ইইউ ছাড়তে ব্রিটেনের উপর চাপ
২৭ জুন ২০১৬ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী মিশেল সাপ্যাঁ সোমবার বলেন, ব্রিটেনের উচিত যত দ্রুত সম্ভব ইইউ থেকে নিজেদের পৃথক করে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা৷ এর আগে রবিবার ইইউ সংসদের প্রধান মার্টিন শ্যুলজ ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক শেষ করার ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ না করার আহ্বান জানান৷ এর ফলে ‘আরও নিরাপত্তাহীন' পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও সবাইকে সতর্ক করে দেন তিনি৷ উল্লেখ্য, ব্রেক্সিটকে ঘিরে ইউরোপের যেসব দেশে ইউরোবিরোধী দলের শক্তিশালী অবস্থান আছে সেসব দেশেও ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার দাবি উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ইউরোপীয় নেতারা৷
এদিকে, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রসোয়াঁ ওলঁদ যখন সোমবার বার্লিনে বৈঠকে মিলিত হবেন তখনও তাঁদের আলোচনার অন্যতম বিষয় হবে ব্রিটেন-ইইউ সম্পর্ক ছিন্নের সময়সীমা৷ ইটালির প্রধানমন্ত্রী মাটেও রেনসি ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্কও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন৷
তবে ইইউ নেতাদের এরকম চাপ সত্ত্বেও ব্রিটেন প্রক্রিয়া শুরু করতে তাড়াহুড়ো করবে না বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন৷ তিনি বলেন, ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে ২০০৭ সালের লিসবন চুক্তির ‘ধারা ৫০' এখনই সক্রিয় (অ্যাকটিভেট) করবে না ব্রিটেন৷ ‘‘ইইউ থেকে বের হওয়ার পর আমাদের ইউরোপীয় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি যখন আমাদের কাছে স্পষ্ট হবে তখনই এই ধারা সক্রিয় করার কথা ভাবা হবে'', বলেন অসবর্ন৷ এর আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনও এখনই ধারা ৫০ সক্রিয় করার বিপক্ষে তাঁর মত দেন৷ এ জন্য তিনি তাঁর পদত্যাগের পর ব্রিটেনের শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা বলেন৷ আগামী অক্টোবরের মধ্যে নিজে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ক্যামেরন৷ উল্লেখ্য, ধারা ৫০ সক্রিয় করার দিন থেকে দুই বছরের মধ্যে ব্রিটেনকে ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে৷
এদিকে, ব্রেক্সিট-গণভোট পরবর্তী অবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গল ও বুধবার ইইউ-র শীর্ষ সম্মেলন ডাকা হয়েছে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সেখানে উপস্থিত থাকবেন৷
স্কটল্যান্ডের অবস্থান
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলাস স্টার্জন বলেছেন, তাঁর সরকার ইইউতে থাকার সব চেষ্টাই করবে৷ প্রয়োজনে ইইউ থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার আইনি প্রক্রিয়ায় বাধাও দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ এক্ষেত্রে স্কটিশ সাংসদদের তিনি অনুরোধ করবেন বলে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানান স্টার্জন৷
এর আগে ব্রেক্সিট গণভোটের ফলাফল প্রকাশের কিছুক্ষণ পর তিনি বলেছিলেন, স্কটল্যান্ডের বেশিরভাগ জনগণ ব্রিটেনের ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ এখন ব্রিটেন যদি ইইউ থেকে চলে যায় তাহলে প্রয়োজনে স্কটল্যান্ডই ব্রিটেন থেকে বের হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুনরায় গণভোট আয়োজন করতে পারে৷ এর আগে ২০১৪ সালে একই বিষয় প্রথমবার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷
জেডএইচ/ডিজি (এপি, রয়টার্স, এএফপি)