ডিজিটাল ছবি থেকে গোপন তথ্যও জানা সম্ভব
১৮ অক্টোবর ২০১০দিনকয়েক আগে অনলাইন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ফটোবাকেট থেকে একটি ছবি নিয়েছিলেন৷ শিশুসহ এক মহিলা রান্নাঘরে কাজ করছেন- এরকম এক ছবি৷ এরপর সেই ছবির সঙ্গে থাকা তথ্যউপাত্ত ঘেঁটে দেখা গেল, ছবিটি তোলা হয়েছে ওকলাহোমার এডমন্ডে৷ শুধু তাই নয়, প্রাপ্ত জিওগ্রাফিক তথ্য গুগল ম্যাপে দিয়ে পাওয়া গেলো মহিলার বাড়ির মানচিত্রও৷
এভাবেই ডিজিটাল ছবি আপনার অবস্থান তুলে দিতে পারে যেকারো হাতে৷ সাধারণভাবে সেটা ক্ষতিকারক মনে নাও হতে পারে৷ কিন্তু অনেকে নিছক মজা করতেওতো গোপন নামে ব্লগিং করেন৷ এমন যদি হয়, তাদের নিকে থাকা ছবিগুলো দিয়ে তথ্য বের করা গেল৷ এরপর জানাও গেল, কোন ব্যক্তি গোপন নামে ব্লগিং করেন কিংবা, কাকে কুকথা বলে বেড়াচ্ছেন৷ তখন! ঠিক এমনি এক কাজ করেছিলেন, সক্রিয় ফ্লিকার ব্যবহারকারী টমাস হ্যক৷ এক ব্যক্তি অনলাইনে ছদ্মনামে বিরক্ত করছিলেন তাকে৷ এরপর সেই ব্যক্তির ছবির মধ্যে থাকা জিপিএস তথ্য ঘেঁটে বের করে ফেললেন ব্যাটার ঠিকানা৷ তারপর আর কই যায়৷
ডিজিটাল ছবি থেকে অবস্থান জানার জন্য ব্যবহার করা হয় এক্সচেইঞ্জেবল ইমেজ ফাইল ফর্মেট, সংক্ষেপে এক্সিফ তথ্য৷ এই তথ্য থেকে জানা সম্ভব ছবি তোলার সময় বাড়তি আলো ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা, ছবিটা কতটা সম্পাদনা করা হয়েছে কিংবা কখন ছবিটি তোলা হয়েছে৷ কিন্তু এক্সিফ থেকে অবস্থান জানার বিষয়টি কিন্তু নেহাত নতুনই বলা যায়৷
এর কারণও ভিন্ন৷ ইদানীং ছবিতে জিওট্যাগিং এর ব্যবহার বাড়ছে ৷ স্মার্টফোন বিশেষ করে অ্যাপল আইফোন কিংবা গুগল এন্ড্রয়েড সিস্টেমের ফোনগুলোতে এমনিতেই থাকে জিপিএস সুবিধা৷ ছবি তোলার সময় তাই সহজেই তাতে যোগ হয়ে যায় জিপিএস তথ্য৷ অনেক আধুনিক ক্যামেরাতেও রয়েছে এই সুবিধা৷
পরবর্তীতে এসব ছবি গুগল ম্যাপে কিংবা সাধারণ অ্যাডোবি ফটোশপে নিয়ে এর নিখুঁত অবস্থানসহ এক্সিফ তথ্য যেকেউ দেখতে পারে৷ সুতরাং সাবধান৷
বুদ্ধিমানের কাজ হবে স্মার্টফোনে ছবি তোলার সময় জিপিএস তথ্য তাতে যোগ না করা৷ বাড়তি সতর্কতা হিসেবে আপনার তোলা ছবিগুলো ফটোশপ কিংবা অন্যকোন সফটওয়্যারে দিয়ে এক্সিফ তথ্য মুছেও ফেলতে পারেন৷ এরপর সেগুলো অনলাইনে দিলে অন্তত অবস্থান সংক্রান্ত জটিলতা থেকে দূরে থাকা যাবে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম