তাবেলা হত্যা রহস্যে বহু প্রশ্নের উত্তর নেই
২৬ অক্টোবর ২০১৫যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা হলো – সাখওয়াত হোসেন শরীফ, রাসেল চৌধুরী ওরফে চাক্কি রাসেল, মিনহাজুল আবেদীন রাসেল ওরফে ভাগ্নে রাসেল ও তামজীর আহমেদ রুবেল ওরফে শুটার রুবেল৷ এদের মধ্যে চাক্কি রাসেল, ভাগ্নে রাসেল ও রুবেল সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় বলে দাবি করছে পুলিশ৷ এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি শরীফ-এর বলে জানায় পুলিশ৷ তবে সংবাদ সম্মেলনে আটকদের কোনো কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়নি৷ এমনকি সাংবাদিকদেরও তাদের কোনো প্রশ্ন করতে দেয়া হয়নিয
পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া দাবি করেন, ‘‘সিসিটিভি-র ফুটেজ এবং গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে এই চারজনকে আটক এবং মটর সাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে৷'' তবে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে লাল মটর সাইকেল থাকলেও, উদ্ধা করা মটর বাইকটি লাল নয়, সিলভার রঙের৷
এদিকে আটকদের সোমবার সাংবাদিকদের সামনে আনা হলেও তাদের অন্তত একজনের পরিবার দাবি করেছে যে, তাকে আদতে ১০ থেকে ১১ দিন আগে আটক করা হয়৷ এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘এটা ঠিক নয়, আমরা তাদের গত রাতেই আটক করেছি৷''
পুলিশের দাবি, সিসিটিভি-র ফুটেজে যাদের দেখা গেছে আটকদের মধ্যে তাদের তিনজন আছে৷ তারা হলো, ‘‘চাক্কি রাসেল, ভাগ্নে রাসেল ও তামজীর আহমেদ রুবেল ওরফে শুটার রুবেল৷''
মামলার তদন্তকারীদের একজন গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহফুজুল ইসলাম ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘এই তিনজনের চেহারা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের সঙ্গে বিশ্লেষণ করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি৷ এছাড়া আমরা তাদের আটক করেছি মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে৷ তাই তাদের আগে আটকের কথা ঠিক নয়৷ এরা পালিয়ে থাকায় তাদের পরিবারই হয়ত এ কথা ছড়িয়েছে৷''
মোটর সাইকেলের রঙের সঙ্গে মিল না পাওয়া যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, আটক মটর সাইকেলটিই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে৷ রঙের বিষয় নিয়ে ভাবছি না৷''
ওদিকে হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি অবশ্য এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ৷ এ ব্যাপারে মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা করবো৷''
এ প্রসঙ্গে মানবাধিকার নেতা নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আটক মটর সাইকেলটি আসলেই সিসিটিভিতে দেখা মটর সাইকেল কিনা – তা নিয়ে আরো তদন্ত হওয়া প্রয়োজন৷ এছাড়া যাদের আটক করা হয়েছে, তাদেরই সিসিটিভি-র ফুটেজে দেখা গেছে কিনা – সেটা নিশ্চিত করতে কয়েকটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার ধাপ সম্পন্ন করতে হবে৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘এই মামলাটির তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ তাছাড়া সব কিছু নিশ্চিত হতে তদন্তকারীদেরও আরো সময় দিতে হবে৷''
পুলিশ কমিশনার সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ‘‘যারা ২০১৪ সালে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ব্যাপক সহিংসতা চলিয়েছে, তারাই এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে আছে৷ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর কোনো সম্পৃক্ততা নাই৷''
প্রসঙ্গত, গত ২৮শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে তাবেলা সিজারকে গুলি কওে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা৷