‘ডিজিটাল চেতনা জাগ্রত হোক!'
২৬ মার্চ ২০১৪সামহয়্যার ইন ব্লগে আতিক জামান লিখেছেন, ‘‘আজ ২৬শে মার্চ, আমাদের স্বাধীনতা দিবস৷
জাতি হিসেবে আমরা স্বাধীনতার আরেকটি বছর পার করছি, কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে আমরা স্বাধীনতার চিন্তা-চেতনা, উদ্দেশ্য ও ভাবধারা থেকে ক্রমেই পিছিয়ে গিয়ে অন্তঃসারশূন্য জাতি হয়ে যাচ্ছি৷ দেশের নাম রেকর্ডবুকে থাকবে, দেখতে কার না ভাল লাগবে? ব্যাপক আয়োজন, বিশাল খরচ৷ বিভিন্ন তহবিল থেকে আজীবন সুবিধা নেবার বিপরীতে টাকা আসছে৷''
তিনি বলেছেন, ‘‘একবার ভাবুন, যখন রাস্তার জ্যামে আটকে থাকেন কিংবা বসে থাকেন টিএসসিতে বা চায়ের দোকানে তখনি কোনো ছোট ছেলে বা মেয়ে আপনার কাছে ফুল বিক্রি করতে আসে বা ভাত খাওয়ার কথা বলে ২টা টাকা চায়৷ ঢাকা শহরে ফুটপাথ আজ ছিন্নমূল মানুষদের রাত কাটানোর শেষ আশ্রয়৷ দেশের ৪০ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে!
তাদের কাছে এটার মানে কি হবে! স্বাধীনতার নামে দারিদ্র্যের কষাঘাত! জাতীয় সংগীত মিশে আছে বাঙালির অস্তিত্বে৷ রেকর্ড সেদিনই হবে যেদিন ১৬ কোটি মানুষ একসাথে জাতীয় সংগীত গাইবে সকল ভেদাভেদ, কষ্ট আর দারিদ্র্যের শৃঙ্খল চিড়ে৷''
এই ব্লগে অজয় কুমার সরকার লিখেছেন,
‘‘আমি জানিনা আমি যখন আমার সোনার বাংলা গাই আমার চোখ দিয়ে কেন যেন জল পড়ে৷ হয়তো এটা ভেবে যে, আমার দেশের সত্যিকারের মানুষগুলো এখনো স্বাধীন হয়নি৷ আজও মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা কেঁদে ফেলেন৷ তাদের চোখের জলের কি কোনো দাম নেই? আমার দেশের স্বাধীনতা আজ শুধু পেপারের বিজ্ঞাপন আর টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ৷ আমি জানি না স্বাধীনতা দিবসে ক'জন আজ পতাকার দিকে তাকিয়ে সালাম দিয়েছে শ্রদ্ধাভরে? কেউ দিক আর না দিক আমার ঘরের ছোট্ট পতাকাটিকে আমি সালাম দিয়ে ক্ষমা চাইছি, আর মায়ের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি আরও একবার স্বাধীনতার স্বাদ নিতে চাই, চাই আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ, যেখানে খুঁজে পাব সত্যিকারের স্বাধীনতা৷''
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ ‘স্বাধীনতা দিবসের চাওয়া' শীর্ষক একটি কবিতা লিখেছেন৷
লভিয়াছি যত অমৃত মা মোরা
জুড়ায়েছি মম প্রাণ!
সকলি অপার মাধুরি মা তব
সকলি তোমারি দান!
কে বলে তোমার দ্বীন-হীন বেশ,
কে বলে তুমি মা দুখী?!
তোমারি নাড়ির ধন যে মা মোরা
তোমাতেই মোরা সুখী!
চাই নে মা মোরা রাজভান্ডার
তব পায়ে দিও ঠাঁই
এইটুকু শুধু আমাদের চাওয়া
আর কিছু নাহি চাই৷
মতিউর রহমান মিঠু জাতীয় সংগীতের অনুষ্ঠানটির সরাসরি সম্প্রচার টিভিতে দেখেছেন৷ তিনি লিখেছেন,
‘‘টিভির স্ক্রলে দেখা যাচ্ছে এই মুহূর্তে ২লক্ষ ৫৫ হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে৷ জয় বাংলা না কি বলবো বুঝতে পারছি না! বুঝতে পারছিনা কারণ এই আয়োজনের ব্যয় মাত্র ৯০ কোটি টাকা! আমাদের চেতনার এতো বেহাল অবস্থা! যা জাগ্রত করতে প্রায় ১০০কোটি টাকা খরচ করতে হয়! শহীদের আত্মাও বুঝি কষ্ট পাচ্ছে চেতনার এই বেহাল অবস্থা দেখে৷ একদিকে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, সড়কে টোল আদায়ের ব্যবস্থা হচ্ছে, অন্যদিকে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে বিসিবি সেলিব্রেটি কনসার্ট আয়োজন করছে আর এখন হচ্ছে চেতনা জাগ্রতকরণ মেলা! ভালো না, ভালো তো..ডিজিটাল চেতনা জাগ্রত হোক....!!!!''
‘‘১৯৭১ এ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালুর প্রথম দিনেই আমার সোনার বাংলা ভালোবাসি শুনে উত্তেজনায় কেঁদেছিলাম৷ আজকের অনুষ্ঠানে আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম ৪৩ বছর আগের সেই বাস্তবতায়, সেই দেশপ্রেম, সেই ত্যাগ আর তিতিক্ষার সংগ্রামী দিনগুলোতে৷ দেশকে ভালবাসি এবং বাসবো আমৃত্যু৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন