1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডিসেম্বরে আসছে পায়রা

২৮ জুন ২০১৯

ডিসেম্বরে উৎপাদনে আসছে দেশের প্রথম আল্ট্রা সুপার ক্রিটিকাল প্রযুক্তি সম্পন্ন পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র৷  পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়  ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রথম পর্যায়ে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে৷

https://p.dw.com/p/3LDhm
Bangladesch Payra Kohlekraftwerk in Patuakhali
ছবি: Mokhlesur Rahman

ডয়চে ভেলেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু৷ তিনি বলেন, ২০২০ সালের জুন থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে এই কেন্দ্র থেকে৷

পুরো প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছন বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিজিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম৷

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে, গ্রিড লাইন নির্মাণের কাজও জোরে শোরে চলছে৷

সেপ্টেম্বরের মধ্যেই গ্রিডলাইন নির্মাণের সব কাজ শেষ হবে বলে জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম৷

এরই মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বসানো হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় স্টিম টারবাইন৷ এর মাধ্যমেই ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে৷ এই স্টিম টারবাইনের কারণে, উৎপাদন খরচও অনেকাংশে কমে আসবে৷ দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করতে দেশের আট হাজার এবং চিনের দুই হাজার শ্রমিক, দিনে তিনটি শিফটে কাজ করছে৷

১৮শে জুন সকালে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়লারের ওপর থেকে পড়ে সাবিন্দ্র দাশ নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়৷ ঘটনার জের ধরে ওই বিকেলে বাংলাদেশী ও চীনা শ্রমিকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিণত হয় রণক্ষেত্রে৷ সংঘাতে চীনা ও বাংলাদেশিসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়৷ গুরুতর আহত চীনা নাগরিক ঝাং ইয়াং ফাংকে ভর্তি করানো হয় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পর দিন তার মৃত্যু হয়৷ কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ৷ 

খোরশেদ আলম

অবশ্য সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে কেন্দ্রে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরেছে বলে দাবি করেছেন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ৷ তিনি বলেন, এত বড় প্রকল্পে বিচ্ছিন্ন কিছু ঝামেলা হয়ে থাকে৷  তবে এখন আর কোনো জটিলতা নেই জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘‘স্থানীয়দের সঙ্গে যে ঝামেলা হয়েছে, তা মিটে গেছে৷ মামলা হয়েছে, আইন তার নিয়ম অনুযায়ী চলবে৷''

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মূল জ্বালানি কয়লা৷ যার পুরোটাই আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা৷ তারা বলছেন, জ্বালানি  হিসেবে সাব-বিটুমিনাস কয়লা ব্যবহার করা হবে৷ যার ক্যালরিফিক ভ্যালু ৪৭০০-৫৫০০ কিলোক্যাল। বছরে প্রায় ৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন পড়বে৷ প্রাথমিকভাবে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হবে। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ইতিমধ্যে একটি চুক্তিও হয়েছে৷ ১৭ই জুন ঢাকার একটি হোটেলে দুই দেশের চুক্তিটি হয়৷ যা কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে এটি দেশের প্রথম চুক্তি৷

এনডব্লিউপিজিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, অস্ট্রেলিয়া থেকেও কয়লা আমদানি করা হবে৷ তবে এখনও চুক্তি হয়নি৷ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কয়লা আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি৷

তিনি জানান, এই প্রযুক্তির কারণে প্রতি একক বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার পরিমাণ কমে যাবে৷ ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচও অন্যপ্রযুক্তির চেয়ে অনেক কম হবে৷

এদিকে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নিয়ে, বরাবরই সমালোচনা করে আসছে পরিবেশবাদী ও বামপন্থী সংগঠনগুলো৷ এ প্রসঙ্গে খোরশেদ আলম বলেন, এজন্যই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিকাল প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে৷

তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে কয়লা আমরা ব্যবহার করবো, সেখানে সালফারের পরিমাণ খুবই কম৷ তারপরেও যতটুকু থাকবে সেটা ডিসালফারাইজেশন প্ল্যান্টের মাধ্যমে সেটা অপসারণ করা হবে৷''এই প্রযুক্তির ফলে, ৯৮-৯৯ ভাগ পর্যন্ত সালফার অপসারণ সম্ভব৷ তাই পরিবেশ দূষণের কোনো আশঙ্কা করছেন না তিনি৷

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড গঠন ও নিবন্ধন নেয়া হয়৷ এই কোম্পানিটি মূলত বাংলাদেশের নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট  কর্পোরেশন (সিএমসি)-এর যৌথ উদ্যোগ৷ পাশাপাশি, একই স্থানে ৫০ মেগা ওয়াট বায়ু চালিত প্রকল্প বাস্তবায়নেরও পরিকল্পনা করছে কোম্পানিটি৷ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৫৬০ মিলিয়ন ডলার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য