1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডিজিটাল আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

৩১ জানুয়ারি ২০১৮

সোমবার মন্ত্রিসভায় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট' পাস হয়েছে৷ এটি আইনে পরিণত হলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হবে বলে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেক সাংবাদিক৷ সামাজিক মাধ্যমে #আমিগুপ্তচর বলে একটি হ্যাশট্যাগ চালু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2roU1
Screenshot Facebook Journalist mit Schild  "Spion"
ছবি: facebook.com/Parvez Nadir Reza

অনুমোদন পাওয়া আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘‘সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কেউ যদি বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কোনো ধরনের তথ্য-উপাত্ত, যে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি দিয়ে গোপনে রেকর্ড করে, তাহলে সেটা গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হবে এবং এ অপরাধে সেই ব্যক্তি ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন৷''

এই ধারাটি উল্লেখ করে একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি পারভেজ নাদির রেজা মঙ্গলবার ফেসবুকে ‘#আমিগুপ্তচর' এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে লিখেছেন, ‘‘মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ নম্বর ধারার এই অপরাধ আমি আমার সাংবাদিকতা জীবনে বহুবার করেছি৷ যেহেতু আমি আমার অনেক সহকর্মীর মতো এই পেশা এখনো ছেড়ে যাইনি, বিদেশে পাড়ি দেইনি, যেহেতু আগামী দিনগুলোতেও সাংবাদিকতা করেই যেতে চাই, সেহেতু আমি নিজেকে আইনের ভাষায় গুপ্তচর হিসেবে ঘোষণা করলাম৷ আজ থেকে শুরু হোক #আমিগুপ্তচর স্লোগানের আন্দোলন৷ আসুন স্বঘোষিত এই গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করুন এবং সাংবাদিকতাকে গলাটিপে হত্যা করার মিশনে সফল হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যান৷'' সঙ্গে এই হ্যাশট্যাগ লেখা একটি কাগজ ধরে ছবি পোস্ট করেছেন৷

একইভঙ্গিতে ছবি তুলে ফেসবুকে তা পোস্ট করেছেন আরও কয়েকজন৷ মাছরাঙা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি বদরুদ্দোজা বাবু লিখেছেন, ‘‘আমি বদরুদ্দোজা বাবু৷ অনুসন্ধান করি, সাংবাদিকতা করি৷ মানুষের স্বার্থে কাজ করি৷ অনিয়ম আর দুর্নীতি খুঁজি৷ ফলে আমাকে সরকারি অনেক নথি জোগাড় করতে হয়! ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভাষায়, এখন আমি গুপ্তচর!''

মাজহার মিলন লিখেছেন, ‘‘এই দেশে অসাধুরাই সবচেয়ে শক্তিশালী৷ গোপনীয়তার সংস্কৃতিচর্চায় কঠোর অবস্থান তাদেরই৷ কোনটা গোপনীয় আর কোনটা ‘পাবলিক/ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট' সেই ব্যাখ্যা কে দেবে? অসাধুদের মুখোশ উম্মোচনের উপায় তাহলে কী? অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দিন কি শেষ হয়ে এলো? গণমাধ্যম আর সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরতে এই আইনের ব্যবহার হবে না, সে নিশ্চয়তা কে দেবে?''

এদিকে, ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম নতুন আইনকে ‘অ্যানালগ আইন' বলে আখ্যায়িত করেছেন৷ কারণ তিনি মনে করছেন এই আইন বাক-স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ'-কে অ্যানালগ যুগে নিয়ে যাবে৷ ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর সংবাদভাষ্যে অভিজ্ঞ এই সম্পাদক বলেন, নতুন আইনের কারণে স্বাধীন সাংবাদিকতা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে৷ অথচ দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য পেতে যে কোনো সরকারকে গণমাধ্যমের উপর নির্ভর করতে হয়৷ সরকারকে তিনি কয়েকটি প্রশ্ন করেছেন৷ এর মধ্যে একটি ‘‘বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক দেশ কি কখনও বাক-স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ ও মুক্ত গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে লাভবান হয়েছে?''

সাংবাদিক হারুন উর রশীদ লিখেছেন, ‘‘আসলে এই আইনটি করাই হয়েছে সাংবাদিকদের ‘প্রতিহত'করতে৷ যাঁরা করেছেন তাঁরা বাংলাদেশে ‘নিরীহ' সাংবাদিকতার নতুন অধ্যায় শুরু করতে চান৷ যে সাংবাদিকের চোখ নাই, দাঁত নাই, শিং নাই, করে না ফোসফাঁস – এমন সাংবাদিকই তাঁরা চান৷ রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের সাংবাদিকতা তাঁরা চান না৷ তাঁরা চান না স্বচ্ছতা ও সুশাসন৷''

সংকলন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান