1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সবাইকে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে হবে

২৫ নভেম্বর ২০১৬

রোম যখন পুড়ছিল, নিরো নাকি বাঁশি বাজাচ্ছিলেন৷ রোহিঙ্গারা মরছে, তাদের ঘর পুড়ছে, নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে দেখেও অং সান সু চি চুপচাপ এখন কী করছেন? নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস আর মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি-ইবা নীরব কেন?

https://p.dw.com/p/2TFWz
Rohingya Flüchtlinge Myanmar Bangladesch
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারাছবি: Reuters/M.P.Hossain

রোহিঙ্গা ইস্যুতে অং সান সু চি'র নীরব নিষ্ক্রিয়তা শান্তি পুরস্কারকেই যেন লজ্জায় ফেলেছে৷ সু চি তো শান্তিতেই নোবেল পেয়েছিলেন! অথচ তাঁর দেশে রোহিঙ্গারা মরছে, প্রাণ রক্ষা করতে ঘর ছেড়ে, দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে৷ আর তিনি চুপচাপ বসে আছেন৷

মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা সমস্যা’ আজকের নয়৷ এই ইস্যুতে সু চির নীরবতাও নতুন নয়৷ নিজের দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইয়ে যেমন আপোষহীন ছিলেন, রোহিঙ্গাদের নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধের প্রশ্নে মৌনতা অবলম্বনেও বহুদিন ধরেই তিনি ‘আপোষহীন'৷ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাঁর ভূমিকার ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে, তারপরও সু চি মুখ খোলেননি, একটি বারের জন্যও বলেননি, ‘‘রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা বন্ধ কর, ওদের ঘর পোড়ানো বন্ধ কর, মিয়ানমারে ওদের শান্তিতে বাঁচতে দাও৷''

সু চির এমন নীরবতায় ক্ষুব্ধ হয়ে নোবেল কমিটির কাছে তাঁর পুরস্কার কেড়ে নেয়ার আবেদনও জানিয়েছেন অনেকে৷ সংগীত শিল্পী আসিফ আকবরের নামও আছে আবেদনকারীদের তালিকায়৷

এক বছর হলো মিয়ানমারে সংসদ নির্বাচন হয়েছে৷ বাইরে থেকে অনেকে নির্বাচনের পর রোহিঙ্গাদের ভাগ্য পরিবর্তন হবে বলে আশা করলেও, সে দেশে ‘‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিম রোহিঙ্গাদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহের চেয়ে আতঙ্কই’’ ছিল বেশি- এমন খবর নির্বাচনের আগে থেকেই আসছিল৷ ডয়চে ভেলে বিষয়টি তখনই তুলে ধরেছে৷ ডয়চে ভেলের পর্যবেক্ষণে তখন পরিষ্কার বলা হয়েছিল, ‘‘নির্বাচনের পর ক্ষমতায় পরিবর্তন এলেও রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন কমবে এমন ভরসা তাঁরা পাচ্ছেন না৷’’

নির্বাচনের পরও বড় আশঙ্কা নিয়েই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, ‘‘সু চি-র জয় কি রোহিঙ্গাদের জন্য সুখবর?’’

দীর্ঘদিন পর মিয়ানমারে নির্বাচন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই নির্বাচনে জয়ী সুচি এবং তাঁর দলের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ভালোর জন্য কিছুই করা হয়নি৷

বরং তথাকথিত গণতান্ত্রিক শাসনের সময় ৯ জন নিরাপত্তাকর্মী হত্যার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নামে একটি জনগোষ্ঠীর ওপর যে বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে তার নজির ইতিহাসে খুব বেশি নেই৷ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়েও একজন শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নীরব থেকে কার্যত হামলাকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন- এমনটিও স্মরণকালে কোথাও ঘটেছে বলে মনে হয় না৷

তবু আশার কথা, বাংলাদেশ মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

জাতিসংঘও অবশেষে মুখ খুলেছে৷

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার প্রক্রিয়া থামাতে হলে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতেই হবে৷ প্রতিবাদ এবং প্রতিকারের তাগাদা আসতে হবে সব দিক থেকে৷ অং সান সু চি-কে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় উদ্যোগী করতে বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অন্যান্য প্রভাবশালীদেরও সরব হওয়া উচিত৷ কিন্তু এখনো তাঁরা নীরব কেন? মুসলিম দেশগুলোর আন্তর্জাতিক জোট ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন' (ওআইসি)-ই বা কী করছে? কী ভাবছে তারা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে? যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জার্মানি, চীন, ফ্রান্সসহ বিশ্বের সব দেশের জনমতকে রোহিঙ্গাদের পক্ষে টানতে তাদের সক্রিয় ভূমিকাও খুব জরুরি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান