তুরস্কে জার্মান সাংবাদিক গ্রেপ্তার
১২ মে ২০১৭জার্মানির সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার দৈনিক ‘নয়েস ডয়েচলান্ড'-এ প্রথম টোলুর আটকের খবর প্রকাশিত হয়৷ এরপর জার্মানির সরকারি প্রচারমাধ্যম এআরডি এবং তুরস্কের সংবাদপত্র ‘ডিকেন'-ও এই খবর প্রচারিত হয়েছে৷
৩৩ বছর বয়সি টোলুকে ৩০ এপ্রিল রাতে তাঁর ইস্তাম্বুলের বাসা থেকে আটক করা হয়৷ এরপর ৬ মে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ৷
জার্মানির দৈনিক সংবাদপত্র ‘টাৎস' তাদের তুরস্কে থাকা সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ হিসেবে টোলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
টোলুর বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী এক সংস্থার হয়ে প্রোপাগান্ডা' চালানো ও ‘একটি সন্ত্রাসী সংস্থার সদস্য' হওয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে বলে প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে৷
টোলুর কাজ
গ্রেপ্তারের আগে টোলুর কাজ প্রধানত সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা ও কুর্দিপন্থি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে৷ যেমন বেসরকারি ইটিএইচএ নিউজ এজেন্সি ও নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক এএনএফ৷ তুর্কি সরকারের মতে, এএনএফ নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্থান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র সঙ্গে জড়িত৷ ইটিএইচএ জানিয়েছে, টোলু তাদের হয়ে অনুবাদকের কাজ করতেন৷ এছাড়া ‘ফ্রি রেডিও'-তেও টোলুর কাজ প্রচারিত হয়েছে৷ তুর্কি সরকার সম্প্রতি এটি বন্ধ করে দিয়েছে৷ উল্লেখ্য, গত বছরের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তুর্কি সরকার দেশটির গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে৷ এর আওতায় দেড়শ'র বেশি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়৷
জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা টোলু বছর দশেক আগে জার্মানির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন৷ সেজন্য তাঁকে তুর্কি নাগরিকত্ব বাতিল করতে হয়েছে৷ বছর দুয়েক থেকে তিনি তাঁর স্বামী ও দুই বছরের সন্তান নিয়ে ইস্তাম্বুলে বাস করছিলেন৷ টোলুর স্বামী সুয়াত চরলুকেও একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ ফলে তাঁদের সন্তান এখন আত্মীয়স্বজনের কাছে আছেন৷ টোলুর স্বামী তুর্কি নাগরিক৷
প্রমাণ হিসেবে শেষকৃত্য অংশগ্রহণের ঘটনা?
টোলুর একজন আইনজীবী ‘টাৎস'-কে জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে পুলিশের হাতে নিহত হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষিত এমএলকেপি-র দুই সন্ত্রাসীর শেষকৃত্যে টোলুর অংশ নেয়ার ঘটনা তাঁর বিরুদ্ধে মামলার অন্যতম প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হতে পারে৷
এর আগে জার্মান-তুর্কি সাংবাদিক ডেনিস ইউচেলকে গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার করে তুর্কি কর্তৃপক্ষ৷ তিনি এখনও গ্রেপ্তার আছেন৷
তুরস্কের ইউরোপীয় বিষয়ক মন্ত্রী ওমর চেলিক বলেছেন, ‘‘তুরস্ক বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ দেশ, যদি তাঁরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত না হন৷''