1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ডিজিএফআই হুমকি দেয়ায় পদত্যাগ করি’

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তাঁর আত্মজীবনীতে দাবি করেছেন, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই তাঁর পরিবারকে ভয় দেখানোয় তিনি পদত্যাগ করেন৷ বইটি এখনো না পড়ায় মন্তব্য করতে চাননি ডিজিএফআই মুখপাত্র৷

https://p.dw.com/p/35CnW
ছবি: amazon.com/

বইটির নাম ‘আ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’৷ ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বইটির ‘কিন্ডেল’ সংস্করণ অ্যামাজন ডটকমে পাওয়া যাচ্ছে৷ ৬১০ পৃষ্ঠার এই বইয়ের মূল্য ১০ ডলার৷

বিচারপতি সিনহা তাঁর আত্মজীবনীতে আইনজীবী হিসেবে নিজের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সংগ্রামসহ বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার স্বাধীন হওয়ার সংগ্রাম, বিচার বিভাগের কর্মী ও রাজনীতিবিদদের মূল্যবোধের অবক্ষয়, বার কাউন্সিলের ব্যর্থতা, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতে ডিজিএফআই-এর ভূমিকা ইত্যাদি নানান বিষয় তুলে ধরেন৷

Screenshot Amazon Buch von Surendra Kumar Sinha zu Rücktritt als Oberrichter
এসকে সিনহার বইয়ের এই অংশে ডিজিএফআই এর হুমকির কথা বলা হয়েছে ছবি: amazon.com/

বইয়ের ভূমিকায় বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীরা অপপ্রচার শুরু করেছিলেন৷ ‘‘প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্য মন্ত্রীরা আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ এনে অপপ্রচার চালানো শুরু করে,’’ লিখেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা৷ 

উল্লেখ্য, বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরাতে সংবিধান সংশোধন করেছিল সরকার৷ পরে বিচারপতি সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেন৷

ঐ রায়ের পর কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা৷ তিনি বলেন, পরিবারের উপর সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর হুমকির কারণে তিনি বিদেশ থেকে পদত্যাগ করেন৷ ‘‘আমি যখন আমার সরকারি বাসভবনে গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলাম, তখন আইনজীবী ও বিচারকদের আমার সঙ্গে দেখা করতে বাধা দেয়া হয়, আর গণমাধ্যমকে বলা হয় আমি অসুস্থ এবং আমি চিকিৎসাজনিত ছুটি চেয়েছি৷ কয়েকজন মন্ত্রী বলতে থাকেন যে, আমি অসুস্থতাজনিত ছুটি নিয়ে বিদেশে যাব৷ ১৪ অক্টোবর যখন আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়, তখন আমি এক বিবৃতিতে বলেছিলাম, আমি অসুস্থ নই, আর আমি চিরদিনের জন্য দেশ ছেড়ে যাচ্ছি না৷.... অবশেষে, দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা, যা ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স’ বলে পরিচিত, তারা আমার পরিবারকে ভয় দেখানো ও হুমকি দেয়ার কারণে আমি বিদেশে থেকেই পদত্যাগ করি৷’’

এক্সাক্টলি উনি কোন কন্টেক্সটে লিখেছেন, না দেখে তো কিছু বলা যাচ্ছে না: কর্নেল সিদ্দিকী

সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংস্থার গণমাধ্যম বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তানভির মাজহার সিদ্দিকী বুধবার বিকেলে ডয়চে ভেলেকে বলেন, তিনি বইটি সম্পর্কে শুনেছেন৷ কিন্তু যেহেতু বইটি তিনি পড়েননি, তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সিদ্দিকী৷ তবে সাক্ষাৎকারের সময় বইয়ের ভূমিকায় বিচারপতি সিনহা ডিজিএফআই সম্পর্কে যা বলেছেন, তা পড়ে শোনালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সিদ্দিকী বলেন, ‘‘আমি তাহলে লেখাটা একটু দেখি, তারপর বলতে পারব৷ এ ব্যাপারে আসলে না পড়ে, এক্সাক্টলি উনি কোন কন্টেক্সটে লিখেছেন, না দেখে তো আসলে কিছু বলা যাচ্ছে না৷’’ তাছাড়া একটি বই পুরোটা না পড়ে, শুধু খন্ডচিত্র পড়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না, বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

এদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার বিচারপতি সিনহার বই নিয়ে মন্তব্য করেছেন৷ ঢাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তিনি (বিচারপতি সিনহা) সাবেক হয়ে গেছেন। সাবেক হওয়ার অন্তর্জ্বালা আছে। কী পরিস্থিতিতে সাবেক হয়েছেন তা সবাই জানে। বই লিখে মনগড়া কথা বলবেন বিদেশে বসে, সেটা নিয়ে কথা বলার কোনো প্রয়োজন আছে?’’

বিচারপতি সিনহা দেশে ফিরে কেন জনগণের মুখোমুখি হচ্ছেন না, কেন তিনি আগে এসব কথা বলেননি - ওবায়দুল কাদের সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন, বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷ 

জেডএইচ/এসিবি