তিউনিসিয়ার নির্বাচনে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া
২৩ অক্টোবর ২০১১‘‘লাইনে দাঁড়ান, এখান থেকেই গণতন্ত্র শুরু''
বহু বছরের স্বৈরশাসনের অবসানের পর এই প্রথমবারের মত ভোট দিলো তিউনিসিয়ার জনগণ৷ সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই ভোট কেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে ভোটারদের দীর্ঘ সারি৷ তাদের সকলের চোখে মুখে ছিল আনন্দের ঝলকানি৷ সংবাদ মাধ্যমগুলোতে তাদের যেসব বক্তব্য এসেছে তাতে বোঝা গেছে তিউনিসিয়ার মানুষ এই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় অগ্রপথিক হতে চায়৷ একটি উদাহরণ দিলে বোঝা যাবে৷ ইন্নাহদা দলের প্রধান রাশিদ গানুশি আজ ভোট দিতে যান৷ এই সময় তিনি সোজা বুথে ঢুকতে গেলে বাধা দেয় ভোটাররা৷ ‘‘লাইনে দাঁড়ান, এখান থেকেই গণতন্ত্র শুরু'' ভোটারদের মুখে এই কথা শুনে গানুশি শেষ পর্যন্ত লাইনের শেষ মাথায় গিয়ে দাঁড়ান এবং বাকিদের মত অপেক্ষা শেষে ভোট দেন৷ অর্থাৎ রক্তের বিনিময়ে তিউনিসিয়ার মানুষ যে গণতন্ত্র অর্জন করেছে সেটি তারা ধরে রাখতে চায় বলেই মনে হচ্ছে৷
প্রার্থীদের অর্ধেক নারী
এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে শতাধিক দল এবং ১১ হাজারেরও বেশি প্রার্থী৷ এদের অর্ধেকই আবার নারী প্রার্থী, যেটি অন্য যে কোন মুসলিম প্রধান দেশের জন্য একটি উদাহরণ বলে মনে করা হচ্ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ পশ্চিমা দেশগুলো এই নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক দলের প্রধান মাইকেল গেলহার বলেছেন এখন পর্যন্ত সবকিছুই ঠিক রয়েছে৷ তবে নির্বাচনে ভোটারদের সংখ্যা নিয়ে একটি সমস্যা হতে পারে৷ কারণ তিউনিসিয়ায় ভোটার হওয়ার মত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ৷ কিন্তু ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেছে ৩৮ লাখ৷ অনভিজ্ঞতার কারণে হয়তো এই নিয়ে কিছু সমস্যা হতে পারে৷
‘‘ফলাফল যাই হোক মেনে নেব''
এই নির্বাচনে তো ভোটাররা ২১৭ আসন বিশিষ্ট সাংবিধানিক পরিষদ নির্বাচিত করবে৷ এরা একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচন করবে৷ বার্তা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে ইসলামপন্থী দল ইন্নাহদা জয়ী হতে চলেছে যারা নিজেদের তুরস্কের একেপি দলের মত দাবি করে৷ তবে তাদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম এবং তাদের জোটগঠনের দিকে এগুতে হতে পারে৷ তবে ইন্নাহদা দলের প্রধান রাশিদ গানুশি এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, নির্বাচনে তাঁর দল কিংবা অন্য যে কেউ জিতুক না কেন, তারা সেটাকে মেনে নেবেন৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই