাকা বিচ্ছিন্ন
শুক্রবার রাত থেকেই সারা দেশের সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে৷ ঢাকার ভিতরেও কোনো বাস-মিনিবাস চলছে না৷ শনিবার সন্ধ্যার পরই ঢাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে৷ ফাঁকা রাস্তায় টহল দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা৷