ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ
৪ ডিসেম্বর ২০১৯ট্রাম্প যখন লন্ডনে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দেশের বাইরে রয়েছেন, তখনই মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষের ইনটেলিজেন্স কমিটি ইমপিচমেন্ট রিপোর্ট প্রকাশ করলো৷ আগেই অবশ্য এমন পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছিল৷ মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রায় ৩০০ পাতার সেই রিপোর্টে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মারাত্মক কিছু অভিযোগ আনা হয়েছে৷ যেমন পুনর্নিবাচনের সম্ভাবনা বাড়াতে ট্রাম্প নাকি বিদেশি হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন৷ ইউক্রেনের সরকারের উপর অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছিলেন৷ তিনি জাতীয় নিরাপত্তার তোয়াক্কা করেন নি এবং সংসদের কার্যকলাপে বাধা দিতে অভূতপূর্ব অভিযান চালিয়েছেন বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ কমিটির রিপোর্টে সরাসরি ইমপিচমেন্টের পক্ষে সওয়াল করা হয় নি৷ শুধু তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরে কংগ্রেসের হাতে এ বিষয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে৷
আসন্ন বড়দিন উৎসব উপলক্ষ্যে ছুটির আগেই সংসদের নিম্ন কক্ষে এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ভোটাভুটি হতে পারে৷ বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার পক্ষে প্রস্তাব অনুমোদন করতে পারে৷ তবে উচ্চ কক্ষে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দল সেই প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, রিপাবলিকান দল ইতোমধ্যেই এক পালটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে৷ তাদের মতে, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় নি৷ গোটা প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে তুলে ধরছে প্রেসিডেন্টের দল৷
অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট দল ট্রাম্পের আচরণের সুদূরপ্রসারী প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে৷ তাদের মতে, সংসদের কাজকর্মে প্রেসিডেন্টের বাধা সৃষ্টি করার ক্ষমতা খর্ব না করলে ভবিষ্যতেও সম্ভবত এমন অঘটন এড়ানো যাবে না৷ ভবিষ্যতে যে কোনো প্রেসিডেন্ট তাঁদের ভুলত্রুটি বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তে বাধা সৃষ্টি করার ক্ষমতা ভোগ করবেন৷ ট্রাম্প যেভাবে নিজেকে আইনের ঊর্দ্ধে রেখে সবরকম জবাবদিহিতা এড়িয়ে চলেছেন, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক এক প্রবণতা হয়ে উঠতে পারে৷ তদন্ত রিপোর্টে ট্রাম্প ছাড়াও কয়েকজন মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে৷
এই রিপোর্ট প্রকাশের পর লন্ডন থেকে ট্রাম্প আবার ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন৷ হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র এই প্রক্রিয়াকে একতরফা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরে প্রমাণের অভাবের কথা উল্লেখ করেছেন৷
রিপোর্ট প্রকাশের পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জনমত কতটা জোরালো হয়ে উঠবে, তার উপর ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করবে৷ চাপ বাড়লে রিপাবলিকান শিবিরে ফাটল ধরলে তবেই প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন৷
এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)