‘ডারবান ঘোষণা জলবায়ুর আলোচনায় নতুন ধারার সূচনা’
১২ ডিসেম্বর ২০১১বিশ্বের ১৯৪টি দেশের প্রতিনিধিরা দীর্ঘ আলোচনা ও বিতর্কের পর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একটি মহাপরিকল্পনার ব্যাপারে একমত হয়েছে৷ এই মহাপরিকল্পনা অনুসারে সবকিছু ঠিকঠাকভাবে বাস্তবায়ন হলে প্রথমবারের মতো বিশ্বের সকল দেশ কার্বন নির্গমন হ্রাসের ক্ষেত্রে একটি আইনগত বাধ্যবাধকতার আওতায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
ডারবান বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৫ সালে একটি জলবায়ু চুক্তি সম্পাদনের কথা রয়েছে৷ আর তার বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২০ সাল নাগাদ৷ এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ও গরিব দেশগুলোর জন্য ২০০৯ সালে গৃহীত প্রাথমিক তহবিলকে ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড' হিসেবে এর পথচলা অনুমোদন করা হয়েছে ডারবানে৷ এই তহবিল থেকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতির শিকার ও গরিব দেশগুলোকে দেওয়া হবে৷ আপাতত এই সাফল্য পেতে ১৭তম কনফারেন্স অফ পার্টিস তথা কোপ এর শেষ পর্যায়ে এসে প্রায় আড়াইদিন ধরে একটানা দরকষাকষি চলেছে ডারবানে৷ ফলে ১২ দিনের জলবায়ু সম্মেলন শেষ পর্যন্ত ১৪ দিনে পৌঁছে৷ এমনকি এটিকেই দীর্ঘতম জলবায়ু সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে৷
তবে শেষ পর্যন্ত ডারবান সম্মেলনের সাফল্য নিয়ে বেশ খুশি অধিকাংশ পক্ষই৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিষয়ক প্রতিনিধি দলের প্রধান টড স্ট্যার্ন বলেন, ‘‘আমি মনে করি শেষ পর্যন্ত সবকিছু বেশ ভালোভাবেই শেষ হয়েছে৷'' এছাড়া মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর ক্লাইমেট অ্যান্ড এনার্জি সল্যুশন্স' এর এলিওট ডিরিঙ্গারের মন্তব্য, ‘‘ডারবান সমঝোতা সঠিক পথে একটি শক্ত পদক্ষেপ৷ এখন এটা কিয়োটো প্রটোকলকে সংরক্ষণ করবে৷ তবে তার চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো এটি আরো ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তির জন্য পথ খুলে দেবে৷''
অবশ্য ডারবান প্যাকেজে উত্থাপিত মহাপরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নে এখনও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে এমন মন্তব্য ডারবান সম্মেলনে উপস্থিত অধিকাংশ কূটনীতিকের৷ ডারবান থেকে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘‘আমি মনে করি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণে সমঝোতা আলোচনার একটি নতুন ধারা রচনা হবে এখান থেকে এবং সকলের দৃষ্টি থাকবে এখন দোহাতে কী হয় সেদিকে৷ কারণ নতুন ধারাতে আগামী বছরের দোহা বৈঠকে এই মহাপরিকল্পনা তৈরি হবে৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম