1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঢাকার আসন নির্ধারণ করবে কারা ক্ষমতায় যাবে

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৭ ডিসেম্বর ২০০৮

আর একদিন পরই বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচন৷ দেখা গেছে রাজধানীতে যারা ভালো করে তারাই গঠন করে সরকার৷ ফলে ঢাকার আসনগুলো দুই জোটের জন্যই মর্যাদা রক্ষার৷ শেষ মুহুর্তে এসে রাজধানীর আসনগুলো নিজেদের কব্জায় নিতে মরিয়া দুই জোট৷

https://p.dw.com/p/GNw3
রাজধানীর ভোটাররাই মূলত ঠিক করে কারা ক্ষমতায় যাবেছবি: Mustafiz Mamun

বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট এবারও চাচ্ছে রাজধানী ঢাকার আসনগুলো আগের নির্বাচনের মত নিজেদের দখলে রাখতে৷ আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট চুলচেরা বিশ্লেষণের পর মনোনয়ন দিয়েছে রাজধানীতে৷ এখন পর্যন্ত ভোটের হিসেবে রাজধানীতে মহাজোটই এগিয়ে৷ তবে শেষ মুহুর্তে এসে টাকার খেলা আর নির্বচনী কৌশলে কোন জোট ক'টি আসন নিজেদের দখলে নিতে পারে তা দেখার অপেক্ষায় রাজধানীর ভোটাররা৷

ঢাকা ৪

ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার শ্যামপুর, সুত্রাপুর ও যাত্রাবাড়ি থানার কিছু অংশ নিয়ে এই আসন৷ জোট-মহাজোটের দুই প্রার্থী ছাড়াও এখানে লড়ছেন আরো ৯ জন৷ তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপির আবদুল হাই এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সানজিদা খানমের৷ আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমনিতেই নারী তার ওপর যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি৷ অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী আবদুল হাই মুন্সিগঞ্জে পরিচিত হলেও এখানে নতুন৷ এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা দু'জনেই ভোট চাচ্ছেন৷ এখানে ভোটার সংখ্যা ২,০১,৬০৮ জন৷ দুই প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলেই মনে করছেন ভোটাররা৷

Bangladesch Wahlen Mützen in Dhaka
প্রচারণায় ব্যবহৃত হচ্ছে দলীয় মার্কার সিল মারা ক্যাপছবি: AP

ঢাকা ৫

বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ শেষ মুহুর্তে এসে হয়ত আটকেই যাচ্ছেন৷ মহাজোটের দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান মোল্লা আর জাতীয় পার্টির আবু হোসেন বাবলা মাঠে থাকায় এতদিন সুবিধাজনক অবস্থায় ছিলেন সালাহউদ্দিন৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার হাবিবুর রহমান মোল্লাকে মহাজোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে৷ তাকে সমর্থন জানিয়ে সরে যাওয়ার কথা আবু হোসেন বাবলার৷ কিন্তু বাবলার সমর্থকরা তা মানতে রাজি নন৷ তাই ৩,৬১,৮২৩ জন ভোটারের এই আসনে শেষ হাসি হাসবেন সালাহউদ্দিন এমন মনে করছেন বিএনপি সমর্থকরা৷

ঢাকা ১০

মহাজোট থেকে মনোনয়ন পাওয়া এ কে এম রহমত উল্লাহ আগে দুই বার সংসদ সদস্য ছিলেন৷ তার প্রতিদ্বন্দ্বী চারদলীয় জোটের এম এ কাইয়ুম সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার, কিছু দিনের জন্য ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র৷ বাড্ডা ও খিলগাঁওয়ের কিছু অংশ নিয়ে এই আসন৷ ভোটার ৩,৪৯,১৮১ জন৷ স্থানীয় হিসেবে দুই প্রার্থীই যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি৷ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন৷ ফলে এই আসনে তীব্র প্রতিন্দ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেলেও অতীত রেকর্ড আর প্রচারণার কৌশলে রহমত উল্লাহই এগিয়ে থাকছেন৷

ঢাকা ১১

প্রায় তিন লাখ ভোটারের তেজগাঁও এলাকার এই আসনটিতে নোয়াখালির ভোটই বেশী৷ ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেজর (অব.) আবদুল মান্নান নির্বাচিত হন৷ এবার সব দল থেকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে নোয়াখালির বাসিন্দাদের৷ চারদলীয় জোট প্রার্থী শাহাব উদ্দিনের বাড়ি নোয়াখালি৷ নতুন হিসেবে লড়ছেন তিনি৷ আর মহাজোটের প্রার্থী আসাদুজ্জামান খান কামালও নোয়াখালির বাসিন্দা৷ বিকল্প ধারার প্রার্থী হয়ে লড়ছেন মেজর (অব.) আবদুল মান্নান৷ তার ভোট ব্যাংকের বড় একটি অংশ ধানের শীষের৷ তাই মান্নান যত ভালো করবেন জয়ের পাল্লা ভারী হবে কামালের৷

