1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ত্যাগ ও সম্প্রীতির মন্ত্রে হজ ও ঈদুল আজহা পালিত

৭ নভেম্বর ২০১১

মুসলমি বিশ্বে পালিত হলো বড় দু’টি ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা এবং হজ৷ রবিবার ছিল হজের শেষ দিন আর আরব দেশগুলোতে ঈদুল আজহার প্রথম দিন৷ তবে ইরান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশসহ কিছু দেশে ঈদুল আজহা পালিত হচ্ছে সোমবার৷

https://p.dw.com/p/1361Z
Muslim pilgrims cast stones at a pillar, symbolizing the stoning of Satan, in a ritual called "Jamarat," the last rite of the annual hajj, in Mina near the Saudi holy city of Mecca, Saudi Arabia in Mecca, Saudi Arabia, Thursday, Nov. 18, 2010. The annual Islamic pilgrimage draws 2.5 million visitors each year, making it the largest yearly gathering of people in the world. (AP Photo/Hassan Ammar)
হজপালনকারীদের শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর নিক্ষেপের দৃশ্যছবি: AP

আরব বিশ্বে চলমান আন্দোলন ও সংঘাতের মধ্যে ঈদুল আজহা ও হজ বিশেষভাবে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছিল বিশ্বের মুসলমানদের মাঝে৷ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে একদিকে নানা মত ও গোষ্ঠীর মুসলমানরা হাজির হয়েছিলেন মক্কা নগরীতে৷ আর অন্যদিকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজে এক সারিতে হাজির হয়ে বিশ্ববাসীর কল্যাণ ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করলেন কোটি মুসলমান৷ প্রথমবারের মতো এ বছর হজের সকল রীতিনীতি পালনের ভিডিও চিত্র ইউটিউবে সরবরাহ করা হয়েছে সৌদি সরকারের সহযোগিতায়৷ এছাড়া সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয় এবার হজ পালনকারীদের মোবাইলে প্রতিদিন প্রায় ৩২ লাখ এসএমএস পাঠানোর ব্যবস্থা করে৷

সৌদি সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে, এ বছর সারাবিশ্ব থেকে হজ পালন করতে সৌদি আরবে হাজির হয়েছেন প্রায় ২৯ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান৷ এর মধ্যে প্রায় ১৮ লাখ মুসলমান গেছেন সৌদি আরবের বাইরে থেকে৷ রবিবার সৌদি আরবের মিনা প্রান্তরে উপস্থিত হয়ে হজ পালনকারীরা প্রতীকী শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছুঁড়লেন৷ এসময় সবাই মুখে ধ্বনি তোলেন ‘আল্লাহ মহান'৷ এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজে আসা ২৯ বছর বয়সি মোখতার খান বলেন, ‘‘এই রীতিটি আমাকে মানসিক শক্তি এনে দেয়৷ আমার কাছে মনে হচ্ছে এখন যেন আমি শয়তানকে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়েছি৷'' মিশর থেকে আসা ২৫ বছর বয়সি মোহাম্মেদ হোসাইনিনের অভিব্যক্তি, ‘‘সবচেয়ে বড় শত্রু শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার পর যেন একটা তৃপ্তি অনুভব করি৷''

Tens of thousands of Muslim pilgrims pray inside the Grand Mosque, in Mecca, Saudi Arabia, Friday, Nov. 4, 2011. The annual Islamic pilgrimage draws three million visitors each year, making it the largest yearly gathering of people in the world. The Hajj will begin on November 5. (Foto:Hassan Ammar/AP/dapd)
ফাইল ছবিছবি: dapd

হজের যেসব রীতিনীতি রয়েছে সেগুলোর মধ্যে মিনা প্রান্তরে পাথর নিক্ষেপ করার কাজটিই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ৷ কারণ পাথর ছুঁড়তে গিয়ে অতিরিক্ত ভিড়ে পাদপিষ্ট হয়ে ১৯৯০ সালে মারা যান ১,৪২৬ জন, ২০০৪ সালে ২৫১ জন এবং ২০০৬ সালে ৩৬৪ জন৷ তাই সৌদি সরকার বিশ্বের বৃহত্তম এই সমাবেশে উপস্থিত সবার নিরাপত্তার জন্য সম্প্রতি বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ মিনা এবং আরাফাতের ময়দানে গড়ে তোলা হয়েছে অধিক সংখ্যক থাকার জায়গা৷ বৃদ্ধি করা হয়েছে যানবাহনের সংখ্যা৷ গড়ে তোলা হয়েছে মাশায়ের রেলওয়ে বা মক্কা মেট্রো৷ এ বছরই প্রথম চালু হয়েছে এই মেট্রো সুবিধা৷ এতে প্রতি ঘণ্টায় ৭২ হাজার মানুষ পরিবহন করা সম্ভব৷ মিনা, মুজদালিফা এবং আরাফাতের মধ্যে সংযোগ তৈরি করেছে এই মেট্রো রেল সেবা৷

হজের শেষ দিনেই পশু কুরবানি করতে হয় অর্থাৎ এই দিনই শুরু হয় ঈদুল আজহার উৎসব৷ স্রষ্টার নির্দেশে পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করার যে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন নবি ইব্রাহিম এবং পরে পুত্রের বদলে একটি পশু কুরবানি করেছিলেন সেই ধারাবাহিকতায় মুসলমানরা ঈদুল আজহার দিনে পশু কুরবানি করে থাকেন৷ কুরবানির গোস্ত আবার বিতরণ করতে হয় আত্মীয়-স্বজন এবং গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে৷ ফলে একদিকে আত্মত্যাগ, উৎসর্গ এবং অন্যদিকে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আসে এই ঈদ উৎসব৷ বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বাম্বাং ইয়োধোয়োনো এ বছর ১.২ টন গোস্ত হয় এমন পরিমাণ পশু কুরবানি দিচ্ছেন৷ এজন্য তাঁকে ৬০ টি গরু এবং ২৭ টি ছাগল কুরবানি করতে হচ্ছে৷ আর এসব গোস্ত ১০ হাজার মানুষের মাঝে বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম