ডাচ ও জার্মান পুলিশের ২৫০ টন অবৈধ আতশবাজি উদ্ধার
২১ ডিসেম্বর ২০২২জার্মানির ওখট্রপের নিকট এক বাঙ্কারে "বিপজ্জনক ও শক্তিশালী” এসব আতশবাজির বেশিরভাগ পাওয়া গেছে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা ইউরোপোল গতকাল ঘোষণা করে।
উত্তর-পশ্চিম জার্মানির এই গ্রামটি ডাচ শহর এনশিড থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে। ২০০০ সালে ইউরোপের সবচেয়ে মারাত্মক আতশবাজি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল এই ডাচ শহরে।
ইউরোপোল জানিয়েছে, মঙ্গলবারের অভিযানটি পরিচালিত হয় বেনামী এক সুত্রের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে। অবৈধ আতশবাজি পাচার সংক্রান্ত সমান্তরাল আরেকটি তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের সাথে তা মিলে যায়।
এই ধরনের আতশবাজি খোলামেলাভাবে বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু সন্দেহভাজন চক্রটি বিপদজনক আতশবাজিগুলো অনিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করে বেআইনিভাবে মানুষের কাছে বিক্রি করে আসছিল।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, এসব আশতবাজির মধ্যে বেশ কিছু ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। মূলত ডাচ নববর্ষ উৎসবের জন্য এগুলো অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছিল। ক্রেতারা সীমান্তের বিভিন্ন ঢোকান থেকে আতশবাজি সংগ্রহ করতে পারতো।
"আতশবাজি বিক্রির জন্য সন্দেহভাজনেরা নিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠানের আড়ালে গোপনে তাদের বৈধ তৎপরতা চালিয়ে আসছিল, যা ছিল আতশবাজি বিক্রি সংক্রান্ত কঠোর প্রবিধান লঙ্ঘনের প্রচেষ্টা,” ইউরোপোল এক বিবৃতিতে জানায়।
এই অভিযানে দুইজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি আটক করা হয়।
অপরাধমূলক কাজেও ব্যবহার
ইউরোপোলের বিবৃতিতে বলা হয়, সহিংসতা সৃষ্টি বা অপরাধের ঘটনা ঘটানো এবং এটিএম বুথে আক্রমণের ক্ষেত্রেও শক্তিশালী এসব আতশবাজি ব্যবহৃত হয়।
মঙ্গলবারের এই অভিযানের জন্য ইউরোপোল জার্মানির আঞ্চলিক পুলিশ, ডাচ ন্যাশনাল পুলিশ ও আমস্টারডামের ডাচ প্রসিকিউশন অফিসকে সহাহতা প্রদান করে।
গত নভেম্বরে ইউরোপোলের বিশেষায়িত টাস্কফোর্স ২৫ মিলিয়ন ইউরো বাজার মূল্যের ৩৫০ টন বিস্ফোরক জব্দ করেছিল।
জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে নতুন বছরের ঐতিহ্যের অংশ আতশবাজি
নববর্ষ উদযাপনের প্রধান অংশ হিসেবে উভয় দেশের ফুর্তিবাজেরা আতশবাজির পেছনে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে। তবে, আতশবাজির কারনে পুরো এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এবং আকাশ থেকে ছাই বৃষ্টি হয়, যা পশুপাখিদের ভীতসন্ত্রস্ত করে আর দিনের পর দিন রাস্তা আবর্জনায় ভরে থাকে।
২০২০ সালে নেদারল্যান্ডস ভারী আতশবাজি নিষিদ্ধ করেছিল। তবে, আমস্টারডাম ও রটারডামসহ দেশটির ১২টি পৌরসভা আতশবাজি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত দুই বছর ধরে জার্মানিতেও আতশবাজি বিক্রি নিষিদ্ধ রয়েছে।
এই ধরনের নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর করা অত্যন্ত কঠিন।
এদিকে, হাসপাতালের জরুরি কক্ষগুলো অধিক সংখ্যক গুরুতর আঘাত, দগ্ধ ও অঙ্গ হারানো মানুষের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। কেননা, গ্রমাগত এমন ধরনের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত শনিবার রটারডামের কাছে ২৪ বছর বয়সী একজন নিহত হয়। বিস্ফোরক আতশবাজিতে তার মুখ উড়ে যায়।
এনশিড বিস্ফোরণে ২৩ জনের মৃত্যু হয় ও এক হাজার জন আহত হয়। এছাড়াও ৪০০ বাড়িঘর পুড়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
একেএ/ কেএম (এএফপি, ডিপিএ)