Wahlkampagne in Bangladesch
মূল দুই জোটের বাইরেও এবার রয়েছেন অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীছবি: AP

ঢাকা ১৩

রাজধানীর আদাবরে লড়ছেন দুই যুবরাজ৷ একজন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং অপরজন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল৷ এই আসনে দু'জনেই নতুন৷ ২, ৮৩,১৪২ জন ভোটারের এই আসনে যেমন আছে হিন্দু ভোটার, তেমনি রয়েছে বিহারী ভোটারও৷ কাটাসুর ও রায়েরবাজার এলাকায় প্রচুর হিন্দুর বাস; তারা ঠিকমত ভোট দিতে পারলে হয়ত বের হয়ে যাবেন নানক৷ অন্যদিকে বিহারীদের ভোট পাবেন আলাল৷ তবে দুই প্রার্থীর মধ্যেই তীব্র লড়াই হবে এমনটি বলা যায়৷

ঢাকা ১৪

চারদলীয় জোটের এস এ খালেকের সঙ্গে এবার প্রথম নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের আসলামুল হক আসলাম৷ শাহআলী ও মিরপুর এলাকার ৩,২৫,১৮৯ জন ভোটারের এই আসনে সাবেক এমপি এস এ খালেকের বিরুদ্ধে রয়েছে৷ ফলে এলাকায় পরিবর্তনের হাওয়া বইছে এমনটি মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা৷ কিন্তু প্রভাবশালী রাজনীতিক আর নির্বাচনে বিচক্ষণতা দেখানো এস এ খালেককে হারানো খুব সহজ নয়৷ এখানে বিএনপির ভোট ব্যাংকও রয়েছে৷ তাই শেষ হাসিটা খালেকই হাসবেন বলে মনে করছেন বিএনপি সমর্থকরা৷

ঢাকা ১৫

মিরপুর কাফরুল এলাকায় দীর্ঘদিন রাজনীতি করা আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রতিদ্বন্দ্বী মুন্সিগঞ্জের সাবেক এমপি হামিদুল্লাহ খান বীরপ্রতীক৷ হামিদুল্লাহ খানের ঢাকায় এই প্রথম নির্বাচন৷ এলাকাও ঠিকমত চেনেন না তিনি৷ অন্যদিকে সাবেক এমপি হিসেবে কামাল মজুমদার এলাকার উন্নয়ন করেছেন৷ অলিগলি তার চেনা৷ এসব হিসাবে তিনি এগিয়ে থাকলেও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাদের মোল্লা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়ছেন৷ তিনি কিছু ভোট দখল করলে শুধু ধানের শীষের ভোটেই পার হয়ে যেতে পারেন হামিদুল্লাহ খান৷

ঢাকা ১৬

মিরপুরের পল্লবী এলাকা নিয়ে গঠিত এই আসনে ভোটার তিন লাখ৷ এর মধ্যে ৫৫ হাজার মত বিহারী ভোট৷ বিহারীদের ভোট নিজের বাক্সেই থাকবে এমন আশায় বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া৷ কিন্তু তার প্রতিদ্বন্দ্বী ইলিয়াস আলী মোল্লাহ রাজনীতিক পরিবারের সন্তান৷ স্থানীয় বহিরাগত ইস্যুতে অনেকটাই এগিয়ে ইলিয়াস৷ অন্যদিকে কুমিল্লার নেতা হলেও সাবেক মন্ত্রী হিসেবে এলাকার উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে প্রচারণায় থাকা ব্যারিস্টার রফিকও পিছিয়ে নেই৷ ভোটারদের মতে, তীব্র লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসতে পারেন যে কেউ৷

ঢাকা ১৮

এখানেও লড়ছেন দুই প্রজন্মের দুই প্রার্থী৷ আওয়ামী লীগের প্রবীণ রাজনীতিক এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল৷ গত দুই বছর শেখ হাসিনার পক্ষে লড়াই করে সাধারণ ভোটারদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছেন সাহারা খাতুন৷ অন্যদিকে আজিজুল বারী হেলাল এই দুই বছর খালেদা জিয়ার পক্ষে আন্দোলন করেছেন, খেটেছেন জেল৷ ফলে দুই প্রার্থীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের আভাসই মিলেছে এখন পর্যন্ত৷